স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে দুধ, দই, মাখন, চিজের মতো দুগ্ধজাত খাবার দীর্ঘদিন ধরেই 'সুপারফুড' হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণা ঘিরে নড়েচড়ে বসেছেন স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা। যেখানে বলা হয়েছে, নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে দুগ্ধজাত খাবার খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
2
7
গবেষকদের মতে, যারা প্রতিদিন বেশি পরিমাণে দুধ, চিজ, বা অন্য কোনও দুগ্ধজাত খাবার খাচ্ছেন, তাদের মধ্যে নির্দিষ্ট কয়েক প্রকার ক্যানসারের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা গেছে। বিশেষত প্রস্টেট, স্তন এবং কোলন ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই প্রভাব আরও স্পষ্ট।
3
7
গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত দুগ্ধজাত খাবারে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও প্রাণীজ হরমোন শরীরের কোষে একধরনের পরিবর্তন ঘটায়। দুধে থাকা ইনসুলিন-লাইক গ্রোথ ফ্যাক্টর (আইজিএফ-১) নামের একটি হরমোন শরীরের কোষকে দ্রুত বাড়তে উৎসাহিত করে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে।
4
7
তাছাড়া শিল্পোৎপাদিত দুধ বা চিজ তৈরির সময় অনেক ক্ষেত্রেই হরমোন ও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এর অবশিষ্টাংশ দেহে প্রবেশ করলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
5
7
কারা বেশি ঝুঁকিতে আছেন? যারা প্রতিদিন একাধিকবার দুধ বা চিজ খান, যাদের পরিবারে ক্যানসারের ইতিহাস আছে, যাদের শরীরে হরমোনাল ভারসাম্যের সমস্যা রয়েছে, যারা ল্যাকটোজে সংবেদনশীল বা হজমজনিত সমস্যায় ভোগেন।
6
7
তবে কি দুধ খাওয়া বন্ধ করতে হবে? না, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার পুরোপুরি বাদ দেওয়া প্রয়োজন নয়। বরং পরিমিত মাত্রায় খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। দিনে এক কাপ দুধ বা একবাটি দই যথেষ্ট। সম্পূর্ণ ফ্যাটযুক্ত দুধের বদলে লো-ফ্যাট দুধ বেছে নিন। বিকল্প হিসেবে বাদাম দুধ, সয়ামিল্ক বা ওট মিল্ক খাওয়া যেতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
7
7
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার শরীরের জন্য উপকারী।এতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত গ্রহণ করলে সেই উপকারই ক্ষতিতে পরিণত হতে পারে। তাই সচেতন থাকুন, খাবার বাছুন পরিমিতভাবে, আর শরীরের সংকেতগুলো বুঝুন। কারণ প্রতিরোধই ক্যানসারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, খাবার যতই পুষ্টিকর হোক, অতিরিক্ত খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে দুধ ও চিজের মতো দুগ্ধজাত খাবারে সংযত থাকা উচিত। সঠিক পরিমাণেই আছে স্বাস্থ্যরক্ষার চাবিকাঠি।