বলিউডে এল নতুন খবর। এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাজ করতে হাত মিলিয়েছেন অভিনেত্রী ও প্রযোজক সানি লিওনি এবং খ্যাতনামা পরিচালক বিক্রমাদিত্য মোতওয়ান। সানি লিওনির প্রযোজনা সংস্থা সানসিটি এবং মোতওয়ানের আন্দোলন ফিল্মস যৌথভাবে একটি আন্তর্জাতিক জীবনীভিত্তিক সিরিজ নির্মাণ করতে চলেছে।
সানসিটি ইতিমধ্যেই বাস্তব জীবনের এই অনুপ্রেরণামূলক কাহিনির স্বত্ব কিনে নিয়েছে। তবে কাহিনি, শিল্পী তালিকা বা মুক্তির মাধ্যম এখনও প্রকাশ করা হয়নি। সবই গোপন রাখা হলেও, এই উদ্যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই দর্শকমহলে প্রবল কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

এক সাক্ষাৎকারে সানি লিওন জানিয়েছেন, এই সিরিজ তাঁর কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায়— “এই কাজটি এমন একটি জীবনের গল্প নিয়ে, যা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। সেই কাহিনি বিশ্বের দর্শকের সামনে তুলে ধরতে পারা আমার কাছে গর্বের।” সম্প্রতি তিনি প্রযোজক হিসেবেও সক্রিয় হয়েছেন। হিমেশ রেশমিয়ার অভিনীত ‘ব্যাডাস রবিকুমার’ ছবির প্রযোজনায়ও যুক্ত ছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছেন তাঁর দক্ষতা। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে সম্প্রচারিত তাঁর ধারাবাহিক ‘ব্ল্যাক ওয়ারেন্ট’ বিপুল সাড়া পেয়েছে। সেই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। এর আগে তিনি ‘সেক্রেড গেমস’, ‘লুটেরা’, ‘জুবিলি’-র মতো জনপ্রিয় এবং সমালোচকদের প্রশংসিত বহু কাজ পরিচালনা করেছেন। তাই তাঁর নতুন জীবনীভিত্তিক সিরিজ নিয়েও প্রত্যাশা স্বাভাবিকভাবেই বেশি।
এই সহযোগিতা শুধু সানি লিওনি ও মোতওয়ানের জন্যই নয়, ভারতীয় বিনোদন জগতের জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ এবার দেশীয় প্রযোজনা আন্তর্জাতিক দর্শকের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত হতে চলেছে। ভারতীয় কাহিনিকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এটি এক বড় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।
সব মিলিয়ে, দুই প্রযোজনা সংস্থা একত্রিত হয়ে এমন এক জীবনীভিত্তিক সিরিজ আনতে চলেছে, যা দর্শককে অনুপ্রাণিত করবে এবং ভারতীয় বিষয়বস্তুকে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও শক্ত অবস্থান এনে দেবে। যদিও মুক্তির সময় বা মাধ্যম নিয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি, তবে বলিউডে এখন থেকেই এই সিরিজকে ঘিরে উৎসাহ তুঙ্গে।
প্রসঙ্গত, এক সময় দুষ্টু ছবির নায়িকা হিসেবে পরিচিত ছিলেন সানি লিওনি। 'জিসম ২'-এর হাত ধরে বলিউডের এন্ট্রি নিয়েছিলেন সানি লিওনি। মাঝেমধ্যেই চর্চায় থাকেন তিনি। আবারও নিজের ব্যক্তিগত জীবনের কিছু অজানা অধ্যায় প্রকাশ করলেন করণজিৎ কৌর বোহরা ওরফে সানি। সম্প্রতি সোহা আলি খানের সঞ্চালিত একটি পডকাস্টে অংশ নিয়ে তিনি স্বীকার করেন, গর্ভধারণ তিনি কখনও চাননি। তাই সন্তানদের জন্য দত্তক ও সারোগেসি—দুই পথই বেছে নিয়েছিলেন তিনি ও তার স্বামী ড্যানিয়েল ওয়েবার।
সানির প্রথম সন্তান হল দত্তক নেওয়া কন্যা নিশা। এরপর সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেয় যমজ পুত্র নোয়া ও আসের। এই যাত্রাপথ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সানি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে অন্তঃসত্ত্বা হতে চাইনি। কিন্তু মা হতে চেয়েছিলাম বরাবরই।তাই দত্তক নেওয়াই ছিল আমার প্রথম ইচ্ছে। একই দিনে আমরা দত্তকের কাগজপত্র জমা দিই এবং সারোগেসির প্রক্রিয়াও শুরু করি।”
আলোচনার এক পর্যায়ে সোহা আলি খান জানতে চান, সারোগেসির অভিজ্ঞতা নিয়ে তাঁর অনুভূতি কী ছিল? সানি সোজাসাপ্টা জবাব দেন—“আমরা এত টাকা খরচ করেছি যে… প্রতি সপ্তাহে ফি দিতে হয়েছে। এমনকী গর্ভধারণকারী মায়ের স্বামীকেও কাজ থেকে ছুটি নেওয়ার জন্য অর্থ দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাঁরা সেই অর্থে একটি নতুন বাড়ি তৈরি করেছে এবং একটি জমকালো বিয়ের অনুষ্ঠানও করেছে।”
তার কথায় স্পষ্ট, শুধুমাত্র আর্থিক খরচ নয়, পুরো অভিজ্ঞতাই ছিল এক অনন্য যাত্রা। যদিও এতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছে, তবুও তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত ছিল একেবারেই সঠিক। কারণ সন্তানদের হাসি আর ভালবাসাই তাঁর কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
