আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘আজ আমাদের ন্যাড়াপোড়া, কাল আমাদের দোল…,’ ছোটবেলা থেকে রঙের উৎসবের আগে এই ছড়া নিশ্চয়ই শুনেছেন। আজ ১৩ মার্চ পালিত হবে ২০২৫ সালের ন্যাড়াপোড়া। বাংলায় যা ন্যাড়াপোড়া, তাই দেশের অন্যান্য জায়গায় হোলিকা দহন। আবার কোথাও চাঁচর পোড়া নামেও পরিচিত।
2
8
দোল পূর্ণিমার আগের রাতে সমগ্র ভারতে বেশ ধুমধাম করে এই উৎসব পালিত হয়। ন্যাড়াপোড়া বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও, জানেন কি এই উৎসবের নেপথ্যে কী কাহিনি জড়িত রয়েছে? রইল সেই ব্যাখ্যা।
3
8
ধর্মীয় মাহাত্ম্যের জন্য দোল পূর্ণিমার আগের রাতে বিশেষ এই রীতি পালিত হয়। যার পিছনে রয়েছে এক পৌরাণিক আখ্যান। কথিত রয়েছে, প্রাচীনকালে হিরণ্যকশিপু নামে এক অত্যন্ত দাম্ভিক ও অহংকারী রাক্ষস রাজা ছিলেন। তিনি নিজেকে ভগবানের সমান মনে করতেন।
4
8
তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা হিরণ্যকশিপুকে অমরত্নের বর দেন। শোনা যায়, এই বর পাওয়ার পর হিরণ্যকশিপু আরও অত্যাচারী হয়ে উঠেছিলেন। তার পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। নিজের ছেলের বিষ্ণুপ্রীতি কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি হিরণ্যকশিপু।
5
8
নানাভাবে প্রহ্লাদের উপর অত্যাচার শুরু করেছিলেন হিরণ্যকশিপু। কিন্তু প্রতিবারই বিষ্ণুর কৃপায় প্রহ্লাদ রক্ষা পেয়ে যেত। শেষ পর্যন্ত নিজের বোন হোলিকার সাহায্য নিয়ে তিনি প্রহ্লাদকে পুড়িয়ে মারার ষড়যন্ত্র করেন।
6
8
হোলিকার কাছে ব্রহ্মার দেওয়া এমন একটি শাল ছিল যা গায়ে জড়ানো থাকলে তাকে আগুনও স্পর্শ করতে পারত না। হিরণ্যকশিপু ঠিক করেন, গায়ে শাল জড়িয়ে হোলিকা প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনের মধ্যে বসবেন। সেই আগুনে হোলিকা অক্ষত থাকলেও প্রহ্লাদ পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।
7
8
এদিকে আগুনের মধ্যে প্রবেশ করা মাত্রই হোলিকার শাল প্রহ্লাদের উপর উড়ে গিয়ে পড়ে এবং হোলিকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বিষ্ণুর আশীর্বাদে প্রহ্লাদ সুরক্ষিত থাকে। আর তখন থেকেই শুরু হয় হোলিকা দহন প্রথা।
8
8
শোনা যায় পাঞ্জাবের মুলতান অঞ্চলের প্রহ্লাদপুরী মন্দিরে প্রথম এই উৎসবের সূচনা হয়েছিল। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে এই পার্বণ ছড়িয়ে পড়ে। আসলে হোলিকা দহন মানে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির উত্থান। তাই নাম যাই হোক, সব জায়গাতেই এই রীতির পিছনে ধর্মীয় মাহাত্ম্য একই।