বরাবরই বিতর্কে জড়িয়ে থাকেন জাভেদ আখতার। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মন্তব্যকে ঘিরে সমাজমাধ্যমে চর্চা শুরু হয়। যদিও মুখ বুজে থাকেন না তিনিও। পাল্টা জবাবে তিনিও আগুন ছড়ান নেটপাড়ায়। সম্প্রতি, ফের বিতর্কে জড়িয়েছেন জাভেদ আখতার।
ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন বার্তা দেন বর্ষীয়ান গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার। তিনি লেখেন, স্বাধীনতা এত সহজে পাওয়া যায়নি। অসংখ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী কারাগারে, কালা পানির অন্ধকার সেলে বা ফাঁসির মঞ্চে প্রাণ দিয়েছেন দেশের মুক্তির জন্য। সেই স্মৃতিকে শ্রদ্ধা জানাতেই তাঁর পোস্ট।
কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের দিনেই তাঁকে বিদ্রূপের মুখে পড়তে হয়। এক নেটিজেন কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন, “আপনার তো ১৪ অগস্টে স্বাধীনতা দিবস পালন করা উচিৎ।” এই মন্তব্য স্পষ্টতই পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসকে ইঙ্গিত করছিল।
আরও পড়ুন: সইফকে হিংস্র সিংহের সঙ্গে তুলনা করিনার! বরের জন্মদিনে আদুরে বার্তায় আর কী বললেন অভিনেত্রী?
এমন মন্তব্যে চুপ থাকেননি আখতার। তিনি পাল্টা জবাবে লিখলেন, “বেটা, যখন তোমার বাবা, ঠাকুরদারা ব্রিটিশদের জুতো চাটছিল, তখন আমার পূর্বপুরুষরা দেশকে মুক্ত করার জন্য কালা পানির সেলে প্রাণ দিচ্ছিলেন। সীমার মধ্যে থেকো।” তাঁর এই জবাব মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।
Happy Independence Day to all my Indian sisters and brothers . Let’s not forget this independence was not given to us on a platter . Today we must remember and salute those who Went to jails and those went to gallows for getting us Azaadi . Let’s see that we never lose this…
— Javed Akhtar (@Javedakhtarjadu)Tweet by @Javedakhtarjadu
এরপর আরও এক নেটিজেন তাঁকে ‘গদ্দার’ বলে আক্রমণ করেন। উত্তরে আখতার ইতিহাসের পাঠ শোনান। তিনি লেখেন, “গদ্দার তারা, যারা অসহযোগ আন্দোলন এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছিল, যারা ইংরেজদের সহযোগী হয়েছিল, যারা সংবিধান ও তিরঙ্গার বিরোধিতা করেছিল। ওরাই আসল গদ্দার। ইতিহাসটা আগে ভাল করে পড়ো।”
আরও পড়ুন: লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন! এখন কেমন আছেন দীপিকা, মন খারাপ করা পোস্ট অভিনেত্রীর
জাভেদ আখতারের এই ধারালো প্রতিক্রিয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বহু নেটিজেন তাঁর বক্তব্যের প্রশংসা করে লিখেছেন, “দারুণ উত্তর দিয়েছেন, এটাই আসল দেশপ্রেম।” আবার অনেকে বলেন, “যাঁরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাঁদের জবাব দিতে আখতার যথেষ্ট সাহস দেখিয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, জাভেদ আখতারের পরিবার স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশীদার ছিলেন। জাভেদ আখতারের প্রপিতামহ ফজল-এ-হক খায়রাবাদী ছিলেন একজন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, যিনি ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর কাকা আনসার হারভানি, ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী, যিনি ভারতের বিভক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।জাভেদ আখতারের বাবা জন নিশার আখতার ব্রিটিশ বিরোধী লেখকদের সোসাইটির অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর লেখা কবিতার মধ্য দিয়েই তৎকালীন ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এবং জাভেদ আখতারের ঠাকুরদা ফজল-ই-হক খয়রাবাদি ১৮৫৭ সালে ইংরেজদের বিরুদ্ধে মহাবিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন। আন্দামানে আমৃত্যু জেলবন্দি থেকে কারাগারেই তিনি ১৮৬৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
