বরাবরই সমাজমাধ্যমে নিজেদের বক্তব্যের জন্য সমালোচনার শিকার হন অভিনেতা রাজা গোস্বামী ও মধুবনী গোস্বামী। কখনও নিজেদের বলা কথা, কখনও আবার নতুন ব্যবসা শুরু করায় নেটিজেনদের কাছে নানাভাবে কটাক্ষের শিকার হন এই তারকা জুটি। তবে এসব কোনওকিছুই রাজা-মধুবনীর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বরং বারবার নিজেদের ভ্লগের মাধ্যমে মনের জোর প্রমাণ করে দিয়েছেন তাঁরা। এবার সমাজমাধ্যমে বাঙালিদের ব্যবসা করার মানসিকতা নিয়ে আওয়াজ তুললেন তাঁরা। 

 

 

ভিডিওর শুরুতেই রাজাকে বলতে শোনা যায়, "টাকার অভাবে পৈতৃক বাড়ি বিক্রি করে দিতে হচ্ছে..তবে এটা আমাদের নয়। আসলে আমরা বহুদিন ধরেই দক্ষিণ কলকাতায় একটি বাড়ি কেনার চেষ্টা করছি। আমরা এখন যেখানে থাকি সেই বাড়ি গিরিশ পার্কের কাছে। যা উত্তর কলকাতায়। দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে আমি এখান থেকেই স্টুডিও পাড়ায় অর্থাৎ টালিগঞ্জে যাতায়াত করছি। কিন্তু এখন মনে হয়েছে যে এবার একটা বাড়ি একনা খুব দরকার দক্ষিণে। আর সেই বাড়ির সন্ধানেই অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে সন্ধান চালাতে গিয়ে যা দেখতে পাচ্ছি তা হল অধিকাংশ বাড়িই বাঙালিদের এবং তাঁরা তা বিক্রি করে দিচ্ছেন। এটাই আমাদের খুব আঘাত দিয়েছে। কলকাতার প্রাণকেন্দ্র সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে বলুন তো কটা বাঙালিদের বাড়ি আছে? জন্মসূত্রে পাওয়া ভিটে বেচে দেওয়ার অধিকার কারও নেই। নিজের উপার্জনে সম্পত্তি ক্রয় করে তা বিক্রি করতে পারেন।"


রাজা আরও বলেন, "বাঙালিদের সবথেকে বর সমস্যা হল তাঁরা কোনও ব্যাবসা করার আগেই নাক সিটকান। আলু, পটল বা ঝাল মুড়ির ব্যবসা করতে তাঁদের গায়ে লাগে। অথচ পৈতৃক ভিটে বেচতে গায়ে লাগে না। বাঙালি সর্বস্ব বেঁচে দিয়ে অন্যের কাছে বেতনভোগী কর্মচারী হয়ে কাজ করতেই পছন্দ করে। এবং তা দিনে দিনে বাড়ছে। এই জন্যই বাঙালি আজ এত পিছিয়ে। কোনও কাজ ছোট নয়। স্বামীজি বলেছেন, এই কথাই। বাঙালি এগোতে চাইলে তার পা টেনে ধরে আরেকজন বাঙালিই। কারণ, বাঙালি যে কাঁকড়ার জাত! আমাদের ভিডিও দেখে যদি কেউ এটুকু বোঝে‌ন যে, যাই হয়ে যাক চা বিক্রি করব তবুও পৈতৃক বাড়ি বিক্রি করব না। বলিউডের অধিকাংশ তারকার কিন্তু ব্যবসা আছে। তাই সবাই সবারটা গুছিয়ে নিচ্ছে। আপনারা সবাই এগিয়ে আসুন, দেখুন ভাল হবে।'

 


এর আগে নতুন বাড়ি কিনতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা ভাগ করতে গিয়ে মধুবনীও সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে আমরা বাড়ি দেখছিলাম। বাড়ি কেনার শখ হয়েছিল বলে। কিন্তু একটা ব্যাপার দেখে ভীষণ অবাক হলাম, যারা বাড়ি বিক্রি করছেন তাদের প্রায় একশ শতাংশ বাঙালি। বোঝাই যাচ্ছে, সৎ পথে উপার্জন করাটা গর্বের বিষয় নয় বরং বাপ ঠাকুরদার বাড়ি বিক্রি করে দেওয়াটাই গর্বের!’

 

 

আরও পড়ুন: পরিবার নিয়ে বিদেশে পাড়ি দেবের, কিন্তু কোথায় রুক্মিণী? সত্যিই কি দূরত্ব বাড়ল জুটির?

 


রাজা-মধুবনীর এই পোস্টে আবারও মিশ্র প্রতিক্রিয়া ভেসে এসেছে। নেটিজেনদের একাংশের মতে বাঙালিদের অপমান করেছেন এই তারকা জুটি। আবার কেউ কেউ রাজা-মধুবনীকে সমর্থনও করেছেন।