হিন্দি বাণিজ্যিক সিনেমার দুনিয়ায় বড় তারকাদের কদর নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই প্রথাগত নিয়ম ভেঙে দুই নবাগত অভিনেতা-অভিনেত্রীর জুটির কাঁধে ভর করে বক্স অফিসে বাজিমাত করল ‘সইয়ারা’। আর সেই সাফল্যে বেজায় খুশি পরিচালক সুভাষ ঘাই। ‘তাল’, ‘পরদেশ’-এর মতো কালজয়ী ছবি যাঁর ঝুলিতে, তিনি এবার ‘সইয়ারা’কে কুর্নিশ জানালেন শুধুমাত্র তার হৃদয় ছোঁয়া গল্প আর ব্যালান্সড প্রোডাকশনের জন্য।

 

রবিবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে সুভাষ ঘাই লেখেন, “যখন নতুন মুখের ছবি বক্স অফিসে সুনামি তোলে, তখন এটা আমাদের স্পষ্ট বার্তা দেয়—গল্পের চেয়ে বেশি বাজেট নয়, অভিনেতার চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নয়, তারকাদের খেয়াল-খুশিতে খরচ নয়, স্টান্ট মার্কেটিং নয়—দর্শক এখন খাঁটি গল্প খুঁজছে। সারা ভারত জুড়ে তাঁরা এমন সিনেমাকেই আপন করে নিচ্ছে।”

 

এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে তিনি প্রযোজক ও বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দেন, যেন বিপুল তারকা-খরচা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র গল্প ও নির্মাণে জোর দেন। ঘাই আরও লেখেন, “আদিত্য চোপড়া ও মহেশ সুরিকে কুর্নিশ জানাই—হিন্দি কমার্শিয়াল সিনেমার মূলে যেটা থাকা উচিত, তা-ই প্রমাণ করে দিলেন তাঁরা। ‘সইয়ারা’ এখন ইতিহাস।”

 

নতুন মুখ আহান পাণ্ডে ও অনিত পাড্ডাকে নিয়ে তৈরি এই প্রেমের কাহিনি ইতিমধ্যেই তিন দিনের মাথায় ১০০ কোটির গণ্ডি ছাড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। বলিউডের অন্যতম সেরা উদ্বোধনী ছবি হিসেবে ইতিমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছে ‘সইয়ারা’, আর এই রেকর্ড এখনও থামেনি।

 

পরিচালকের মতে, “ভাল প্রযোজক, ভাল পরিচালক, শক্তিশালী স্ক্রিপ্ট, সুরেলা সঙ্গীত আর তারকামুখ হোক বড় বা নতুন—যদি বাজেট ব্যালান্সড হয় আর সিনেমা ভালভাবে শুট হয়, তাহলে সাফল্য নিশ্চিত। এর বাইরে কিছু লাগে না। সিনেমা জিন্দাবাদ!”

এটা শুধু একটি নতুন জুটি নিয়ে তৈরি রোম্যান্টিক ছবি নয়, এটা বলিউডকে তারকাকেন্দ্রিক থেকে গল্পকেন্দ্রিকের দিকে ফেরানোর এক সাহসী পদক্ষেপ।

 

অন্যদিকে, ‘সইয়ারা’র পরিচালক মোহিত সুরি মুখ খুলেছেন আশিকি ৩ ছবি নিয়েও। কারণ, মোহিতের-ই পরিচালনায় তৈরি হয়েছিল বক্স অফিস কাঁপানো আশিকি ২। সে প্রসঙ্গে মোহিত সুরির উত্তর যেন সোজাসাপটা, খোলামেলা—আর খানিকটা তীব্রও।সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, আদিত্য ও শ্রদ্ধাকে নিয়ে তিনি আরেকটা 'আশিকি'-র মতো ছবি বানাবেন কি না, তখন হেসে উত্তর দেন মোহিত— “প্রযোজকদের জিজ্ঞেস করুন… ওরা তো আমাকেই নিচ্ছে না!” আর সঙ্গে বলেন, “আমি আদিত্য-শ্রদ্ধাকে নিয়ে অবশ্যই ছবি বানাতে চাই। কিন্তু সেটা করার জন্য আমাকে এমন একটা চিত্রনাট্য পেতে হবে যা ‘আশিকি ২’-এর থেকেও ভালো। আর সেটা খুঁজে পাওয়া সত্যিই কঠিন। ‘আশিকি’-র চাপ এখনও আমার ঘাড়ে।” এই বক্তব্যে স্পষ্ট, ‘আশিকি’ নামটাই এত বড় ভার বহন করে, যে তার পরবর্তী অধ্যায়ে নাম লেখাতে হলে চূড়ান্ত প্রস্তুত থাকতে হয়—তা শুধু আবেগ দিয়ে হয় না।উল্লেখ্য, ‘সইয়ারা’-র ট্রেলারে মুগ্ধ হয়েছেন স্বয়ং ‘আশিকি ২’-র জুটি আদিত্য ও শ্রদ্ধা।

 

তাহলে কি মোহিত সুরি-র ‘আশিকি অধ্যায়’ এখানেই শেষ? নাকি অপেক্ষা করছে এক নতুন মোড়? তিনি নিজেই বলেছেন—“চাই ঠিক গল্প, শুধু আবেগ নয়।” কিন্তু প্রশ্ন থাকছেই—এই গল্পটা যদি একদিন আসে, তখন কি প্রযোজকরা তাঁকে ডাকবেন?