দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে চিতাবাঘ দেখা যাওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ক্যাম্পাসে। রাতেই বনদফতরের একটি দল পৌঁছে প্রথমে পায়ের ছাপ দেখে চিতাবাঘের উপস্থিতির ইঙ্গিত পায়। তবে পরে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে আপাতত আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই ছাত্রছাত্রীদের হোস্টেলের ভেতরেই থাকতে বলেছে, এবং বনের ধার ঘেঁষা এলাকাগুলি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে।অরাবল্লী গেস্ট হাউসের পাহাড়ি অংশে এক ছাত্র যখন কুকুর–বিড়ালকে খাবার খাওয়াচ্ছিলেন, তখনই হঠাৎ চোখে পড়ে চিতাবাঘ। মুহূর্তের মধ্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। পরে নিরাপত্তা কর্মীরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন এবং বনদফতরকে জানানো হয়।
এবার গোটা বিষয়ে নিজের অননুকরণীয় ছন্দে সমাজমাধ্যমে মন্তব্য করলেন জনপ্রিয় পরিচালক তথা জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৃজিত মুখার্জি। জেএনইউ চত্বরে চিতাবাঘ দেখা যাওয়ার ঘটনার খবরটি ফেসবুকে পোস্ট করে তাঁর সঙ্গে ছোট্ট অথচ রসিক মন্তব্য জুড়ে দেন ‘জাতিস্মর’-এর পরিচালক – “এই উত্তেজনাগুলো বড্ড মিস করছি!” আসলে, সৃজিতের বন্যপ্রাণীর প্রতি প্রেম নতুন কিছু নয়। একাধিক ছবিতে জঙ্গল থেকে বনপ্রাণী নিয়ে শুটিং করার পাশাপাশি নিজের বাড়িতেও পুষেছেন সাপ।

যাই হোক, ফেরা যাক সৃজিতীয় প্রসঙ্গে। পোস্টের বার্তা বাক্সে একজন মন্তব্য করেন – “এটা কী নতুন ব্যাপার নাকি? মানে, শেয়াল-চিতাবাঘেদের তো সবসময়ই জেএনইউ চত্বরে দেখা যায়।” পাল্টা সৃজিতের জবাব – “ওই চত্বরে শেয়াল দেখা যায় নিশ্চয়ই। কিন্তু চিতাবাঘ নয়। ওটা আইআইটি মুম্বইয়ের গর্ব করার বিষয়!”

আইআইটি মুম্বইকে সৃজিতের এই খোঁচার পিছনে রয়েছে পাকা যুক্তি। ২০২২ সালে এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চিতাবাঘের কারণে খবরের শিরোনামে এসেছিল আইআইটি মুম্বই! ওই আইআইটি ক্যাম্পাসের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল চিতাবাঘের ঘোরাফেরার।
প্রসঙ্গত, জেএনইউ চত্বরে চিতাবাঘ দেখা যাওয়ায় পর সতর্কবার্তা জারি করেছে বনদফতর। প্রথমে বনদফতরের ছোট একটি দল চিতাবাঘের পায়ের ছাপ দেখে আশঙ্কা জোরদার করে। এরপরই হোস্টেলগুলিতে নুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা পাঠানো হয়।
হোস্টেলের দরজা–জানলা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
একা না বেরিয়ে দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করার নির্দেশ।
পাবলিক এরিয়ায় আলো জ্বালিয়ে রাখতে বলা হয়েছে।
স্টেডিয়াম এবং যমুনা নদীর ধারে বিশেষ সতর্কতা জারি।
বিশেষত কবেরী, পেরিয়ার ও গোদাবরী হোস্টেলের আশেপাশে টহল বাড়ানো হয়েছে, কারণ এখানেই ভিন্নভাবে সক্ষম ছাত্রছাত্রীরা থাকেন।
জেএনইউ-র ডিন অফ স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার জানিয়েছেন, নিরাপত্তা কর্মীরা বনদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন। রাতে একটি পূর্ণাঙ্গ সার্চ অপারেশন চালানো হবে। তবে রাতারাতি আনুষ্ঠানিকভাবে ছুটি ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি, যদিও ছাত্রছাত্রী ও ওয়ার্ডেনদের অনানুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসে আগে কখনও চিতাবাঘ দেখা যায়নি। তবে অরাবল্লী অঞ্চলে এ ধরনের বড় বিড়াল প্রজাতির প্রাণীর উপস্থিতি থাকায় ঘটনাটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়।
