আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর থেকে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার জন্য রাজ্যের প্রতিটি জেলায় নিযুক্ত করা হয়েছে মোট ৮০,৬৮১ জন বুথ লেভেল অফিসার (BLO)। অর্থাৎ, রাজ্যের যতগুলো বুথ রয়েছে, প্রতিটি বুথেই একজন করে বিএলও দায়িত্ব পালন করবেন।

এসআইআর প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য হল–ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তা যাচাই করা, নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং মৃত বা অযোগ্য ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া। প্রতিটি বিএলও মঙ্গলবার থেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে বর্তমান ভোটার তথ্য মিলিয়ে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।

 প্রসঙ্গত, এই কাজে মূলত রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মচারী ও স্কুল শিক্ষকদের নিযুক্ত করা হয়েছে। তবে, সম্প্রতি বিএলওদের একাংশ এই দায়িত্ব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। গত শনিবার প্রশিক্ষণ চলাকালীন তাঁরা জানিয়েছিলেন, বিদ্যালয়ে পড়ানোর পাশাপাশি এসআইআর এর মতো জটিল দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত কষ্টকর। কারণ তাদেরও পরিবার আছে, তাদের নিজেদের জীবন আছে এবং সুরক্ষা একটি বড় বিষয়।

অন্যদিকে, সোমবার ৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তরে রাজ্যের প্রধান নির্বাচন আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অল ইন্ডিয়া ইমাম সংগঠনের প্রতিনিধি দল। তাঁদের প্রধান দাবি ছিল– এসআইআর প্রক্রিয়ায় যেন কোনওভাবেই প্রকৃত ভোটারদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায়। তাঁরা আরও বলেন, রাজ্যের প্রতিটি এলাকায় এই প্রক্রিয়া সতর্কতার সঙ্গে সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি।

এই প্রসঙ্গে সিইও মনোজ আগরওয়াল আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন সমস্ত দিকেই কড়া নজর রাখছে। কোনও গাফিলতি হবে না, এবং কোনও যোগ্য ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে না।
উল্লেখযোগ্য বিষয়, এর পাশাপাশি সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একাধিক জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (DEO)–দের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে মূলত মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া এসআইআর প্রক্রিয়াকে কীভাবে আরও কার্যকর ও নির্বিঘ্নভাবে পরিচালনা করা যায়, সেই বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা হয়।

 
এটা ঘটনা, রাজ্যের ভোটার তালিকা সংশোধনের এই পদক্ষেপটি আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা মনে করছেন,
 যদি এসআইআর প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়, তবে ভোটার তালিকায় কোনও প্রকার বিভ্রান্তি বা অনিয়মের সুযোগ থাকবে না।