আমির খান এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করলেন ভাই ফয়জল খান। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে বিবৃতি জারি করে সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন একদা-অভিনেতা।

সেই  বিবৃতিতে ফয়জল যা লিখেছেন, বাংলায় তার সারমর্ম, ‘আমি, ফয়জল খান, এই তারিখ থেকে আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পারিবারিক এবং সম্পত্তিগত সকল সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। বিশেষ করে যাদের নাম এখানে লিখিত নথিতে আরও সুনির্দিষ্টভাবে বর্ণিত আছে, তাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখব না।’ আমিরের ভাই এও জানান যে, তিনি পরিবার কারও সম্পত্তির অংশীদার হবে না। একই ভাবে তাঁদের কারও সম্পত্তির কোনও রকম দায়িত্বও নেবেন না।

ফয়জল এও নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি আর আমিরের বাড়িতে থাকবেন না এবং তাঁর কাছ থেকে কোনও আর্থিক সাহায্য বা মাসিক ভাতা গ্রহণ করবেন না। তাঁর ব্যাখ্যা, বছরের পর বছর ধরে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা এবং পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগের পরেই এই সিদ্ধান্ত।

বিবৃতিতে ফয়জল লেখেন, ‘"আমি আজ থেকে আমার ভাই আমির খানের বাসভবনে থাকব না এবং আমার ভাই আমির খানের কাছ থেকে কোনও মাসিক ভাতা/ভর্তি দাবিও করব না। সকলকে মনে রাখতে হবে যে, আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্তটি আমার পক্ষ থেকে খুব সাবধানতার সঙ্গে বিবেচনা করার পরে এবং অতীতের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে।’

আমিরের ভাইয়ের অভিযোগ, ‘২০০৫ থেকে ২০০৭ সময়কালে, আমাকে অযাচিত জোরপূর্বক ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল।
২০০৫ থেকে ২০০৬, আমাকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল, ঠিক যেমন পরিবারের কিছু সদস্য তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গৃহবন্দী করে রেখেছিলেন।

২০০৭ সালের অক্টোবরে, যখন আমার পরিবারের সদস্যরা আমাকে আমার স্বাক্ষরের অধিকার ত্যাগ করতে বাধ্য করছিল, তখন আমি বাড়ি ছেড়ে চলে আসি, কারণ আমার মা জিনাত তাহির হুসেন এবং আমার বড় বোন নিখাত হেগড়ে আমাকে বলেছিলেন যে আমি প্যারানয়েড স্ক্রিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছি এবং আমি সমাজের জন্য বিপদ। আদালতের মামলার শুনানি এবং ডিসপোজালে জন্য প্রায় পাঁচ মাস সময় লেগেছিল এবং ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আদালত আমার পক্ষে চূড়ান্ত রায় দেয় এবং আমার পরিবারের সদস্যদের করা অভিযোগ এবং যুক্তি খারিজ করে দেয়। আমার পরিবারের সদস্যরা আবারও আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে এবং ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে প্রিন্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা বিবৃতি প্রকাশ করে আমাকে মানহানি করেছে যে আমি বিভ্রান্তিকর এবং ভুল তথ্য উপস্থাপন করছি। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটা ঘটে। আমার পরিবারের সদস্যরা ২০০৫ সাল থেকে আমার কেরিয়ারকে বিপন্ন করার এবং আমার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করার জন্য দায়ী।’

দিন কয়েক আগে এক সাক্ষাৎকারে ফয়জল দাবি করেন, ভাই আমির খান তাঁকে এক বছর ধরে বন্দি করে রেখেছিলেন। তিনি বলেছেন যে সেই সময় তিনি অনুভব করেছিলেন যে তিনি একটা ফাঁদে আটকে আছেন। তিনি বলেন, "ওঁরা বলছিল আমার স্কিজোফ্রেনিয়া হয়েছে এবং আমি একজন পাগল মানুষ। আমি সমাজের জন্য ক্ষতিকারক। এই সব কথা বলা হচ্ছিল, আমি ভাবছিলাম যে, আমি এই চক্রব্যূহ থেকে কীভাবে বের হব? বাড়িটাই চক্রব্যূহ হয়ে গিয়েছিল আমার জন্য। আমি তাতে আটকে গিয়েছিলাম কারণ সারা পরিবার আমার বিরুদ্ধে ছিল। আমাকে পাগল প্রমাণ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল।"

ফয়জল আরও জানান, সেই সময় নাকি জোর করে তাঁর ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এমনকী বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। ফয়জল খান স্মরণ করেন যে, তিনি সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করতেন এবং আশা করতেন যে তাঁর বাবা তাকে বাঁচাতে আসবেন। ফয়জল আরও যোগ করেছেন যে, তিনি তখন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহিত ছিলেন। কিন্তু তিনিও সেই সময় কিছু করেননি।