বুলগেরিয়ার রহস্যময় ভবিষ্যৎদ্রষ্টা বাবা ভাঙ্গাকে ঘিরে বহু ভবিষ্যদ্বাণী দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বজুড়ে আলোচিত। ‘বালকানের নস্ত্রাদামুস’ নামে পরিচিত এই অন্ধ সাধিকার নামে প্রচলিত ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর অনেকই যাচাই করা যায় না, তবে জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে এগুলো ভীষণ প্রভাবশালী। নিচে ২০২৬ সালকে কেন্দ্র করে তাঁর নামে বহুল প্রচারিত ১০টি ভবিষ্যদ্বাণীর সারসংক্ষেপ দেওয়া হল।
2
12
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ: অনেক সূত্র দাবি করে যে বাবা ভাঙ্গা ২০২৬ সালে একটি বড় যুদ্ধের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন—যা নাকি বিশ্বশক্তিগুলোকে জড়িয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে কোন দেশ জড়াবে, কবে শুরু হবে বা কীভাবে বাড়বে—এসব বিষয়ে তাঁর বক্তব্য অত্যন্ত অস্পষ্ট।
3
12
ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়: তাঁর নামে প্রচলিত একটি ভবিষ্যদ্বাণীতে বলা হয়—২০২৬ সালে প্রবল ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত এবং চরম আবহাওয়া বিশ্বের ৭–৮ শতাংশ স্থলভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যদিও এই ধরনের নির্দিষ্ট পরিসংখ্যানের কোনও প্রামাণ্য উৎস নেই।
4
12
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আধিপত্য: আরেকটি ভবিষ্যদ্বাণী বলছে—২০২৬ সালে এআই এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে যেখানে মানবজীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণ তৈরি হবে। বাস্তবে এটি আধুনিক সমাজের উদ্বেগেরই প্রতিফলন; ভাঙ্গার কোনও সুনির্দিষ্ট উক্তি এতে পাওয়া যায় না।
5
12
ভিনগ্রহবাসীর সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ: কিছু জনপ্রিয় প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০২৬ সালে মানবজাতি নাকি ভিনগ্রহের প্রাণের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করবে। এমনকি একটি বিশাল মহাকাশযান পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। পুরো বিষয়টি অত্যন্ত কল্পনাপ্রসূত এবং বৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীন।
6
12
রাশিয়া থেকে “নতুন বিশ্বনেতা”: অনেকে বলেন, ভাঙ্গা নাকি রাশিয়া বা রাশিয়ার কোনও অঞ্চল থেকে একজন শক্তিশালী নেতার উত্থানের কথা বলেছিলেন, যাকে “বিশ্বের অধিপতি” হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এর সময়কাল, প্রেক্ষাপট বা পরিচয় নিয়ে তাঁর কোনও স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায় না।
7
12
অর্থনৈতিক বিপর্যয়: মিডিয়ার তথ্যমতে, তিনি নাকি ২০২৬ সালে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধস—মুদ্রাব্যবস্থা ভেঙে পড়া, ব্যাঙ্কিং সংকট, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদির কথা বলেছিলেন। তবে এসম্পর্কেও তাঁর কোনও প্রত্যক্ষ উদ্ধৃতি নেই; এটি সমসাময়িক দুশ্চিন্তাকেই বড় করে দেখা।
8
12
সোনার বাজারে অস্বাভাবিক ওঠানামা: অনেকে দাবি করেন, ভাঙ্গা ২০২৬ সালে সোনার দাম “অস্বাভাবিক” আচরণ করবে বলে সতর্ক করেছিলেন। কেউ বলেন সোনার মান কমবে, কেউ বলেন আকাশছোঁয়া হবে। কেউ কেউ আবার বলেন, সোনাকে আর নিরাপদ আশ্রয় মনে করা হবে না। কিন্তু যাচাইযোগ্য উৎসে এর কোনও উল্লেখ নেই।
9
12
জলবায়ু পরিবর্তনে বড় মোড়: ২০২৬ সাল নাকি জলবায়ু বিপর্যয়ের মোড় পরিবর্তনের বছর হবে। বন্যা, খরা, তীব্র আবহাওয়া এবং দুই-তৃতীয়াংশ বাস্তুতন্ত্রে বিপর্যয়। অনেকেই এটিকে আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক সতর্কবার্তার সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন; ভাঙ্গার নাম এতে কতটা যুক্ত, তা নিশ্চিত নয়।
10
12
এশিয়া বা চীনের দিকে প্রভাব: কিছু ব্যাখ্যায় বলা হয়—২০২৬ সালে চীন বা অন্য কোনও এশীয় শক্তি বিশ্বব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব বাড়াবে, সম্ভবত তাইওয়ান ইস্যু বা দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে বড় পরিবর্তন আসবে। এর উৎসও ব্যাখ্যা-ভিত্তিক, নিশ্চিত ভবিষ্যদ্বাণী নয়।
11
12
সামাজিক অস্থিরতা ও প্রযুক্তিগত বিপর্যয়: পরিবেশগত সংকট, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিশ্বে অভিবাসন ও সামাজিক বিপর্যয়ের কথা বাবা ভাঙ্গার নামে বলা হয়। বহু বিচ্ছিন্ন বক্তব্য মিলিয়ে তৈরি এই ভবিষ্যদ্বাণীও যাচাইসাপেক্ষ।
12
12
যদিও এসব ভবিষ্যদ্বাণী জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আলোড়ন তোলে, তবে অধিকাংশেরই কোনও নির্ভরযোগ্য উৎস নেই। ফলে এগুলোকে গবেষণা নয়, বরং কৌতূহল ও লোককথার আলোকে দেখা উচিত।