বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী এষা দেওল এবং তাঁর প্রাক্তন স্বামী, ব্যবসায়ী ভারত তখতানি তাঁদের বিচ্ছেদ ঘোষণার পর প্রথমবার এক ছাদের নিচে আসতে চলেছেন। এই মিলনস্থল হতে চলেছে কিংবদন্তী অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর আয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক প্রার্থনা সভা। এই অপ্রত্যাশিত এবং তাৎপর্যপূর্ণ খবরটি স্বভাবতই বলিপাড়ায় নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পারিবারিক মূল্যবোধ এবং দায়িত্ববোধের প্রতি তাঁদের অবিচল শ্রদ্ধাই এই সাক্ষাতের প্রধান কারণ বলে জানা যাচ্ছে।

 

 

আগামী ১১ ডিসেম্বর হেমা মালিনী একটি স্মরণ সভার আয়োজন করেছেন যেখানে নাকি আমন্ত্রণ নেই সানি বা ববি কেউই। ধর্মেন্দ্রর দুই পরিবারের মধ্যে যখন বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে ধীরে ধীরে, ঠিক তখনই শুনতে পাওয়া গেল আগামী ১১ ডিসেম্বর নতুন দিল্লির জনপথের ডক্টর আম্বেদকর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে আয়োজন হতে চলা এই স্মরণসভায় নাকি আমন্ত্রণ রয়েছে এষা দেওলের প্রাক্তন স্বামী ভারত তখতানির।

 


চলতি বছরের শুরুতে এষা এবং ভারত যৌথভাবে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে তাঁদের দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার ঘোষণা করেন। তাঁদের সম্পর্কের বয়স ছিল প্রায় ১৮ বছর, যার মধ্যে ১১ বছর তাঁরা বিবাহিত জীবন কাটিয়েছেন। এই দম্পতির দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে—রাধ্যা এবং মিরায়া। বিচ্ছেদের বিবৃতিতে তাঁরা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, এই কঠিন সময়ে তাঁরা সন্তানদের যৌথ দায়িত্ব পালন করবেন এবং তাঁদের গোপনীয়তাকে যেন সকলে সম্মান জানান। এই বিচ্ছেদের খবর বলিউডে যথেষ্ট শোরগোল ফেলেছিল, কারণ তাঁদের সম্পর্ককে আদর্শ দম্পতি হিসেবে দেখা হত।

 


ধর্মেন্দ্র এবং হেমা মালিনীর বড়মেয়ে এষা দেওলের ব্যক্তিগত জীবনে আসা এই পরিবর্তন অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল। তবে, বিচ্ছেদের পরেও এষা এবং ভারত দু'জনেই নিজেদের ব্যক্তিগত সম্মান বজায় রেখেছেন এবং পারিবারিক সম্পর্কগুলিকে সম্মান জানিয়েছেন। এই কারণেই ধর্মেন্দ্রর এই পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাঁদের একসঙ্গে উপস্থিত থাকার সিদ্ধান্তটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও তাঁদের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটেছে, তবুও পারিবারিক বন্ধনকে তাঁরা অগ্রাহ্য করতে রাজি নন। জানা গিয়েছে, ধর্মেন্দ্রর এই প্রার্থনা সভাটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এবং একান্ত পারিবারিক একটি আয়োজন। পারিবারিক পরম্পরা এবং প্রথা মেনে এই জমায়েত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

 


পরিবারের প্রতিটি সদস্যের উপস্থিতি এখানে কাম্য, আর সেই পারিবারিক দায়িত্ববোধ থেকেই এষা ও ভারত উভয়েই তাঁদের ব্যক্তিগত দূরত্ব ভুলে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, জীবনের পথে বিচ্ছেদ এলেও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং পরিবারের প্রতি কর্তব্যবোধ তাঁদের কাছে এখনও অগ্রাধিকার পায়।

 

 

বিচ্ছেদের পর এটাই হবে প্রথমবার যখন এই প্রাক্তন দম্পতি কোনও সামাজিক বা পারিবারিক পরিসরে সামনাসামনি হবেন। এই সাক্ষাতের দিকে সকলের নজর থাকবে, কারণ এটি ইঙ্গিত দেয় যে, ব্যক্তিগত জীবনে পরিবর্তন এলেও তাঁরা সন্তানদের অভিভাবক হিসেবে এবং পরিবারের সদস্য হিসেবে একে অপরের প্রতি যে সম্মান বজায় রেখেছেন, তা কতখানি গভীর। 

 

 

সন্তানরা যাতে সুস্থ পারিবারিক পরিবেশে বড় হতে পারে, সেদিকেও তাঁরা সমানভাবে নজর দিচ্ছেন। এই পারিবারিক পুনর্মিলন একদিকে যেমন তাঁদের পরিপক্কতার পরিচয় দেয়, তেমনই দেখায় যে সম্পর্কের বাঁধন ভাঙলেও পারিবারিক মূল্যবোধের শিকড় কতটা মজবুত হতে পারে। ভবিষ্যতে সন্তানের প্রতি যৌথ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাঁদের এই ধরনের ইতিবাচক পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে আরও অনেককে অনুপ্রেরণা যোগাবে।