অবশেষে পুরনো বিবাদ ভুলে 'যত কাণ্ড কলকাতাতেই' ছবির স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে হাজির হয়েছেন আবির চট্টোপাধ্যায়। যথাযথ সময়ে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হন পরিচালক অনীক দত্ত। তবে এখানে এসেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় পরিচালকের। তবে কিছুক্ষণ বসে ইনহেলার নেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হন পরিচালক। যদিও পরিচালককে ছাড়াই সিনেমা শুরু করে দিতে হয়। তবে কিছুক্ষণের বিশ্রামের পর অবশেষে আবার সুস্থ হয়ে ওঠেন অনীক দত্ত। 

 

 

 

 

এর আগেও একাধিকবার তিনি জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থার যে অবনতি হচ্ছে। তার ফলে তিনি এরপর ছবি করতে পারবেন কিনা জানেন না। শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় এর আগেও হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছে পরিচালককে। কিন্তু এইভাবে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যাওয়া দেখে চিন্তায় পড়ে যান অনেকেই। তবে এখন তিনি সুস্থ আছেন বলে খবর।

 

 

 

প্রসঙ্গত, অনীক দত্তের ছবি মানেই বরাবরই নানা বিতর্ক থাকে। 'ভূতের ভবিষ্যৎ' ছবির সময়ও দেখা গেছিল একই ঘটনা। তবে নানা অসহযোগিতা ও ষড়যন্ত্রের পরও ছবি বানিয়ে গিয়েছেন অনীক দত্ত। তবে এবার তিনি জানালেন, এই ছবি হয়ত তাঁর শেষ ছবি। তিনি আর ছবি না বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

 

 

 

 

 

ঠিক কোন কারণে এমনটা ভাবছেন পরিচালক? তাঁর কথায়, "প্রথমত আমার শারীরিক অবস্থা, আমার শরীর এখন আর সেই ভাবে সঙ্গ দেয় না। অসুস্থতার কারণে অনেক সময় শুটিংয়ে উপস্থিত থাকতে পারি না, নিজের ছবির বিভিন্ন দৃশ্যের শুটিংয়ে উপস্থিত থাকতে না পারাটা অত্যন্ত যন্ত্রণার, শরীরের যেভাবে অবনতি হচ্ছে তাতে মনে হয় না আমি আর নতুন করে ছবি বানাতে পারবো।" 

 

 

তবে শুধুই এটি কারণ নয়, বিরক্তি এবং অভিমান থেকেও এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিচালক। অনীক দত্তের বলেন, "এই ছোট ইন্ডাস্ট্রিতে এত দলাদলি, অন্যের ক্ষতি করার প্রবণতা, যা সত্যিই একটা সময়ের পর ছবি করার ইচ্ছে কমিয়ে দেয়। আমি নিজে কখনও বলিনি বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান, আমার মনে হয় বাংলা ছবি যদি ভাল হয় দর্শকেরা এমনিই সেই ছবি দেখবেন। আর যেখানে ইন্ডাস্ট্রির লোকেরাই একে অপরের পাশে দাঁড়ান না, তাতে দর্শকেরা কীভাবে পাশে দাঁড়াবেন। আমি বহু বছর মুম্বইতে কাজ করেছি, সেখানে টাকা বেশি, হয়তো সম্মানও। বহু সিনিয়র পরিচালকেরাই নতুন পরিচালক-প্রযোজকদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করেন, কিন্তু এখানে সেটা নেই। উদাহরণ হিসেবে বলতে গেলে বিক্রমাদিত্য চৌধুরীর ছবিটি নিয়ে কথা বলতেই হয়, বাংলায় বাংলা ছবির কদর হয় না, ভাল ছবি হল পায় না। সেখানে ছবি বানিয়ে কী লাভ।"

 

 

পরিচালকের আরও সংযোজন, " শুধু টাকার জন্য যদি ছবি বানাতাম তাহলে মুম্বইতে বিজ্ঞাপন এজেন্সিতে কাজ করে আরও অনেক বেশি টাকা কামাতে পারতাম। কিন্তু সেই সময় সবকিছু ভুলে বাংলায় ছবি বানাতে এসেছিলাম। তবে এখন আর ভাল লাগে না। ভাল ছবি বানানোর পরিবেশটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এবং ভাল ছবি হলে তা দর্শকদের কাছে পৌঁছনো তো আরও কঠিন। এর আগে আমার ছবি নন্দনে হল পাইনি, অথচ বাঙালিরা নন্দনে বাংলা ছবি দেখতে ভিড় জমান। এরপর আর এখানে ছবি বানিয়ে কী লাভ।"