ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে ‘শোলে’-র মতো সাংস্কৃতিক প্রভাব বিস্তার করেছে এমন ছবি খুব কমই আছে। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া এই কালজয়ী ক্লাসিক এখনও দর্শকের হৃদয়ে একইভাবে ছাপ রেখে যায়। অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া বচ্চন আর সঙ্গে ভারতীয় ভিলেনদের সর্বকালের সেরা আইকন গব্বর সিংহ। ২০২৫ সালে ছবিটি পা দিতে চলেছে সোনালি জুবিলিতে। আর সেই উপলক্ষে পরিচালক রমেশ সিপ্পি জানালেন বহুদিনের অজানা সত্যি - কেন কোনওদিন তিনি ‘শোলে’-র সিক্যুয়েল কিংবা এই ছবির রিমেক করার চেষ্টা করেননি।


অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, জয়া বচ্চন, হেমা মালিনী, সঞ্জীব কুমার ও আমজাদ খানের মতো তারকারা অভিনীত শোলে এখনও ভারতীয় সিনেমার সবচেয়ে প্রভাবশালী ছবিগুলির একটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মুক্তির পর থেকেই শোলে ভারতীয় পপ-কালচারে বিচ্ছিন্ন অংশ হয়ে ওঠে। ছবির সংলাপ, দৃশ্য, চরিত্র - এখনও মানুষের দৈনন্দিন কথোপকথনের অংশ। সংলাপ থেকে চরিত্র সবকিছুই আজও প্রথম দিনের মতোই সমান জনপ্রিয়।

সম্প্রতি দেওয়া সাক্ষাৎকারে রমেশ সিপ্পি স্পষ্ট বলেন, “ ‘শোলে ২’ নিয়ে খানিক ভাবনা চীন করেছিলাম, কথাবার্তাও হয়েছিল। কিন্তু কখনও লোভ করিনি সেই ছবি তৈরি করার। যা একবার ঠিকঠাক তৈরি হয়েছে, সেটাকে আবার বানানোর কোনও যুক্তি দেখিনি।” পরিচালকের মতে, সিক্যুয়েলের পথে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল অমজাদ খান (গব্বর সিংহ) এবং সঞ্জীব কুমারের (ঠাকুর) মৃত্যু। তিনি বলেন, “সঞ্জীবজির চরিত্র হয়তো কিছুটা মিলিয়ে তোলা যেত। কিন্তু গব্বরকে? অসম্ভব। মানুষ হতাশ হতেন। তাই ‘শোলে ২’ বানানোটা আমি বুদ্ধিমানের কাজ মনে করিনি।”

সিপ্পির স্পষ্ট ভাবনা, “শোলে আবার চেষ্টা করা উচিত হয়নি। তাই করিনি।” 

কিন্তু চমক আরও আছে। ‘শোলে – দ্য ফাইনাল কাট’ আবার ফিরছে বড়পর্দায়। ১৯৭৫ সালের এই ঐতিহাসিক ছবির সম্পূর্ণ রিস্টোর করা ৪কে ভার্সন ১২ ডিসেম্বর ২০২৫-এ সারা দেশের ১,৫০০ পর্দায় মুক্তি পেতে চলেছে। ছবির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রথমবার দর্শকরা দেখতে পারবেন সেই অরিজিনাল এন্ডিং, যা এতদিন কখনও দেখানো হয়নি। ধর্মেন্দ্র, অমিতাভ বচ্চন, হেমা মালিনী, জয়া বচ্চন, সঞ্জীব কুমার এবং আমজাদ খান অভিনীত এই কাল্ট ক্লাসিক এ বছর ১৫ আগস্ট নিজেদের ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করেছে। ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ছবিটিকে নতুন করে ৪কে-তে রিস্টোর করেছে এবং প্রথমবার দর্শকরা দেখতে পাবেন ছবির অরিজিনাল ক্লাইম্যাক্স।

এই দৃশ্যটির আলাদা ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। কারণ রমেশ সিপ্পি যে ক্লাইম্যাক্সটি প্রথমে শুট করেছিলেন, তা ১৯৭৫ সালের ইমারজেন্সি চলাকালীন সেন্সর বোর্ড আটকে দেয়। বোর্ডের আপত্তি ছিল—দৃশ্যটি নাকি অত্যধিক সহিংস। সেই ক্লাইম্যাক্সে দেখা যেত, ঠাকুর (সঞ্জীব কুমার) স্পাইক লাগানো জুতো পরে গব্বর সিংহকে (আমজাদ খান) হত্যা করছেন। পরে ছবির জন্য নতুন, নরম এন্ডিং যোগ করা হয়।

৫০ বছর পর এবারই প্রথম সেই মূল ক্লাইম্যাক্স বড়পর্দায় দেখানো হবে।