বলিউডের তারকা হওয়ার বহু আগেই সলমন খানের জীবনে নেমে এসেছিল এমন এক ঝড়, যা বদলে দিয়েছিল তাঁর পুরো পরিবারকে। বয়স তখন মাত্র দশ। সেই বয়সেই তাঁকে বুঝতে হয়েছিল, বাবা সেলিম খান হেলেনের প্রেমে পড়েছেন, এবং বিয়ে করবেন তাঁকে।
১৯৯০ সালের একটি পুরোনো সাক্ষাৎকারে সালমান এই ব্যক্তিগত অধ্যায় খুলে বলেছিলেন অকপটে। সলমন বলেন, “ছোট থেকেই আমি মায়ের খুব কাছের। মা দুঃখ পাচ্ছে, সহ্যই করতে পারতাম না। বাবা যখন আবার বিয়ে করলেন, মা ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলেন। বাবার ফেরার অপেক্ষায় তাঁকে বসে থাকতে দেখলে আমার খুব খারাপ লাগত।”
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বদলে যায়, সেলিম সাহেবের আন্তরিকতা। সন্তানদের তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, এই বিয়ের দরুণ কিছুই বদলাবে না। “বাবা বলেছিলেন, তিনি এখনও মাকে ভালবাসেন, সবসময় পাশে থাকবেন। তখন আমার বয়স দশ, হেলেন আন্টিকে মেনে নিতে আমাদের সময় লেগেছে। কিন্তু আজ তিনি পরিবারের অঙ্গ। আমাদের পরিবার এক মুষ্টিবদ্ধ হাতের সব আঙ্গুলের মতো একসঙ্গে রয়েছে!” বলেছিলেন সলমন।
অন্যদিকে, হেলেনও লড়াই করছিলেন নিজের ভেতরে চলা অপরাধবোধের সঙ্গে। এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “সেলিম বিবাহিত-এই বিষয়টা আমাকে প্রথমে খুবই অস্বস্তিতে ফেলেছিল। আমি নিজেকেই দোষী মনে করতাম। কিন্তু সেলিমের মধ্যে একটা আলাদা ব্যক্তিত্ব ছিল। সম্মান দিতে জানেন তিনি। কোনওদিনই আমার থেকে কোনওরকম সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা না করে তিনি আমাকে সাহায্য করেছিলেন।”
হেলেন জানান, তাঁদের যোগাযোগ বেড়ে ওঠে ‘ডন’ ছবির সময় থেকেই, যে ছবিতে জন্ম নেয় চিরকালীন কালজয়ী গান “ইয়ে মেরা দিল ইয়ার কা দিওয়ানা”। সেলিম খান স্মৃতিচারণায় বলেন, “শুটিং শেষে হেলেন কখনও কখনও আসতেন। আমরা একসঙ্গে বসে কথা বলতাম, একটু মদ্যপান করতাম। তারপর তিনি চলে যেতেন।” পরে যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কীভাবে প্রেম জন্মাল, তিনি প্রশ্নকর্তাকে শুধু বলেছিলেন, “যদি কোনওদিন প্রেমে পড়েন, তখন আপনি এর জবাবটা নিজেই পেয়ে যাবেন।”
সলমন বহুবার বলেছেন, পরিবারে প্রকৃত শান্তি আসে তখনই, যখন তাঁর মা সালমা পুরো হৃদয় দিয়ে হেলেনকে গ্রহণ করেন। এক কথায়, যে পরিবার ভেঙে যাচ্ছিল, তাতে সেলাই লাগল সলমার গ্রহণযোগ্যতায়। তারপর থেকেই দু’টি পরিবার এক হয়ে যায়। আজ হেলেন শুধু ‘হেলেন আন্টি’ নন, তিনি খান পরিবারের অভিন্ন সদস্য। সেলিম-সলমার ৬১তম বিবাহবার্ষিকীতেও তিনি ছিলেন পরিবারের সঙ্গে, হাসিমুখে।
