বলিউডের এক সময়ের প্রথম সারির নায়িকা করিশ্মা কাপুর। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন যতটা ঝকঝকে, চকচকে মনে হয়েছিল বাইরে থেকে, অন্দরে ততটাই জটিল। ছবি নির্মাতা সুনীল দর্শন, যিনি কারিশমার সঙ্গে বহু জনপ্রিয় ছবি করেছেন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন কারিশমার বিয়ে, বিচ্ছেদ এবং নায়িকার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে।
যেমন হঠাৎ প্রেম ভাঙন, তেমন হঠাৎ বিয়ে হয়েছিল করিশ্মার। সুনীল দর্শন জানালেন, অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে কারিশমার সম্পর্কের ইতি এবং তার কিছুদিনের মধ্যেই ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরের সঙ্গে বিয়ে—সবটাই হয়েছিল "একেবারে হঠাৎ"। তাঁর কথায়, "আমি ভাবতেই পারিনি... এটা যেন নক্ষত্রদের কোনো খেলার চালের মতো ছিল, সিনেমার তারকা নয়— ব্রহ্মাণ্ডের তারকা ।"
" করিশ্মা কোনওদিন সেই দুনিয়ার ছিল না" বললেন সুনীল দর্শন। ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরের পরিবার নিয়ে প্রশ্নে দর্শনের স্পষ্ট বক্তব্য—“ওঁকে একটা দুনিয়ায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যা তাঁর ছিল না। দিল্লির নিজস্ব একটা সংস্কৃতি আছে, আর করিশ্মা সেখানে মানিয়ে নিতে পারেনি।” তিনি আরও বলেন, “রাজ কাপুরের নাতনি, এক সময়ের এক নম্বর বলি নায়িকা, অথচ ব্যক্তিত্বে একেবারে সাধারণ। কিন্তু এই বিয়ের পর ওর চারপাশে ছিল রাজপ্রাসাদ, অগণিত গাড়ি—এসব ওর নিজের জগত ছিল না।”
পাশাপাশি ছিলেন নাকি ' ট্রফি ওয়াইফ'? সত্যিই কি করিশ্মা কাপুর ‘ট্রফি ওয়াইফ’ হয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জয়ের? সুনীল দর্শনের কথায়, “সমস্যাটা সম্ভবত সেখান থেকেই শুরু। আমি যেটুকু শুনেছি, তাতে তাই মনে হয়েছে।” এরপর সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যু প্রসঙ্গে নির্মাতা জানান, তিনি করিশ্মার সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু পুরনো স্মৃতি টেনে আনতে নারাজ। বললেন—“কিছু জিনিস কেবল মাটিচাপা দেওয়াই ভাল।"
এক টানাপড়েনের জীবনের পরত উন্মোচিত। ২০০৩ সালে সঞ্জয় কাপুরের সঙ্গে কারিশমার বিয়ে হয়, যা ২০১৬-তে গিয়ে বিচ্ছেদে শেষ হয়। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। ২০২৫ সালের জুনে সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যু হয় ব্রিটেনে একটি পোলো ম্যাচ চলাকালীন, মধুর কামড়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। করিশ্মার জীবনের পেছনের পর্দা যেন এবার একটু উন্মুক্ত হল—সাজানো ছবির পিছনে লুকিয়ে ছিল অনেক অস্বস্তির নীরবতা।
প্রসঙ্গত, ১২ জুন, ইংল্যান্ডে পোলো খেলার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুর। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর। আমিরশাহী থেকে ইংল্যান্ড—জীবনের শেষ খেলায় মাঠেই থেমে গেল তাঁর হৃদস্পন্দন। সঞ্জয় যখন পোলো খেলছিলেন, সেই সময় একটি মৌমাছি তার মুখে কোনওভাবে ঢুকে পড়েছিল ৷ এরপরেই সঞ্জয়ের শরীরে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় ৷ তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকলেও সাড়া দেননি এই ব্যবসায়ী।
