সংবাদ সংস্থা মুম্বই: গুরু দত্তের জন্মশতবর্ষে যেন নতুন করে জীবন্ত হয়ে উঠছে ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক যুগ। তাঁর সৃষ্ট ছবিগুলি আজও পড়ানো হয় ফিল্ম স্কুলে, দেখা হয় ইউরোপের ক্ষুদ্র প্রেক্ষাগৃহে। টিনার জন্মশতবার্ষিকীতে গুরু দত্ত-কে গভীর ভালবাসায় স্মরণ করলেন সেই যুগের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ওয়াহিদা রহমান।
‘পিয়াসা’, ‘কাগজ কে ফুল’, ‘চৌধবি কা চাঁদ’, ‘সাহেব বিবি অউর গুলাম’— সব ছবিই তাঁকে নিয়ে গড়া। গুরুর নির্দেশনায় ওয়াহিদার তারকা হয়ে ওঠার পথচলার নীরব সাক্ষী। “আমি তখন ১৭ বছর। কেউ জানত না, এমনকি উনি নিজেও না যে এত বড় বড় ছবি বানাবেন,” বললেন ওয়াহিদা।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ওয়াহিদার গলা জড়ানো কণ্ঠে শুধুই কৃতজ্ঞতা—“আমি কতটা ভাগ্যবতী যে এই ছবিগুলোর অংশ হতে পেরেছিলাম! আজও মানুষ পিয়াসার কথা বলেন। সেটাই আমার প্রিয়।” তিনি জানান, গুরু দত্ত কেবলমাত্র এক দূরদর্শী ছিলেন না, একজন সংবেদনশীল ও সহানুভূতিশীল পরিচালক-ও ছিলেন। “একবার আমি একটা দৃশ্যে চিৎকার করতে পারছিলাম না। উনি মজা করে বললেন, ‘১৭ বছর বয়সি মেয়েরা তো সামান্য কিছুতেই চেঁচায়!’ কিন্তু তারপর তিনি পুরো দৃশ্যটাই আমার সুবিধা অনুযায়ী বদলে দেন।”
আরও একটি গল্প ওয়াহিদার গলায় ছিল চিরস্মরণীয়—“একবার চৌধবি কা চাঁদ-এর গানটি তিনি কালো-সাদা থেকে রঙিন করে ফের সিনেমায় জুড়ে দেন, ছবিটা তখন চলছিল। কারণ তখন রঙিন ছবি শুরু হয়েছে। মানুষ ফের সিনেমা হলে ফিরে গিয়েছিল শুধু ওই রঙিন গানের জন্য।”
সাম্প্রতিক গুঞ্জন উঠেছে গুরু দত্তের জীবনী নিয়ে ছবি হতে চলেছে, যেখানে ভিকি কৌশল অভিনয় করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। ওয়াহিদার মতে, এই চরিত্রে সবচেয়ে ভাল মানাবে পঙ্কজ ত্রিপাঠী, নাসিরউদ্দিন শাহ বা পঙ্কজ কাপুরকে—“ওঁদের মুখে আর কাজে পরিণত বয়সের ছাপ আছে, যেটা গুরু দত্তের চরিত্রের জন্য দরকার।”
অবশেষে, ওয়াহিদা রহমান মনে করিয়ে দেন—গুরু দত্ত ছিলেন এমন একজন নির্মাতা, যাঁর কাজ সময় পেরিয়ে আজও প্রাসঙ্গিক, শ্রদ্ধেয়, অনুপ্রেরণাদায়ক।
