বলিউডের ‘অ্যাকশন হিরো’ জন আব্রাহাম সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তিনি এমন কোনও ছবি করবেন না যা দর্শকদের রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করে। উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে এনেছিলেন দ্য কাশ্মীর ফাইলস এবং ছাভা-র মতো বিতর্কিত ছবির নাম। জনের কথায়, “আমি না ডানপন্থী ,না বামপন্থী — আমি রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ,” বলেন জন। তাঁর চিন্তা হচ্ছে, ডানপন্থী ধাঁচের ছবি অনেক বেশি দর্শক পায়। আর সেই আবহেই তখন একজন নির্মাতা হিসেবে সিদ্ধান্ত নিতে হয় — বাণিজ্যিক পথে যাবেন, না কি নিজের অবস্থানে অটল থাকবেন। এক্ষেত্রে জন বেছে নিয়েছেন দ্বিতীয় পথ।
জাতীয়তাবাদী ছবির প্রলোভনে তিনি পা দেবেন না, স্পষ্ট জানালেন জন! যখন অভিনেতাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘ছাভা’ বা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’–এর মতো ছবি তিনি কি বানাতে চাইবেন, জন খোলাখুলি উত্তর দেন — “আমি এই দুটি ছবি দেখিনি, কিন্তু জানি মানুষ এগুলো পছন্দ করেছে। তবে যখন কোনও ছবি অতিরিক্ত রাজনৈতিক আবহে মানুষের মতপ্রকাশ প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়, এবং তবুও দর্শক পায়, সেটা আমার ভয়ঙ্কর মনে হয়। আমার জবাব — না, আমি এমন ছবি বানাতে কখনও রাজি হইনি, আর হবও না।”
কিন্তু জনের এই মন্তব্য ভালভাবে নেননি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। সদ্য দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে বলেন—“জন কোনও ইতিহাসবিদ নন, কোনও চিন্তক নন, লেখকও নন। তিনি তো উগ্র দেশপ্রেম ঘরানার ছবি করেছেন—যেমন ‘সত্যমেব জয়তে’। তিনি ‘ডিপ্লোম্যাট’ও বানিয়েছেন। এখন উনি যদি বলেন এ রকম কথা, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। যদি কোনও বড় ইতিহাসবিদ বলতেন, তাহলে তা বোঝা যেত। কিন্তু উনি তো শরীর দেখানো, বাইক চালানো আর প্রোটিন খাওয়ার জন্য পরিচিত। সেসবেই মন দিলেই ভাল হবে। সিনেমার আলোচনা না করলেই বরং ভাল।”অগ্নিহোত্রী আরও যোগ করেন, “ভারতের আবহ কখনও কি অরাজনৈতিক ছিল? হিন্দু-মুসলিম বা জাতপাতের প্রশ্ন কখনওই তো সমাজ থেকে দূরে ছিল না। তাই এসব নিয়ে সিনেমা তৈরি হলে আপত্তি কোথায়?”
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে কাশ্মীরি হিন্দুদের নির্বাসন নিয়ে তৈরি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস-এ অভিনয় করেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের, দর্শন কুমার ও পল্লবী যোশী। ছবিটি বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল, বিশ্বজুড়ে আয় করেছিল প্রায় ৩৪১ কোটি টাকা।
