বলিউডের ইতিহাসে এমন দুই তারকার নাম এক নিঃশ্বাসে উচ্চারিত হয়— অমিতাভ বচ্চন আর রাজেশ খন্না। একজনকে বলা হয়েছিলেন ‘হিন্দি সিনেমার প্রথম সুপারস্টার’, অন্যজন হয়ে উঠেছিলেন ‘শাহেনশাহ’। এই দুই কিংবদন্তিকে নিয়েই মুখ খোলার পাশাপাশি অমিতাভের স্বভাব, ব্যক্তিত্ব নিয়েও নিজের খোলামেলা বিস্ফোরক মতামত জানিয়েছিলেন বর্ষীয়ান জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর খোলামেলা মন্তব্যে স্বভাবতই সরগরম হয়েছিল সিনেমাপাড়া। জানিয়ে রাখা ভাল ‘মঞ্জিল’, ‘রোটি কপড়া ঔর মকান’, ‘পিকু’-র মতো একাধিক আলোচিত ছবিতে অমিতাভের সঙ্গে কাজ করেছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
কোনও রাখঢাক না রেখে স্পষ্ট করে মৌসুমী বলেছিলেন— “অমিতাভ সব সময় যেন অভিনয় করে চলেছেন। একটা শো। ক্যামেরার সামনে যেমন, ক্যামেরার বাইরে ঠিক তেমনই। তিনি সব সময় জানেন, কীভাবে সঠিক শব্দ বেছে নিতে হয়, কীভাবে ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’ থাকতে হয়। আর সেটা দেখেই ওর জন্য বড় মায়া হয় আমার। অবশ্য এটাই ওঁর বড় শক্তি। ”

অমিতাভের সম্পর্কে মৌসুমীর মূল্যায়ন এখানেই থেমে যায়নি। রাজেশ খান্নার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও যোগ করেছেন—“রাজেশ খন্না আর অমিতাভের মধ্যে ফারাক অনেকটা যেন এক নিরক্ষর গুন্ডা আর এক শিক্ষিত গুন্ডার পার্থক্যের মতো। অমিতাভ অত্যন্ত বুদ্ধিমান, হিসেবি। রাজেশ ছিলেন আবেগী, যে সবসময় আদর-যত্ন চাইত। গুণকীর্তন করা চামচে দ্বারা ঘিরে থাকতে পছন্দ করতেন। অমিতাভ সেসবের থেকে শতহস্ত দূরে।” এই মন্তব্যে স্পষ্ট, মৌসুমীর চোখে অমিতাভ একেবারেই এক অন্য ধরণের তারকা— যিনি সাফল্যের শীর্ষে থেকেও কৌশল, বুদ্ধি আর আত্মনিয়ন্ত্রণে অপরাজেয়।
বলিউডের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, অমিতাভের ক্যারিশমার রহস্য কেবল অভিনয়ে নয়, তাঁর ব্যক্তিত্বেও। এই বর্ষীয়ান বাঙালি অভিনেত্রীর র বক্তব্য সেই দিকটাই আরও একবার সামনে নিয়ে এল— “ অমিতাভ বচ্চনকে দেখে মনে হয়, তিনি সব সময় যেন একটা চরিত্রের মধ্যে নিজেকে ঢুকিয়ে রেখেছেন। রাস্তায় হোক বা সাংবাদিকের প্রশ্নে, কোথাওই ওঁকে অপ্রস্তুত করে ফেলা যায় না। সেটাই অমিতাভ বচ্চনকে আলাদা করে তোলে।”
স্বভাবতই মৌসুমীর এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আরব সাগরের পাড়ের নগরে হিন্দোল তুলেছিল। অনেকে একে ‘খোঁচা’ বলছেন, কেউ আবার এটিকে অমিতাভের প্রশংসার বিশেষ ভঙ্গি হিসেবেই দেখছেন। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট— অমিতাভ বচ্চন আজও শুধু অভিনেতা নন, তিনি নিজেই এক জীবন্ত কিংবদন্তি, আর তাঁকে ঘিরে বিতর্ক, রহস্য, আলোচনাও থেমে থাকে না।
