সংবাদ সংস্থা মুম্বই: ভারতীয় সিনেমার এক অনন্য অধ্যায় গুরু দত্ত। চলতি বছরের ৯ জুলাই তাঁর জন্মশতবর্ষ। আর সেই বিশেষ দিনকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে সুবিশাল প্রস্তুতি। তাঁর জীবন, চলচ্চিত্রভাষা এবং অতুলনীয় আবেগকে ঘিরে এবার সাজছে এক বহুমাত্রিক শ্রদ্ধাঞ্জলি। নেতৃত্বে আল্ট্রা মিডিয়া অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট গ্ৰুপ — যাঁদের অধীনে রয়েছে গুরু দত্তের ছবির স্বত্ব। ইতিমধ্যেই কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ঝলমল করেছে তাঁর রিস্টোর করা ক্ল্যাসিক ছবিগুলি। এবার পালা আরও বড় উদ্যোগের!
এবার গুরু দত্তের জীবনে আসছে বায়োপিক, ওয়েব সিরিজও ভাবনায়। আল্ট্রা মিডিয়া-র ডিরেক্টর রজত আগরওয়াল জানিয়েছেন, গুরু দত্তের জীবনকে বড় পর্দায় তুলে ধরার জন্য প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “বায়োপিক সবসময় চ্যালেঞ্জিং, কারণ এতে একজন মানুষের কীর্তিকে বাস্তবের কাছাকাছি তুলে ধরতে হয়। আমরা এমন কোনও আধুনিক পরিচালক ও প্রোডিউসারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী, যিনি সত্যিই গুরু দত্তজির সত্যিকারের অনুরাগী।”
এবার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—কে হবেন গুরু দত্ত? এই প্রশ্নে আগরওয়াল বলেন, “এখনই একটা নাম বলা কঠিন, কারণ বলিউডে অনেক প্রতিভাবান অভিনেতা আছেন। তবে আমার মনে হয়, ভিকি কৌশল গুরু দত্তজির ইমোশনাল ডেপ্থটাকে দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন।”
শুধু বায়োপিক নয়, গুরু দত্তের আইকনিক ছবিগুলিকে আধুনিক ফর্ম্যাটে—ওয়েব সিরিজের আকারে—নতুনভাবে উপস্থাপন করার পরিকল্পনাও চলছে। রজত আগরওয়াল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বলিউডের দুই নামী পরিচালক এই ভাবনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যদিও এখনও কোনও অফিসিয়াল ঘোষণা হয়নি।
কান-এ ঝলকে পড়ল কালজয়ী ক্লাসিক। আল্ট্রা মিডিয়া কান ২০২৫এ দেখিয়েছে গুরু দত্তের চারটি রিস্টোর করা ছবি—প্যায়াসা (১৯৫৭), কাগজ কে ফুল (১৯৫৯), চৌধবি কা চাঁদ (১৯৬০), সাহেব বিবি অউর গুলাম (১৯৬২)। বিশ্ববাজারে সেই ছবিগুলির রেট্রো কালার আর আবেগপূর্ণ গ্লোরি দেখে আবেগাপ্লুত দর্শক। আগরওয়ালের কথায়, “আমরা ছবিগুলো মূলত ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট ফর্মেই রাখছি, যাতে সেই পুরনো দিনের মোহ অটুট থাকে। তবে কয়েকটা গানে কালারাইজেশনের ভাবনাও রয়েছে, দর্শকদের প্রতিক্রিয়া বুঝেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”
দেশজুড়ে সপ্তাহব্যাপী জন্মশতবর্ষ উদযাপন। এই শতবর্ষ উপলক্ষে সারা দেশে সপ্তাহব্যাপী আয়োজন—থিয়েটারে গুরু দত্তের ক্লাসিক ছবির পুনঃপ্রদর্শন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, ইন্ডাস্ট্রির বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনা সভা—সব মিলিয়ে এক চলচ্চিত্রময় শ্রদ্ধাঞ্জলি হতে চলেছে।
গুরু দত্তের মতো আবেগের কারিগরকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার দায়িত্ব সহজ নয়। কিন্তু ভিকি কৌশলের সংযম, গভীরতা ও অভিনয়বোধ—তাঁকে এই চরিত্রের জন্য আদর্শ করে তোলে। যদি সব ঠিকঠাক এগোয়, তাহলে বলিউড পেতে চলেছে এক নতুন ‘গুরু’!
