একদিকে স্রেফ ১৫০ টাকার পারিশ্রমিক, অন্যদিকে সারাদিনের খাটুনি। অন্যদিকে, প্রচুর খাটাখাটুনির পরেও কেউ পারিশ্রমিকই পেতেন না। এমনই ছিল বলিউডে আজকে সফল হওয়া তারকাদের শুরুর দিনগুলো। ফাঁস করলেন জনপ্রিয় খোদ পরিচালক-কোরিওগ্রাফার ফারাহ খা শুনতে সিনেমার গল্পের মতো লাগলেও, এটাই সত্যি। ফারাহ খান আর গায়ক শান সম্প্রতি আবার ফিরলেন সেই দিনগুলির স্মৃতিতে যখন দু’জনেই সবে বিনোদনের দুনিয়ায় পা রেখেছেন, আর এক ছবিই বদলে দিয়েছিল তাঁদের ভবিষ্যৎ: ‘জো জিতা ওহি সিকান্দর’।
বলিউডের জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার ও পরিচালক ফারাহ খান আজকাল ইউটিউবে একেবারে জমিয়ে কাঁপাচ্ছেন। সম্প্রতি শানের বাড়িতে গিয়েছিলেন ফারাহ। নস্টালজিয়া, হাসিঠাট্টা আর স্মৃতিচারণ—সব মিলিয়ে যেন ফিরে গেলেন সেই নয়ের দশকে। আলাপচারিতার মাঝেই ফারাহ জানালেন, “প্রথম সিনেমা যেখানে শান কাজ করেছিল, সেটা ছিল 'জো জিতা ওহি সিকান্দর' ।” শান হেসে যোগ করলেন, “হ্যাঁ, আমি সেখানে স্যাক্সোফোন বাজাচ্ছিলাম!” ফারাহ হেসে বললেন, “আর আমি তখন সেই ছবির জুনিয়র ডান্সার!”

তবে এরপরেই চমক। ফারাহ জানান, তিনি আসলে ওই ছবিতে প্রথমে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু শুটিং চলাকালীন একের পর এক ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার না আসায়, তাঁকেই একাধিক জায়গায় নাচতে হয়! এমনকী একটি দৃশ্যে অভিনেতা দীপক তিজোরি যখন নায়িকার গালে চুমু খাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় ফারাহকেই পাঠানো হয় সেই শটে! হাসতে হাসতে ফারাহ বলেন, “ওই দৃশ্যে যাকে তিজোরি চুমু খাচ্ছে, সে আসলে আমি ছিলাম !”
তবে সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার, যখন টাকার প্রসঙ্গ ওঠে। শান বলেন, “আমি তখন দিনে ১৫০ টাকা পেতাম, অন্যরা ৭৫।” শুনেই ফারাহর বিস্মিত প্রতিক্রিয়া—“তুই টাকাও পেয়েছিস? আমাকে তো এক পয়সাও দেয়নি!” তারপরই ফারাহর সংযোজন, “তবু ওই ছবিটাই আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল। পেমেন্ট না পেলেও, ওই কাজই আমাকে কোরিওগ্রাফির দুনিয়ায় সুযোগ এনে দেয়। সেই ছবিই আমার ভাগ্য ঘুরিয়ে দেয়।”
আজ ফারাহ খান বলিউডের প্রথম সারির পরিচালক-নৃত্য পরিচালক, আর শান দেশের অন্যতম জনপ্রিয় প্লেব্যাক সিঙ্গার। কিন্তু তাঁদের এই গল্প যেন মনে করিয়ে দেয়—কোনও বড় জায়গায় পৌঁছতে গেলে কতটা ধৈর্য, পরিশ্রম আর না-পাওয়ার মধ্যেও বিশ্বাস ধরে রাখতে হয়।
‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’-এর মতোই, এখানে জিতেছিলেন তাঁরাই যাঁরা হাল ছাড়েননি।
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে যোগগুরু বাবা রামদেবের কাছে হাজির হয়েছিলেন ফারাহ খান। হারিদ্বারে তাঁর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে ফারাহ আর তাঁর সহকারী দিলীপ দর্শকদের ঘুরিয়ে দেখালেন প্রতিটি কোণ। তবে আসল মজা জমল তাঁদের আড্ডায়। সেই ভ্লগে বাবা রামদেব বলছিলেন, “অন্যদের থাকার জন্য প্রাসাদ বানিয়েছি আমি, আর নিজে থাকার জন্য বানিয়েছি ঝুপড়ি।” কথাটা শেষ হতে না হতেই ফারাহ দারুণ এক টিপ্পনি কেটে দিলেন—“আরে, আপনি তো একেবারে সলমন খানের মতো! ও-ও তো এক কামরার ফ্ল্যাটে থাকে, কিন্তু বাকিদের জন্য বানিয়েছে রাজপ্রাসাদ।” কথা শেষ হতেনা হতেই চারদিক ফেটে পড়ল হাসিতে। রামদেব নিজেও হেসে মেনে নিলেন সলমনের সঙ্গে নিজের এই তুলনা।কিন্তু এখানেই থামেননি ফারাহ। খানিক পর হালকা মেজাজে আবার প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, “আপনি তো দারুণ সুপুরুষ, কখনও বলিউডে চেষ্টা করেছেন?” যোগগুরু সঙ্গে সঙ্গেই হাত জোড় করে বলে উঠলেন—“আরেহ! রাম রাম! আমি তো আপনার জন্যই পুরো সাম্রাজ্য ফেলে রেখেছি।”
সত্যি বলতে কী, ফারাহ খানের এই ভ্লগ এবার শুধু রান্নার জন্য নয়, বরং মজার খুনসুটি আর তারকা যোগের টক্করে জমে উঠেছে বহুগুণ।
