‘ধূমকেতু’ জ্বরে কাবু বাংলা ছবিপ্রেমী দর্শক। হই হই করে ছবির প্রচার হচ্ছে। ১৩ বছর পর ফের দেব-শুভশ্রীর পুরনো রসায়ন চাক্ষুষের অপেক্ষা ফুরল। বৃহস্পতিবার মুক্তি পেল ‘ধূমকেতু’। বহু বছর ধরে দেব-শুভশ্রীর ভক্তরা এই ছবির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছেন। সেই ভক্তদের বেশিরভাগের বয়স যাঁদের তিরিশ ছুঁয়ে ফেলেছে অথবা সেই চৌকাঠের সামান্য এপারে অথবা ওপারে। এককথায়, দেব-শুভশ্রীর কেরিয়ারের উত্থানের যে প্রজন্ম সাক্ষী। কিন্তু নব্য প্রজন্ম? অর্থাৎ যাঁরা জেন-জি, তাঁরা কেন দেখবেন এই জুটির ছবি? তাও ১০ বছর আগের একটি ছবি?পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলির  কাছে প্রশ্ন রেখেছিল আজকাল ডট ইন। ‘ধূমকেতু’ নিয়ে তাঁর ভাবনা, উচ্ছ্বাস এবং আবেগ নিজের অঅনুকরণীয় ভঙ্গিতে ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি এই প্রশ্নের জবাব দিলেন কৌশিক।

 

নিজস্ব ছন্দে ‘ধূমকেতু’র পরিচালক বললেন, “মানুষ আসলে খুব ভালবাসার কাঙাল। ধরুন, কোনও শিশু অথবা কিশোরের যদি খানিক মন খারাপের সময় আপনি যদি ওঁর পিঠে সস্নেহে হাত রেখে নরম স্বরে জিজ্ঞেস করেন, কী হয়েছে বাবা? দেখবেন, ও কেঁদে ফেলবে। ও হয়তো কিছুই করেনি, কোনও দোষও করেনি...কিন্তু ওই যে আপনার হাতের স্পর্শের মাধ্যমে যে ভালবাসার উষ্ণতা ওর শরীরে ঢুকল, তার যে অনুরণন-তাতেই চোখে জল এসে যায়। আবেগতাড়িত হয়ে যাচ্ছে সে। হয়তো আবেগপ্রবণ হয়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ নয়, কিছুই ঘটেনি, তবু আবেগতাড়িত হয়ে যায় মানুষ। এই জেন-জি হচ্ছে সেই প্রজন্ম যাঁদের মন অত্যন্ত আধুনিক কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত সংবেদনশীল।”

 

সামান্য থেমে, আলতো হেসে কৌশিক আরও বললেন, “তাঁদের কাছে একটি ছবিতে সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গির মূল্য তাই সহজেই অনুমেয়। তাঁরা চায় এমন একটা গল্প দেখতে, শুনতে যার মধ্যে আধুনিকতা থাকবে, যা সংবেদনশীল হবে। আর যেকোনও সংবেদনশীল গল্পই আধুনিক হয়ে ওঠে। এই প্রজন্ম ভ্যাদভ্যাদে কিছু দেখতে চায় না, পুরনো জিনিস দেখতে চায়। তাঁরা অবশ্যই বাঙালিয়ানায় ভরপুর ছবি দেখতে চায় কিন্তু তার মধ্যে পরিপূর্ণ রুচিবোধের চলাফেরা থাকতে হবে। আর এই সব ক'টি ব্যাপারই ধূমকেতু তে আছে। কাজেই তাঁরা যখন দেখবেন ধূমকেতু, স্বভাবতই এই ছবি তাঁরা গ্রহণ করবেন, নিজের করে নেবেন। আর অবশ্যই যেটা বলা দরকার, তাঁদের মতো করে দেব-শুভশ্রীকে দেখতে পাবেন তাঁরা। তাই আমার বিশ্বাস, ধূমকেতু জেন-জিদের কাছে বিশেষ ছবি হতে চলেছে।”

 

১৪ আগস্ট সকাল থেকেই প্রেক্ষাগুলোতে ‘ধূমকেতু’ দেখতে উপচে পড়ছে দর্শকের ভিড়। ‘হাউসফুল বোর্ড’ লেগেছে প্রায় প্রতিটি হলে।দর্শক খুশি, তাঁদের পুরনো জুটিকে ফিরে পেয়ে। 'ধূমকেতু' ছবির জন্য অন্তত দেব-শুভশ্রীর মধ্যে থাকা মাঝের অদৃশ্য দেওয়াল যেন পুরোপুরি মুছে গেল। আগামীতে তাঁরা ছবি করবেন কি না? এই প্রশ্ন করেছেন অনেকেই। দু’জনের উত্তর, “ভাল চিত্রনাট্য পেলে অবশ্যই করব।”