ভারতীয় সিনেমায় নায়কদের তুলনায় নায়িকাদের যাত্রাপথ যে বেশি বন্ধুর, তা নতুন করে বলে দিতে হয় না। যেখানে পুরুষ অভিনেতারা বয়স বাড়লেও সুপারস্টার হিসাবে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারেন, সেখানে অভিনেত্রীদের জন্য এই সুযোগ সীমিত। তবুও অনুষ্কা শেট্টি তাঁর অসাধারণ প্রতিভা, ব্যক্তিত্ব এবং অধ্যবসায়ের জোরে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার জগতে এক শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

শোনা যায়, এক সময় স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন অনুষ্কা। কিন্তু সেই গণ্ডি পেরিয়ে বেশ দক্ষতার সঙ্গেই দক্ষিণী চলচ্চিত্র জগতে পদার্পণ করেন। তিনি দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার অনেক সফল ছবিতে অভিনয় করে নিজেকে একটি আলাদা পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আজ তাঁকে তামিল এবং তেলুগু সিনেমার সুপারস্টার হিসাবে গণ্য করা হয়।

অনুষ্কা  ২০০৬ সালে ‘রেন্দু’ সিনেমার মাধ্যমে তামিল ছবিতে অভিষেক করেন> যেখানে তাঁর সহঅভিনেতা ছিলেন আর. মাধবন। পরবর্তীতে তিনি ‘ভেত্তাইকারান’, ‘সিংগম’, ‘দিবা থিরুমাগল’, ‘বাহুবলি’, ‘লিঙ্গা’ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

২০০৯ সালের ডার্ক ফ্যান্টাসি ‘অরুন্ধতি’ তাঁকে ব্যাপক প্রশংসা এনে দেয়। বাংলাতেও তৈরি হয় এই ছবি। মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন কোয়েল মল্লিক। তবে ২০১৫ সালের ‘বাহুবলি’ অনুষ্কার খ্যাতি সারা ভারতে ছড়িয়ে দেয়।

সেই ছবির সাফল্যের পরে অনুষ্কা সাহসী এক পদক্ষেপ করেন ‘ইনজি ইদুপ্তাজাগি’ ছবিতে। নায়িকা তাঁর চরিত্রের জন্য উল্লেখযোগ্য ওজন বৃদ্ধি করেন এবং একজন প্লাস-সাইজ মহিলার চরিত্রে অভিনয় করে স্থূলকায় মহিলাদের মানসিক সংগ্রামের বিষয়টি ফুটিয়ে তোলেন। পর্দায় তাঁর সাহসিকতা প্রশংসিত হয়েছিল বটে। কিন্তু অনুষ্কার কাছে কাজের প্রস্তাব আসা কমে যায়।

তবে অনুষ্কা থেমে থাকেননি। ‘বাহুবলি’র পর ‘বাহুবলি ২’ তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমা হয়ে ওঠে। ৪০ বছর বয়সেও অনুষ্কা নায়িকা হিসাবে তাঁর অবস্থান ধরে রেখেছেন। দক্ষিণী ছবিতে যা বিরল।

জানা যায়, অভিনয় পা রাখার আগে অনুষ্কা বেঙ্গালুরুর ইস্টউড স্কুলে যোগব্যায়াম শিক্ষক হিসাবে কাজ করেছিলেন। সেখানে শিক্ষকতা করাকালীন একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার আগে যদিও এই তথ্য অনেকেই জানতেন না।

প্রধানত তামিল এবং তেলুগু সিনেমায় মনোনিবেশ করার পর, অনুষ্কা এখন মালয়ালম সিনেমায় অভিষেক করতে চলেছেন। চিরাচরিত নিয়মকে তুড়িতে উড়িয়ে নিজের পথ নিজেই তৈরি করে নিয়েছেন তিনি। বয়স তাঁকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। অভিনয় দক্ষতা আর নিষ্ঠা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন অনুষ্কা। তৈরি করেছেন সাফল্যের নজির।