পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি। কিন্তু চিনের প্রাচীর নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে বেশ কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। এই বিশাল স্থাপত্যকে যতটা সরল চোখে দেখা হয়, ইতিহাস তার চেয়ে অনেক বেশি কঠিন।
2
8
নামে 'প্রাচীর' হলেও, এটি কোনও অবিচ্ছিন্ন একটি দেওয়াল নয়। এটি বিভিন্ন সময়ে তৈরি হওয়া অসংখ্য ছোট-বড় প্রাচীর, দুর্গের সারি। এটি একটি বিশাল নেটওয়ার্কও। বিভিন্ন রাজবংশের আমলে এই প্রাচীর তৈরি হয়।
3
8
আজকালকার সিমেন্টের বদলে প্রাচীরের কিছু অংশ গাঁথার জন্য শ্রমিকেরা ব্যবহার করত এক বিশেষ ধরনের মর্টার - যার অন্যতম উপাদান আঠালো ভাত! কার্যত এটিই পাথর আর ইঁটকে অবিশ্বাস্য দৃঢ়তার সঙ্গে ধরে রাখতে সাহায্য করত।
4
8
প্রাচীর নির্মাণ করতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। লোকমুখে প্রচলিত আছে যে, এই মৃত শ্রমিকদের অনেককেই প্রাচীরের অভ্যন্তরে বা আশেপাশে সমাধি দেওয়া হয়। তাই চিনের প্রাচীরকে অনেকে ‘পৃথিবীর দীর্ঘতম কবরস্থান’ বলেও উল্লেখ করা হয়।
5
8
বহুদিন ধরে এই মিথ প্রচলিত যে, চিনের প্রাচীর নাকি চাঁদ বা মহাকাশ থেকে দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা বারবার এই দাবি খারিজ করেছেন। প্রাচীরটি নিঃসন্দেহে বিশাল, কিন্তু এর নির্মাণশৈলী এবং রং মহাকাশ থেকে খালি চোখে দেখা অসম্ভব।
6
8
প্রাচীরটি শুধু রক্ষাপ্রাচীর ছিল না, এটি একটি সুরক্ষিত সড়ক পথও। প্রাচীরের প্রস্থ এতটাই চওড়া যে, কোনও কোনও অংশে পাশাপাশি পাঁচ জন ঘোড়সওয়ার বা একাধিক মানুষ পাশাপাশি হেঁটে অনায়াসে টহল দিতে পারত।
7
8
প্রাচীরের মূল উদ্দেশ্য ছিল উত্তর দিক থেকে আসা যাযাবর উপজাতিদের, বিশেষত মঙ্গোলদের আক্রমণ প্রতিহত করা। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, চেঙ্গিস খান বা মাঞ্চুদের মতো শক্তিশালী বাহিনীরা বেশ কয়েকবার প্রাচীরের সুরক্ষা ভেদ করে চিনের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিল।
8
8
এই মহৎ স্থাপত্যটি এক দিনে বা এক সম্রাটের আমলে শেষ হয়নি। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দী থেকে শুরু করে মিং রাজবংশের সময় পর্যন্ত, এর নির্মাণ ও সংস্কার কাজ চলেছে প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে। মানব সভ্যতার এক দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টার ফল এই প্রাচীর।