কাজ নিয়ে চর্চা হোক বা না হোক, রূপ নিয়ে কাটাছেঁড়া চালানোর ‘অভিযোগ’-এ প্রায়ই শিরোনামে উঠে আসেন মৌনী রায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভীষণ সক্রিয় বঙ্গললনা। কখনও কাজের আপডেট, কখনও ভ্রমণের ঝলক, আবার কখনও ব্যক্তিগত জীবনের কিছু মুহূর্ত—সবকিছুই তিনি খোলাখুলি ভাগ করে নিতে ভালোবাসেন। ভক্তদের সঙ্গে আলাপচারিতায়ও তাঁকে প্রায়শই দেখা যায়। তবে শুক্রবার ঘটল অপ্রিয় এক ঘটনা—নিজের এক পোস্টের কমেন্ট সেকশনে ঢুকে রূপ নিয়ে করা একটি কুরুচিকর মন্তব্যের জবাব দিলেন যথেষ্ট কড়া ভঙ্গিতে। তাঁর এই প্রতিক্রিয়ায় ভক্তরা যেমন অবাক হয়েছেন, তেমনই প্রশংসাও করেছেন নায়িকার আত্মবিশ্বাসী মনোভাবের।
সম্প্রতি রায় নিজের কিছু ছবি নিয়ে একটি ক্যারোসেল পোস্ট করেছিলেন ইনস্টাগ্রামে। স্বাভাবিকভাবেই ভক্তরা তা ভালোবেসে ভরিয়ে দেন হাজারো লাইক এবং প্রশংসার মন্তব্যে। কিন্তু এর মাঝেই কটাক্ষ তাঁর পথ ভোলেনি। একজন লেখেন— “সত্যিটা সব সময়ই তিক্ত! সেটা গিলেই নিতে হয়, সে আপনি যে-ই হও না কেন! আপনার সার্জারিগুলো আপনাকে খুব খারাপ অবস্থায় এনে দিয়েছে। যেহেতু আপনি একজন পাবলিক ফিগার, ভাল-মন্দ সব মন্তব্যই মেনে নিতে হবে। বেশিরভাগ সময় মন্দটাই বেশি আসে! আপনার উচিত ছিল আরও ভাল সার্জন বেছে নেওয়া।”
এই মন্তব্য সরাসরি ইঙ্গিত করেছিল সেই গুজবের দিকে, যেখানে দাবি করা হয় মৌনী নাকি মুখে কসমেটিক সার্জারি করিয়েছেন। অভিনেত্রী যদিও একাধিক সাক্ষাৎকারে দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবুও জল্পনা থামছে না, বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে সামনে আসছে।
মৌনী তবে নীরব থাকেননি। ট্রোলের সেই কটূ মন্তব্যের জবাব দিতে তিনি সরাসরি লিখলেন— “নিজের জীবনে কিছু মূল্যবান কাজ করুন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আসুন ভালোবাসা বিলোতে আর নিজের কাজ নিয়ে কথা বলতে। নাহলে এর আর কোনো মূল্য নেই। আপনি জানলে, আপনি জানবেনই।”
তার এই উত্তরে বোঝা গেল, সমালোচনাকে তিনি গুরুত্ব না দিয়ে বরং ইতিবাচকতা ছড়ানোর বার্তাই দিতে চাইছেন। ভক্তরাও তাঁর এই আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিমার প্রশংসা করেছেন।
মৌনীর জবাব পাওয়ার পর অনেক ভক্তই তাঁকে প্রশংসা এবং সমর্থন জানিয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যেই মূল কুরুচিকর মন্তব্যটি মুছে ফেলা হয়। তবে তার আগেই সেই মন্তব্যের স্ক্রিনশট এবং মৌনীর প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে অন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। ফলে ঘটনাটি আরও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
মৌনীর নাম বারবার জড়িয়েছে কসমেটিক সার্জারি বিতর্কে। বহুবারই গুঞ্জন উঠেছে যে তিনি নাকি মুখের গঠন বদলাতে এবং সৌন্দর্য বাড়াতে একাধিকবার সার্জারি করিয়েছেন। বিশেষত চোখ, নাক এবং ঠোঁটের পরিবর্তন নিয়ে নানা মহলে আলোচনা হয়েছে। যদিও মৌনী নিজে এসব অভিযোগকে সবসময় অস্বীকার করেছেন। এবং বলেছেন যে, তাঁর চেহারার পরিবর্তন শুধুমাত্র মেকআপ, লাইটিং এবং সময়ের সঙ্গে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ফল। তবুও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই জল্পনা-কল্পনা থামেনি। বরং মাঝেমাঝেই নতুন করে উস্কে ওঠে।
মৌনী টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র—দুই ক্ষেত্রেই সমান সফলভাবে কাজ করে নিজের আলাদা পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। ছোটপর্দায় তিনি প্রথম জনপ্রিয়তা পান ধারাবাহিক ‘কিউকি সাস ভি কভি বহু থি’–তে অভিনয়ের মাধ্যমে। তবে আসল খ্যাতি আসে ‘নাগিন’ সিরিজ থেকে, যা তাঁকে ঘরে ঘরে পরিচিত নাম করে তোলে। টেলিভিশনের পাশাপাশি তিনি বলিউডেও নিজের অবস্থান মজবুত করেছেন। অক্ষয় কুমারের বিপরীতে ‘গোল্ড’–এ অভিনয় করে তিনি সমালোচকদের প্রশংসা পান, পরবর্তীতে ‘মেড ইন চায়না’, ‘রোমিও আকবর ওয়াল্টার’ এবং সাম্প্রতিক ‘ব্রহ্মাস্ত্র’–এ তাঁর অভিনয় বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। অভিনয়ের পাশাপাশি মৌনী নাচ এবং ফ্যাশনের জগতেও সক্রিয়, যা তাঁকে বহুমাত্রিক শিল্পী হিসাবে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে।
