আজকাল ওয়েব ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে রমরমিয়ে চলছে নতুন ‘সুপারম্যান’ ছবি। মনে করুন, আপনি হয়তো কিছু মিনিট দেরি করে ঢুকেছেন প্রেক্ষাগৃহে। শেষ করে বেরিয়েও এলেন। ওম্মা! বাইরে এসে দেখলেন—পুরো ইন্টারনেট তোলপাড়! সবাই বলছে, “ব্র্যাডলি কুপার-ই এ ছবির আসল চমক!” আর আপনি হয়তো ভাবছেন, এটা কি কোনও মজা না কি মিম? না কি জুলাই মাসে এপ্রিল-ফুল করার নয়া ফাঁদ? কিন্তু, জানিয়ে রাখি বিষয়টি কিন্তু আদপেই তা নয়। সত্যি সত্যি দ্য হ্যাংওভার ছবি সিরিজের তারকা ব্র্যাডলি কুপার ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেমস গানের এই বহুল প্রতীক্ষিত সুপারহিরো ছবিতে। ছোট্ট হলেও চরিত্রটি অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ। এবং তা কিন্তু মজাদার পার্শ্বচরিত্র কিংবা চমকপ্রদ ভিলেন হয়ে নয়, বরং সরাসরি ‘সুপারম্যান’-এর বাবা, জোর-এলের ভূমিকায়! ১৯৭৮ সালের ক্লাসিক সুপারম্যান ছবিতে এই আইকনিক চরিত্রে ছিলেন মার্লন ব্র্যান্ডো। আর সেই ছায়াতেই এবার হাঁটলেন কুপার।

কীভাবে ছবির পরিচালক জেমস গান এই এতটুকু চরিত্রে অভিনয় করার জন্য রাজি করতে পারলেন ব্র্যাডলি কুপার-এর মতো বিখ্যাত অভিনেতা-পরিচালককে?

সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক জেমস গান বলেন, “আমার এমন কোনও অভিনেতার প্রয়োজন ছিল যে মারলন ব্র্যান্ডোর জুতোয় পা গলানোর দম থাকে!”— বলছেন জেমস গান। 'জোর-এল'-এর মতো গুরুতর, মর্যাদাসম্পন্ন চরিত্রের জন্য এমন একজন দরকার ছিল, যিনি মার্লন ব্র্যান্ডোর পথ ধরে হাঁটতে পারেন। ব্র্যাডলি কুপার সেই গরিমা বহন করতে সক্ষম।” আসলে সুপারম্যান -পরিচালক আর ব্র্যাডলি কুপার পরস্পরের বহুদিনের পরিচিত। গানের পরিচালনায় 'গার্ডিয়ান্স অফ দ্য গ্যালাক্সি' -সিরিজের সব ছবিতে ব্র্যাডলি ছিলেন রকেট ব়্যাকুনের-এর কণ্ঠস্বর। সেখান থেকেই তৈরি হয় তাঁদের গভীর পেশাদার বন্ধুত্ব।

গান হেসে বলেন—“আমি ফোন করলাম ব্র্যাডলিকে আর বললাম, ‘ আমার একটা উপকার করো তো, ইংল্যান্ডে এসো, একটা থ্রি-ডি হোলোগ্রাফিক শুট আছে। টুক করে সুপারম্যানের বাবা জোর-এলের চরিত্রটা করে ফ্যালো করো।’ শুনে কুপার সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেল।”
এই ছবিতে ব্র্যাডলির উপস্থিতি হয়তো চমকে দিয়েছে, কিন্তু বাকি কাস্টও চোখ টানার মতো।
ডেভিড কোরেনসওয়েট হয়েছেন নতুন সুপারম্যান।
নিকোলাস হোল্ট হলেন লেক্স লুথর।
ব়্যাচেল ব্রসনাহান একেবারে লুইস লেন।
এছাড়াও, স্কাইলার গিসনডো (জিমি অলসেন), অ্যান্থনি ক্যারিগান (মেটামরফো), এডি গাথেগি (মিঃ টেরিফিক), নাথান ফিলিয়ন (গাই গার্ডনার), ও ইসাবেলা মার্সেড (হকগার্ল)— এরা সবাই রয়েছেন বড় ভূমিকায়। সুপারম্যান ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ১১ জুলাই—আর শুরু হয়েছে আলোচনা, বিতর্ক ও উৎসাহের গর্জন।
প্রসঙ্গত, গোটা বিশ্ব যখন নতুন ক্লার্ক কেন্টকে স্বাগত জানাচ্ছে, তখন ভারতের প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের অভিজ্ঞতা ঠিক ততটা মন ভোলানো হল না। কারণ? ভারতীয় সেন্সর বোর্ড (Central Board of Film Certification) আবারও তাদের ‘নীতি পুলিশি’ সত্তা জাহির করে কাঁচি চালাল ছবির একাধিক দৃশ্যে।এইমুহূর্তে সেন্সর বোর্ডের সবচেয়ে বিতর্কিত নীতি পুলিশি? ‘সুপারম্যান’ ছবিতে ডেভিড কোরেনসেট ও র্যা চেল ব্রোসনাহানের একটানা ৩৩ সেকেন্ডের চুমুর দৃশ্য স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে! শুধু এখানেই থেমে থাকেনি সেন্সর বোর্ড। দুটি আলাদা দৃশ্যে ছড়িয়ে থাকা সেই ‘ঘনিষ্ঠতা’র মুহূর্তও পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয় সেন্সর বোর্ডের নির্দেশে!সিনেমার সংলাপ থেকে শুরু করে তাঁদের মতে, একাধিক ‘অশোভন অঙ্গিভঙ্গি ’ সমস্ত কিছুই ছাঁটাই করা হয়েছে—যার ফলে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে ছবির পুরো আবহ! এই কাটাকুটির পর তবেই ছবিটি এখন পেয়েছে U/A 13+ সার্টিফিকেট, আর মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড।
