আজকাল ওয়েবডেস্ক: নেটপ্রভাবী সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক যেন থামতেই চাইছে না। মেক আপ আর্টিস্ট এবং ইনফ্লুয়েন্সার হিসাবে সমাজমাধ্যমে বেশ পরিচিত মুখ তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। কিন্তু গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে এসে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন সোহিনী। সন্তান প্রসবের পর দেখা যায়, তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেছেন। এর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলে পরিবার। অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসককে দায়ী করে প্রকাশ করা হয় ভিডিও। সেই ভিডিও দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। তবে ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আজকাল ডট ইন।
আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড করতে গিয়েছিলেন লিঙ্গ, ফস করে পুরোটাই কেটে ফেললেন চিকিৎসক! মাথায় হাত রোগীর

অভিযোগ নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর সমাজমাধ্যমে পাল্টা মুখ খোলেন সোহিনীর চিকিৎসক শিবেন্দ্রনাথ দাস। গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, কোনও রকম গাফিলতি ছিল না। বরং রোগীর পরিবারের তরফ থেকেই তাঁকে নানা ভাবে চপ্নডিওয়া হয়। তাঁর আরও দাবি, অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে তিনি দেখেন ‘কনসিল্‌ড অ্যাক্সিডেন্টাল হেমারেজ’-এর কারণেই সোহিনীর গর্ভপাত হয়েছে। সহজ ভাষায় বললে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মায়ের দেহে অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে শিশুর। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অতিরিক্ত দৌড়ঝাঁপ বা কাজকর্ম করলে এমন ঘটনা ঘটে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসকের বয়ান প্রকাশ্যে আসতেই উল্টো দিকে বইতে শুরু করে হাওয়া। সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি সমবেদনা বদলে যেতে থাকে কটাক্ষে। ধেয়ে আসে আক্রমণ। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নিজের স্ফীতোদরে জগন্নাথের ছবি এঁকে ফটোশুট করিয়েছিলেন সোহিনী। কটাক্ষ ধেয়ে আসে সেই বিষয়টিকে নিয়েও। নেটিজেনদের একাংশ কটাক্ষ করে মতামত দেন, অতিরিক্ত ভিউ পাওয়ার জন্য ভিডিও করতে গিয়েই নিজের সন্তানের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন সোহিনী। পাশাপাশি সোহিনীর ছবি-ভিডিয়ো ব্যবহার করে, তা দিয়ে নিজেদের কনটেন্ট বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমবেদনা পাওয়ার চেষ্টা করে চলেছে বলেও দাবি করেন অনেকে।
আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড করতে গিয়েছিলেন লিঙ্গ, ফস করে পুরোটাই কেটে ফেললেন চিকিৎসক! মাথায় হাত রোগীর

এবার গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন সোহিনী ও তাঁর স্বামী অনির্বাণ দে রায়। “ঘটনার সত্যতা না জেনেও এই দুঃসময় যারা পাশে ছিলেন তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। এই বিষয়ে আমাদের আর কোন বক্তব্য থাকবে না।” শীর্ষক একটি ভিডিও প্রকাশ করেন দম্পতি। প্রায় ঘণ্টাখানেক লম্বা সেই ভিডিওতে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড করতে গিয়েছিলেন লিঙ্গ, ফস করে পুরোটাই কেটে ফেললেন চিকিৎসক! মাথায় হাত রোগীর
একাধিক প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে দম্পতি দাবি করেন, শুরু থেকেই চিকিৎসকের সব পরামর্শ মেনেই এগিয়েছেন তাঁরা। সোহিনীর স্বামী অনির্বাণ বিভিন্ন তারিখে স্ত্রীর রক্তচাপ কেমন ছিল, সেই সব তথ্য তুলে ধরে দাবি করেন, চিকিৎসক কখনওই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে তাঁদের কোনও রকম সতর্কবার্তা দেননি। গর্ভাবস্থার একেবারে শেষের দিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ দেওয়া হয় তাঁকে। পাশাপশি ঘটনার দিন ঠিক কী কী হয়েছিল তার বর্ণনা দেন তাঁরা। 

এরপরই চিকিৎসকের সম্পর্কে একাধিক অভিযোগ করেন তাঁরা। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই সোহিনীকে একাধিক বেসরকারি এবং সরকারি হাসপাতালে ছুটে যেতে হয় বলেও অভিযোগ। দম্পতির আরও অভিযোগ, ঘটনার দিন ভোর ৫ টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত গর্ভস্থ শিশুর হৃদস্পন্দন শোনা গিয়েছিল। চিকিৎসক নিজেও সে কথা নিশ্চিত করেন।
কিন্তু ক্রমশ সোহিনীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে সোহিনী যখন সেই চিকিৎসকের কাছেই আবার ফিরে আসেন তখন রক্তপাত শুরু হয়েছে তাঁর। সেই অবস্থায় চিকিৎসক জানান, সন্তান মারা গিয়েছে। চিকিৎসকের এহেন কথায় আকাশ থেকে পড়েন দম্পতি। তাঁদের দাবি, চিকিৎসক দু’রকম কথা বলেন তাঁদের।

সব মিলিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পালা চলছেই। শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন সদ্য সন্তানহারানো সোহিনী।