জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো বিগ বস ১৯–এ ফের নাটকীয়তা। অন্যতম চর্চিত প্রতিযোগী কুনিকা সদনন্দ সর্বনিম্ন ভোট পাওয়ার কারণে ঘরছাড়া হওয়ার তালিকায় সবার উপরে ছিলেন। এমনকী সঞ্চালক সলমন খান প্রথমে তাঁর 'এলিমিনেশন'-এর ঘোষণাও করেন। কিন্তু ঠিক সেই সময়েই শো–এর নির্মাতারা দেখালেন নতুন মোড়।
“অ্যাপ রুম”–এর বিশেষ একটি টুইস্টে কুনিকা পেলেন নিজেকে বাঁচানোর সুযোগ। যা ব্যবহার করেই তিনি টিকে যান। ফলে এই সপ্তাহে কোনও প্রতিযোগীকেই বিগ বসের ঘর ছাড়তে হয়নি।
এদিকে কম ভোট পাওয়ার পরও কুনিকা বিগ বস-এ থেকে যাওয়ায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দর্শকদের দাবি, “নির্মাতারা ইচ্ছে করেই কুনিকাকে বাঁচাচ্ছেন।” ‘পক্ষপাতিত্ব’-এর অভিযোগ তুলেছেন নেটাগরিকদের একাংশ। যেমন এক নেটপাড়ার বাসিন্দা লিখেছেন, “এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে নির্মাতাদের নতুন নতুন টুইস্ট আনতেই হবে ওনাকে বাঁচাতে। তবে অন্তত এতটা স্পষ্ট না করলেই ভাল হতো।” অনেক দর্শকের মতে, সলমন খান অযথাই কুনিকার হয়ে সওয়াল করছেন। অন্যদিকে, নির্মাতারা ‘ড্রামা’ তৈরি করতে গিয়েই ‘পক্ষপাতিত্ব’ করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, ‘বিগ বস’-এ এন্ট্রির দিন থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কুনিকা সদানন্দ। কারণ সঞ্চালক সলমন খান মঞ্চেই জানিয়ে দিলেন, তিনি বহু বছর ধরে কণিকাকে চেনেন। ভাইজানের সঙ্গে তাঁকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া’ এবং ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’–এর মতো ছবিতে। তবে আলোচনায় যেমন তাঁর অভিনয়জীবন, তেমনই বারবার শিরোনামে এসেছে তাঁর ব্যক্তিজীবনের উত্থান–পতন।
প্রসঙ্গত, দিল্লি থেকে কণিকার অভিনয়যাত্রা শুরু। প্রথম বড় সুযোগ পান আসরানির স্ত্রীর হাত ধরে। ছোটপর্দায় স্বাভিমান–এ ১৮ বছরের সন্তানের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে নজর কাড়েন। পরে বলিউডে পা রেখে খলনায়িকা ও সাহসী চরিত্রে নিজের আলাদা জায়গা তৈরি করেন। ‘বেটা’, ‘গুমরাহ’, ‘খিলাড়ি’—সবখানেই ছিল তাঁর উপস্থিতি। তবে দর্শকের মনে আজও তিনি অমলিন রাজশ্রীর সুপারহিট ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’–এ রীমা লাগুর বন্ধু ‘শান্তি’ হয়ে। দীর্ঘ ২৫ বছরের কেরিয়ারে ১১০টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি।
নয়ের দশকে কুনিক্কার ব্যক্তিজীবন মিডিয়ায় শোরগোল ফেলে দেয়। জনপ্রিয় গায়ক কুমার শানু–র সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়। সেই সময়ে শানুর দাম্পত্য ভাঙনের মুখে ছিল, আর কণিকাই হয়ে উঠেছিলেন তাঁর মানসিক ভরসা। তিনি শুধু শানুর সঙ্গীই ছিলেন না, বরং শানুর আর্থিক হিসেব–নিকেশ থেকে শুরু করে পারিবারিক দায়িত্ব—সব কিছুর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে কণিকা নিজেই স্বীকার করেছিলেন, “আমি তাঁর কাছে স্ত্রী–এর মতোই ছিলাম। তাঁকে আমার স্বামী বলে মনে করতাম।”পাঁচ বছর ধরে এই সম্পর্ক টিকে থাকলেও পরিণতি হয়নি সুখকর। শানুর স্ত্রী রীতা ক্ষুব্ধ হয়ে একবার কণিকার গাড়ি ভাঙচুরও করেছিলেন। সেই অশান্তিই শেষ পর্যন্ত দূরত্ব তৈরি করে দেয়। কণিকা–শানুর সম্পর্ক ইতি পড়ে।
