গান হোক বা নাচ, অভিনয় থেকে 'বোল্ড' ফ্যাশন, সর্বক্ষেত্রে পারদর্শী নেহা ভাসিন। কখনও বলি ইন্ডাস্ট্রির গায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আবার কখনও পোশাক নিয়ে বিতর্ক, বারে বারে শিরোনামে উঠে এসেছেন গায়িকা। আর এবার ফের আলোচনার কেন্দ্রে তিনি। তবে গান বা অন্য কোনও বিতর্কে নয়, সম্প্রতি নিজের ব্যক্তিগত জীবনের এক সিদ্ধান্ত নিয়ে খোলাখুলি মনের কথা বলেন নেহা। 
  

বিয়ের বহু বছর পরও নিঃসন্তান নেহা ভাসিন। এবিষয়েই গায়িকা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি ও তাঁর স্বামী সমিরুদ্দিন যৌথভাবে সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নেহার কথায়, “এটি কোনও পরিস্থিতির চাপে নেওয়া সিদ্ধান্ত নয়, বরং সম্পূর্ণভাবে একটি ব্যক্তিগত ও সচেতন পছন্দ।”

নেহা বলেন, সমাজে সাধারণভাবে মনে করা হয় বিয়ের পর সন্তান হওয়াই জীবনের পরবর্তী ধাপ। কিন্তু তিনি সেই ধারনায় বিশ্বাসী নন। তাঁর মতে, জীবনের অর্থ বা পূর্ণতা শুধু সন্তান জন্ম দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। একজন মানুষ নিজের কাজ, সৃজনশীলতা, সম্পর্ক ও ভালবাসার মাধ্যমেও জীবনে গভীর ছাপ ফেলতে পারেন।

সাক্ষাৎকারে নেহা আরও জানান, তিনি এবং তাঁর স্বামী দু’জনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে একমত। তাঁদের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে কখনও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়নি। গায়িকা বলেন, “আমরা দু’জনেই জানতাম, আমরা কী চাই এবং কী চাই না। এই বোঝাপড়াটাই আমাদের সম্পর্ককে মজবুত করেছে।”

নেহা ‘লিগ্যাসি’ বা উত্তরাধিকার প্রসঙ্গেও নিজের মতামত তুলে ধরেন। তাঁর মতে, উত্তরাধিকার মানেই শুধুমাত্র বায়োলজিক্যাল সন্তান নয়। একজন শিল্পীর কাজ, গান, মানুষের সঙ্গে তৈরি করা সম্পর্ক এবং সমাজে তাঁর প্রভাব-এই সবকিছুও ‘লিগ্যাসি’র অংশ হতে পারে। তাঁর বিশ্বাস, মানুষের ভাল কাজ ও সৃষ্টিই আসল পরিচয় হয়ে থাকে।

নেহা স্বীকার করেছেন, এই সিদ্ধান্তের জন্য তাঁকে সমাজের নানা প্রশ্ন ও কৌতূহলের মুখে পড়তে হয়। তিনি মনে করেন, প্রত্যেক মানুষের জীবন আলাদা এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও একান্ত ব্যক্তিগত। অন্যের প্রত্যাশা পূরণ করতে গিয়ে নিজের ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, এই সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই সন্তান নেওয়ার বিপক্ষে প্রচার নয়। যাঁরা বাবা-মা হতে চান, তাঁদের সিদ্ধান্তও সমানভাবে সম্মানযোগ্য। আসল কথা হল, যে যেভাবে সুখী ও শান্তিতে থাকতে পারেন, সেই পথটাই তাঁর জন্য সঠিক।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে ‘ফ্যাশন’ ছবিতে গান করে শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নেন নেহা ভাসিন। প্রথম গান গাওয়ার পরেই বেশ নামডাক হয়ে যায় তাঁর। তারপর ‘মেরে ব্রাদার কি দুলহন’, ‘সুলতান’, ‘গুন্ডে’, ‘নীরজা’, ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর মতো একের পর এক হিন্দি ছবিতে গান গেয়েছেন নেহা। হিন্দির পাশাপাশি গান গেয়েছেন তামিল, তেলুগু, পঞ্জাবি ভাষাতেও।