সংবাদ সংস্থা মুম্বই: অভিনেত্রী, ফিটনেস আইকন, সফল ব্যবসায়ী—এই তিনটি পরিচয় জুড়ে থাকলেও, শিল্পা শেট্টি কুন্দ্রার জীবনের আসল দুই পরিচয়? ছেলে ভিয়ান আর মেয়ে সামিশা। আর এই দুই ‘ভালোবাসা’ আর কাজের ব্যালান্স রাখা একেবারে স্বাভাবিক বলেই মনে করেন তিনি। মা দিবসে একেবারে স্পষ্ট স্বীকারোক্তি তাঁর, “আমি তো একজন নারী—এই সামলানোটা আমাদের মধ্যে সহজাত!”

 

উদুপির স্বাদে ভরপুর নতুন রেস্তোরাঁ লঞ্চের তোড়জোড়ের মাঝেও মায়ের ভূমিকায় একটুও খামতি রাখেন না শিল্পা। বলেন, “আমার টিমে ৯৫ শতাংশই মহিলা। ওরা খুব ভালো বোঝে কোন সময়টা আমার পরিবারের জন্য দরকার, আর কীভাবে কাজের পাশাপাশি পরিবারকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। এককথায় কাজ ও পরিবারকে ভারসাম্য করে চলতে  হবে। তাই আমার কাজও ভোগে না, ছেলেমেয়েরাও নয়!”

 

২০১২ সালে ছেলে ভিয়ানকে কোলে নেওয়ার পর জীবন একেবারে বদলে যায় শিল্পার। আর এই বছর ২১ মে-তে ভিয়ান ঢুকছে টিনএজে! “আজ আমার হাতে ২০-২১টা ব্র্যান্ড, অনেক ইভেন্ট থাকে। ওয়েলনেস আর মোটিভেশনাল প্রোগ্রামেও যোগ দিই। সব কিছুরই আলাদা করে মনোযোগ লাগে। আমি চেষ্টা করি লম্বা শুট না রাখতে। আর যদি করতেও হয়, সপ্তাহান্তে ছেলেমেয়েরা আমার সঙ্গে সেটে আসে। সামিশা তো এখনও ছোট—মাত্র পাঁচ। মা হিসেবে ওর প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হতে হয়,” জানালেন শিল্পা।

 

মা দিবসে আজ তাঁর সবচেয়ে বেশি অপেক্ষা ছোট্ট সামিশার হাতে বানানো কার্ড আর বড় ছেলে ভিয়ানের আন্তরিক বার্তার জন্য। খোলা গলায় বললেন, “অভিনেত্রী হওয়াটা আমার পরিচয়, কিন্তু মা হওয়াটা আমার অহংকার! মা হওয়া মানে যেন নিজের হৃদয়টাই শরীরের বাইরে নিয়ে ঘোরাফেরা করা।”

 


নিজের প্রথম সন্তান জন্মানোর পর কীভাবে জীবনের অগ্রাধিকার বদলে গিয়েছিল, সেই কথাও ভাগ করে নিলেন তিনি। “আমি হয়তো সেরা অভিনেত্রী নই, কিন্তু আমি খুব পরিশ্রমী। মা হওয়ার জার্নিটাও শিখেছি কাজ করতে করতেই। মা হওয়ার পর বুঝেছি, কীভাবে ধাপে ধাপে শেখা যায়। যেমন অভিনয় শিখেছি কাজ করতে করেই, তেমনই মা হওয়ার দায়িত্বও শেখা হয়েছে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে। আমি হয়তো সেরা অভিনেত্রী নই, কিন্তু আমি খুব খেটেখুটে নিজের জায়গা বানিয়েছি। মনে আছে, ভিয়ান আড়াই বছর বয়সে একবার খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, আমি সব কাজ বন্ধ করে ওর পাশে ছিলাম। আর সবাই তখন বুঝেছিল, একজন মায়ের অবস্থান কতটা গুরুত্বপূর্ণ!”

 

শিল্পা এটাও মনে করিয়ে দিলেন, যে আজকের দিনে অনেক পেশায় মাতৃত্বকালীন ছুটির প্রথা চালু হয়েছে। “কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ না করলে পারিশ্রমিকও নেই। ভিয়ান হওয়ার পর প্রায় সাত বছর আমি বড় কোনও কাজ করিনি। এটা খুব সচেতন একটা সিদ্ধান্ত ছিল। তিন বছর পর টিভিতে ফিরি। আমার গুরু বলেছিলেন—ছেলের জীবনের প্রথম সাতটা বছর সবচেয়ে বেশি দরকারি। সেই কথাই মনে রেখেছিলাম,” বললেন তিনি।