সংবাদ সংস্থা মুম্বই: আবার শোকস্তব্ধ বলিউড। মাত্র ৪২ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছে ‘কাঁটা লাগা’ গানের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাওয়া অভিনেত্রী শেফালি জরিওয়ালা-র। গত ২৭ জুন -এর রাতে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর, প্রাথমিকভাবে এমনটাই জানা গিয়েছিল। তবে এখন জানা যাচ্ছে, মৃত্যুর আসল কারণ এখনও অস্পষ্ট, এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ‘রিজার্ভড’ রাখা হয়েছে—যার ফলে তৈরি হয়েছে রহস্য।
পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, রাত ১১টা ১৫ মিনিট নাগাদ শেফালিকে মুম্বইয়ের বেলভিউ মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর স্বামী পরাগ ত্যাগী (৪৯)। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, শেফালি তখনই মৃত ছিলেন— যাকে বলে ‘Dead on Arrival’। এরপর রাতেই তাঁর দেহ পাঠানো হয় কুপার হাসপাতালে, যেখানে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
তদন্তে উঠে এল নতুন তথ্য - ময়নাতদন্ত হয়েছে ভিলে পার্লে ওয়েস্টের কুপার হাসপাতালে, এবং তা ভিডিওগ্রাফ করা হয়, যা সাধারণত স্পর্শকাতর কেসে নিয়মের অংশ। তবে আশ্চর্যের বিষয়, ময়নাতদন্ত রিপোর্টের অভিমত 'রিজার্ভড' রাখা হয়েছে, অর্থাৎ মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
চিকিৎসকরা এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি। রক্ত ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি, কিন্তু তদন্ত চলছে। একটি অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ রিপোর্ট (ADR) ফাইল করা হয়েছে। মুম্বইয়ের এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শেফালি দীর্ঘদিন ধরে মৃগী রোগে ভুগছিলেন, এবং তিনি কিছু অ্যান্টি-এজিং ওষুধও নিচ্ছিলেন। এই দুই বিষয় কি মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত? তা এখনও নিশ্চিত নয়।
শেফালি জরিওয়ালা ও পরাগ ত্যাগী লোখাণ্ডওলার শাস্ত্রী নগরের গোল্ডেন রেইস-ওয়াই বিল্ডিং-এর ১১ তলায় থাকতেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল এবং মোবাইল ফরেনসিক টিম তাঁদের ফ্ল্যাটে পৌঁছায়। ইতিমধ্যেই ৮ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছেন পরাগ এবং বাড়ির পরিচারকেরা। জোন ৯-এর ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ দীক্ষিত গেদাম জানিয়েছেন -“ময়নাতদন্তের রিপোর্ট রিজার্ভড রাখা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”
২০০২ সালে ‘কাঁটা লাগা’ গানে অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শেফালি জরিওয়ালা। পরবর্তীতে বিগ বস ১৩-এ অংশ নিয়ে ফের লাইমলাইটে আসেন। জীবনের নানা পর্বে আলোচিত হলেও তাঁর এই হঠাৎ চলে যাওয়া বলিউডের হৃদয়ে এক গভীর শূন্যতা তৈরি করল। এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। ময়নাতদন্তের অভিমত ‘রিজার্ভড’—মানে মৃত্যুর কারণ প্রকাশযোগ্য অবস্থায় নেই। আদৌ তা স্বাভাবিক মৃত্যু, না কি কোনও ওষুধ বা অসুস্থতার প্রতিক্রিয়া—তা জানার জন্য এখন অপেক্ষা ফরেন্সিক রিপোর্টের।
