সালটা ২০২২। সে বছর আগস্ট মাসে নিউ ইয়র্কের চাউটাউকুয়া ইন্সটিটিউশনে ভাষণ দিতে গিয়েছিলেন রুশদি। মঞ্চে এই সাহিত্যিক উঠতেই তাঁর দিকে ধারালো ছুরি হাতে তেড়ে যায় এক ব্যক্তি। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে রুশদির উপর উপর্যুপরি ছুরির আঘাত করে ওই ব্যক্তি। সঙ্গে কিল-চড়ও! গোটা বিশ্ব শিউরে উঠেছিল বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিক সলমন রুশদির উপরে হওয়া হামলার ভিডিও দেখে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রবীণ সাহিত্যিক সলমন রুশদির উপরে ছুরি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আততায়ী। চলে এলোপাথাড়ি ছুরির আঘাত। রক্তাক্ত হয়েছিলেন ভুবনখ্যাত সাহিত্যিক। ভেন্টিলেশনে ছিলেন। পরে সুস্থ হয়ে ছাড়া পেলেও এক চোখের দৃষ্টি চিরতরে হারিয়েছেন রুশদি।  তবে মনের জোর হারাননি এক ছটাকও। নিজের সেই দুঃসহ স্মৃতির আখ্যানই লিখে ফেললেন দুমলাটের মধ্যে। বইয়ের নাম ‘নাইফ: মেডিটেশনস আফটার অ্যান অ্যাটেম্পটেড মার্ডার’। এই বই প্রসঙ্গে এক বিবৃতি প্রকাশ করে রুশদি বলেছিলেন, “এই বইটা লেখা আমার জন্য জরুরি ছিল। যা ঘটেছে সেই হিংসার উত্তর শিল্পের মাধ্যমে দেওয়া দরকার ছিল।” 


২০২৪ সালে প্রকাশ পেতেই হটকেকের মতো বিক্রি হতে থাকে ‘নাইফ। পাঠক ও সমালোচক দু’মহলেই দারুণ জনপ্রিয় হয় সেই বই।  এবার রুশদির লেখা সেই বইয়েরই নাট্যরূপ দিতে চলেছেন কৌশিক সেন। তাঁদের স্বপ্নসন্ধানী নাট্যদলের আগামী প্রযোজনা হবে ‘নাইফ’।  চলতি বছর নভেম্বরেই মঞ্চস্থ হবে সেই নাটক। জোর খবর, এই নাটকে সলমন রুশদির ভূমিকায় অভিনয় করবেন নাসিরুদ্দিন শাহ! গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকছেন খোদ কৌশিক এবং ঋদ্ধি সেন।  

 

আজকাল ডট ইন-কে ঋদ্ধি বললেন, “হ্যাঁ, নাসির সাহেবের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক একপ্রকার পারিবারিক। আমাদের বাড়িতেও এসেছেন উনি। আমার অভিনীত ছবি নগরকীর্তন দেখেছিলেন উনি। স্বপ্নসন্ধানীর হ্যামলেট-এর প্রথম শো-এর ও দর্শক ছিলেন নাসির স্যার। সে নাটকের পর্যালোচনাও করেছিলেন, লিখেছিলেন। তারপরে যখনই কলকাতায় এসেছেন, দেখা হয়। আমরা যখন মুম্বই যাই, তখনও ওঁর সঙ্গে দেখা করি। এককথায়, আমরা সবাই ওঁর গুণমুগ্ধ। তবে এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি। কথাবার্তা চলছে। বিষয়টা ওঁর ভাল লেগেছে। স্ক্রিপ্ট নিয়ে আলোচনা চলছে।”

 


তবে এখানেই চমকের শেষ নয়। এই নাটক প্যান-ইন্ডিয়া হতে চলেছে। ঋদ্ধির কথায়, “হ্যাঁ, এখনও পর্যন্ত আমরা প্যান-ইন্ডিয়া প্রযোজনা হিসেবেই পরিকল্পনা করেছি। সেইমতো ভাবনা চলছে। কলকাতা সহ দিল্লি, মুম্বই - দেশের একাধিক রাজ্যে এই নাটক মঞ্চস্থ করা হবে। আর নাইফ -এর এই দলটাও হবে ন্যাশনাল কোলাবোরেশন। অর্থাৎ, অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসবেন।”    

 

আর রুশদি? তিনি কিছু বলেছেন এ বিষয়ে? নগরকীর্তন অভিনেতার কথায়, “এখনও পর্যন্ত হয়নি। তবে আলাপ-আলোচনা আদান-প্রদানের একটা ব্যাপার তো তৈরি হবেই যখন এই নাটকটির বিষয়ে আমরা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করব।”