কানাডায় পাঞ্জাবি গায়ক চানি নত্তানের বাড়ির বাইরে গুলিবর্ষণ। ভারতের কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের সহযোগীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। কানাডায় সক্রিয় ভারতীয় গ্যাংগুলোর সহিংসতা ক্রমেই বাড়ছে, আর এই ঘটনাটিকে সেই ধারাবাহিকতার একটি উদাহরণ হিসাবে দেখা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বিষ্ণোইয়ের গ্যাং দাবি করেছে, নত্তানকে নিশানা করা হয়েছিল তাঁর সতীর্থ গায়ক সর্দার খেরার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার কারণে। পুলিশ ঘটনাটির তদন্তে নেমেছে।

গোল্ডি ঢিলোঁ নামে এক ব্যক্তি, যে নিজেকে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য হিসাবে পরিচয় দিয়েছে, লিখেছে,  ‘চানি নত্তানের বাড়িতে গুলিবর্ষণের কারণ সর্দার খেরা। ভবিষ্যতে কোনও শিল্পী যদি সারদার খেরার সঙ্গে কাজ করে বা যোগাযোগ রাখে, তবে নিজের ক্ষতির জন্য সে নিজেই দায়ী থাকবে। কারণ আমরা সর্দার খেরার বড়  বড় ক্ষতি করতে থাকব। চানি নত্তানের সঙ্গে আমাদের কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।”
ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে একাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ দেখা গিয়েছে। তবে গুলিবর্ষণের সময় বাড়ির ভিতরে কেউ ছিলেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি।

মাত্র এক সপ্তাহ আগে গ্যাংস্টার রোহিত গোদারার তিন সহযোগী কানাডায় এক ব্যক্তিকে গুলি করার দায় স্বীকার করে সতর্ক করেছিল— ‘এটা কেবল শুরু।’

মহেন্দর সরণ দিলানা, রাহুল রিনাউ ও ভিকি ফালওয়ান নামের তিন ব্যক্তি অনলাইনে পোস্ট করে লিখেছিল, ‘আমরাই কানাডায় তেজি কাহলনকে গুলি করেছি। তাঁর পেটে গুলি লেগেছে। তিনি যদি শিক্ষা নেন, ভাল। না নিলে পরের বার আমরা কাজ শেষ করব।’

এর আগে ১৬ অক্টোবর ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারি শহরে কমেডিয়ান কপিল শর্মার মালিকানাধীন ‘ক্যাপ’স ক্যাফে’তে চার মাসে তৃতীয়বার হামলা হয়। লরেন্স বিষ্ণোই, কুলবীর সিধু ও গোল্ডি ঢিলোঁর সহযোগীরা যৌথভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেয়।

প্রথম হামলাটি হয়েছিল ১০ জুলাই, দ্বিতীয়টি ৭ আগস্ট। পরপর হামলার পর কপিল শর্মার মুম্বাই-সহ বিভিন্ন স্থানের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

১৬ অক্টোবর বিষ্ণোই ও ঢিলোঁ গ্যাংয়ের সহযোগীরা ব্রাম্পটনের এক রেস্তোরাঁয় গুলিবর্ষণ চালায়। এর আগে ৭ অক্টোবর বিষ্ণোই গ্যাং সারি শহরে এক রেস্তোরাঁ মালিকের একাধিক বাড়িতে গুলি চালায়। অভিযোগ ছিল, ওই ব্যবসায়ী নারী কর্মীদের হয়রানি করতেন এবং তাঁদের বেতন আটকে রাখতেন।

সলমন খান এবং কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দ্বন্দ্ব গত কয়েক বছরে ভারতের অন্যতম আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে। সলমনের বিরুদ্ধে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের হুমকি প্রথম শোনা যায় কৃষ্ণসার শিকার মামলার পর। এরপর একাধিকবার সলমনের বাড়িতে হামলা চলে। অভিনেতা এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। তদন্তে উঠে এসেছে, লরেন্স বিষ্ণোই ও তাঁর সহযোগীরা সলমনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের চেষ্টা চালিয়েছিল। বর্তমানে নিরাপত্তার কড়া ঘেরাটোপে সলমন।