সম্প্রতি এক ঝলকের নিজস্বীতে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী দীপ্তি নাভাল আবারও মন জিতলেন নেটদুনিয়ার। কারণটা তাঁর বিলাস তারকাখচিত জীবনযাপন নয়, বরং তার সম্পূর্ণ বিপরীত, একেবারে সাধারণ এক অটোয় চেপে সফর।

নিজের শেয়ার করা ছবিতে দীপ্তি জানান, তিনি কোনও ঝাঁ-চকচকে গাড়ি বা ড্রাইভার ছাড়াই অটোয় করে যাচ্ছিলেন মুম্বইয়ের এক বিলাসবহুল হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “কোনও গাড়ি চেপে নয়, কোনও চালক নেই, অটোয় চেপে পাঁচতারা হোটেলে যাচ্ছি লাঞ্চ সারতে!” অভিনেত্রীর এই সোজাসাপটা ক্যাপশনই যেন তাঁর ব্যক্তিত্বের সবচেয়ে বড় পরিচয় দিয়ে দিল।

 

 

 

ছবিতে দেখা যায়, অটোর ভিতরে বসে মাথায় ওড়না জড়িয়ে, চোখে ফ্যাশনদুরস্ত রোদচশমা পরে সেলফি তুলছেন দীপ্তি। গ্ল্যামার সেখানে রয়েছে, কিন্তু তার থেকেও বেশি রয়েছে সহজিয়াব্যাপার, যা এই মুহূর্তে দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে।

 

 

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দীপ্তি নাভাল তাঁর অনুরাগীদের নিয়ে যাচ্ছেন স্মৃতির সফরে। পরিবারকে ঘিরে পুরনো ছবির ঝাঁপি খুলে দিয়েছেন তিনি। নভেম্বরের শুরুতেই অভিনেত্রী শেয়ার করেছিলেন ১৯৮২ সালের ইউরোপ সফরের এক ছবি, যেখানে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা এবং ছোট ভাই রোহিতাশ্ব। সেই পোস্টে তিনি আবেগঘন ভাষায় লেখেন, “হৃদয়ের আলবাম থেকে আর আরেকটি ছবি ভাগ করলাম শেষবার আপনাদের সঙ্গে… বয়স ৭৩, ট্রেন ধরে ধরে ঘোরা, এই যাত্রায় আপনাদের সবাইকে পাশে পেয়েছি।”

 

 

 

এর আগেও ইউরোপ সফরের আরও একটি স্মৃতি ভাগ করে নিয়েছিলেন দীপ্তি। বাবার সঙ্গে ক্যাম্পারের সামনে তোলা এক ছবি। সেই ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন,“আমার বাবার স্মৃতিবিজড়িত অমূল্য স্মৃতি ভাগ করে নিচ্ছি -১৯৮২।” এই পোস্টগুলির মধ্যেই যেন ধরা পড়ে অভিনেত্রীর জীবনের সবচেয়ে ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল অধ্যায়।

চলচ্চিত্র জগতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকা দীপ্তি নাভাল বরাবরই ইন্ডাস্ট্রির পরিবর্তন নিয়ে খোলাখুলি কথা বলে আসছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আজকের সিনেমা প্রযুক্তিগত ও দৃশ্যমান দিক থেকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সমানে সমান। তাঁর কথায়, “আজকের অভিনেতা ও কলাকুশলীরারা অনেক বেশি প্রশিক্ষিত ও ফোকাসড। আগে যেমন হঠাৎ করেই ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে পড়া যেত, এখন সেটা আর সম্ভব নয়।”

তরুণ প্রজন্মের প্রতি প্রশংসা বর্ষণ করতেও ভোলেননি প্রবীণ অভিনেত্রী। তিনি বলেন, আজকের শিল্পীরা স্বপ্নে বিশ্বাস রাখেন এবং সেই স্বপ্নপূরণের জন্য সবটা উজাড় করে দেন, এটাই সময়ের সবচেয়ে বড় বদল।

অটো রিকশার এক সাধারণ সেলফি থেকে সিনেমা জগতের বড় পরিবর্তন - দীপ্তি নাভালের পোস্ট যেন আবারও মনে করিয়ে দেয়, সত্যিকারের তারকাখ্যাতি আসে সরলতা আর সততার হাত ধরেই।