রানি মুখার্জি বরাবরই তাঁর বিবাহিত জীবন আড়ালে রাখেন। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, কেন তাঁর বিয়ের ছবি কখনও প্রকাশ্যে আসেনি। ইদানীং বিয়ে আচার-অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেই ইনস্টাগ্রামে ছবি দিয়ে অনুরাগীদের সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায়ের ঝলক ভাগ করে নেন বলিউড তারকারা। অথচ রানি বিয়ের এক দশক পার হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত সেই ছবিগুলি অনলাইনে কোথাও নেই।

এক সাক্ষাৎকারে রানি ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমার স্বামী (আদিত্য চোপড়া) খুবই প্রাইভেট মানুষ এবং আমার মনে হয় তিনি চাইতেন বিয়েটা খুব ব্যক্তিগতভাবে হোক। তাই আমি মনে করি না তিনি কখনও চাইবেন বিয়ের ছবি প্রকাশ্যে আসুক।”
মজার ছলে যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় ভক্তরা তাঁদের সিলভার জুবিলিতে বিয়ে ছবিগুলি দেখতে পাবেন কি না, রানি হেসে বলেন, “হতে পারে! আসলে, এটা কিন্তু বেশ ভাল আইডিয়া।”

রানি জানা, পেশাগত আর ব্যক্তিগত জীবন আলাদা রাখাই তাঁর কাছে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। নায়িকার কথায়, “আমি সব সময় প্রাইভেট থেকেছি, কারণ আমার কাজের জীবন আলাদা আর ব্যক্তিগত জীবন আলাদা। বছরের পর বছর ধরে যদি আমাকে লক্ষ্য করে থাকেন, দেখবেন আমি তখনই প্রকাশ্যে আসি যখন তার কোনও প্রয়োজন থাকে। সবসময় নয়।” 

মেয়ে আদিরাকে আলোকবৃত্ত থেকে দূরে বড় করে তোলার প্রসঙ্গে রানি জানান, তিনি এবং আদিত্য দু’জনেই  সন্তান লালনের ক্ষেত্রে একই দর্শনে বিশ্বাসী। রানির কথায়, “আমরা কখনও চাইনি যে ও (আদিরা) এমন কোনও পরিস্থিতিতে পড়ুক যেখানে ওকে অতিরিক্ত প্রকাশ্যে আসতে হবে… ওর জীবন একেবারেই স্বাভাবিক হওয়া উচিত। যা কিছু ও অর্জন করবে, যে স্বীকৃতি পাবে, তা যেন শুধুমাত্র নিজের যোগ্যতার জোরেই পায়। সেটি যেন সহজে পাওয়া বা স্বাভাবিক ধরে নেওয়া না হয়।”

রানি ২০১৪ সালের এপ্রিলে পরিচালক আদিত্য চোপড়ার সঙ্গে ঘরোয়া এক অনুষ্ঠানে সাতপাকে বাঁধা পড়েন। এক বছর পর, ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর তাঁদের কোল আলো করে আসে একমাত্র কন্যা আদিরা।

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী রানি বর্তমানে ব্যস্ত তাঁর আগামী ছবি ‘মর্দানি ৩’এর শুটিং নিয়ে। তবে শুক্রবার তিনি কাজের ফাঁকে উপস্থিত ছিলেন সাইবার অ্যাওয়ারনেস মান্থ ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিনেতা অক্ষয় কুমারও। রানি শুধু পুলিশ বাহিনীর প্রশংসাই করেননি, বরং শিশু ও নারীদের বিরুদ্ধে সাইবার অপরাধ নিয়েও খোলামেলা আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রানি বলেন, “সাইবার অ্যাওয়ারনেস মান্থের উদ্বোধনে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত এবং গর্বিত। এতদিন ধরে ছবিতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই এবং অসহায়দের রক্ষা করা নারী চরিত্রে অভিনয়ের সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আজও আমি সরাসরি ‘মর্দানি ৩’-এর সেট থেকে এখানে ছুটে এসেছি, তাই সব কিছুই যেন অবিশ্বাস্য লাগছে। মহারাষ্ট্র পুলিশের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আজকের দিনে সাইবার অপরাধ—বিশেষত নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে নিঃশব্দে আমাদের ঘরের ভিতরেই বেড়ে চলেছে। একজন নারী হিসাবে, একজন মা হিসেবে আমি বুঝি সচেতনতার গুরুত্ব কতটা। পরিবার যখন জানে কিভাবে নিরাপদ থাকতে হয় এবং কোথায় সাহায্য চাইতে হয়, তখনই প্রকৃত সুরক্ষা পাওয়া যায়।”