ঋষভ শেট্টির বহুল প্রতীক্ষিত ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’ নিয়ে উত্তেজনা আকাশ ছুঁয়েছে। ২০২২ সালের অপ্রত্যাশিত ব্লকবাস্টার 'কান্তারা'-র এই প্রিক্যুয়েল ঘোষণার পর থেকেই ছবিটিকে ঘিরে প্রত্যাশার ঝড়। দর্শকের চোখে একদিকে ছবির কনটেন্ট, অন্যদিকে বক্স অফিস—দুটো ক্ষেত্রেই বাজি বড়। হম্বলে ফিল্মস ফিরিয়ে আনছে কান্তারার জগৎ — তবে এবার আরও গভীরে, আরও পুরোনো কালে। ২০২২-এর কান্তারা যেখানে শেষ হয়েছিল, ‘চ্যাপ্টার ১’ শুরু হবে তার বহু আগে। এই গল্প তুলে ধরবে দেবতা, বিশ্বাস, জমি এবং মানুষের অস্তিত্বের লড়াই— যেখানে প্রকৃতি নিজেই হয়ে ওঠে সাক্ষী এবং শাস্তিকারী।
আর এবার সামনে এল এমন এক খবর, যা ছবির প্রতি আগ্রহকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। জানা গিয়েছে, ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’-এর জন্য গলা মেলাতে চলেছেন স্বয়ং পাঞ্জাবি তারকা দিলজিৎ দোসাঞ্জ! আগামীকালই এই ছবির জন্য গান রেকর্ড করবেন তিনি।
শিল্পমহলের এক সূত্রের দাবি—দিলজিৎ দোসাঞ্জের এই ছবিতে যুক্ত হওয়া নিঃসন্দেহে এ বছরের সবচেয়ে বড় প্যান-ইন্ডিয়া কোলাবরেশন। উত্তর ভারতের দর্শক টানতে এ এক দুর্দান্ত পদক্ষেপ। একবার খবরটা প্রকাশ্যে এলে গানটির জন্য তীব্র কৌতূহল তৈরি হবে।
হম্বালে ফিল্মস প্রযোজিত এই ছবিতে ঋষভ শেট্টির পাশাপাশি অভিনয় করছেন রুক্মিণী বসন্ত ও সপ্তমী গৌড়া।ঋষভ শেট্টি নিজেই এই ছবির চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও মুখ্য অভিনেতার ভূমিকায়। প্রযোজনা করেছেন বিজয় কিরাগান্দুর এবং চালুভে গৌড়া। ছবিতে থাকছে এমন সব যুদ্ধদৃশ্য, যা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে নজিরবিহীন। সিনেমাটিতে রয়েছে এক বিশাল স্কেল-এ যুদ্ধদৃশ্য— জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোরিওগ্রাফারের নেতৃত্বে ৫০০ যোদ্ধা এবং ৩০০০ জন অংশগ্রহণকারীর মাধ্যমে হবে সেই দৃশ্যায়ন।জাতীয় পুরস্কারজয়ী প্রথম কিস্তির পর স্বাভাবিকভাবেই এই ছবিকে ঘিরে প্রত্যাশা তুঙ্গে।ঋষভ শেট্টি যে এ বার নিজের মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে ইতিহাস গড়তে চলেছেন, তা ছবির স্কেল এবং কনটেন্ট—দুটোই স্পষ্ট করে দিচ্ছে। ‘কান্তারা চ্যাপ্টার ১’ শুধুই একটি সিনেমা নয়, এটি দক্ষিণ ভারতের কর্নাটকের তুলু অঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন সংস্কৃতি ও ভক্তিপ্রথাকে পর্দায় তুলে ধরার এক প্রয়াস।পাঞ্জুরলি এবং গুলিগা—প্রাচীন ভৈতাল বিশ্বাসের দুই দেবতা ঘিরেই গল্পের মূল কেন্দ্রে। বলিউড হাঙ্গামার এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ছবিটি মূলত কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে পাঞ্জুরলি দাইভা এবং গুলিগা দাইভা—এই দুই আঞ্চলিক দেবতাকে ঘিরে। তুলু সংস্কৃতিতে এই দুই ভৈতাল দেবতাকে ঘিরে যে পৌরাণিক বিশ্বাস, তা বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসছে।
পাঞ্জুরলি হলেন শূকর-সদৃশ এক ঈশ্বরসম ব্যক্তিত্ব, যিনি সুরক্ষা ও শান্তির প্রতীক। অন্যদিকে গুলিগা হলেন এক ভয়ংকর এবং শক্তিশালী আত্মা, যিনি রোগ, দুর্ভাগ্য এবং বিশৃঙ্খলার সঙ্গে যুক্ত। এই দুই বিপরীত মেরুর দেবতাকে একত্রিত করে গড়ে উঠছে কান্তারার নতুন অধ্যায়।
ঋষভ শেট্টি আগেই বলেছিলেন, “এই ছবি শুধু একটি গল্প নয়, বরং এটি আমাদের শিকড়, আমাদের অস্তিত্বের এক মহাকাব্যিক অনুসন্ধান।”
শোনা যাচ্ছে, পারিশ্রমিকেও ইতিহাস গেছে এই ছবি! ১০০ কোটি টাকায় ঋষভ শেট্টি, সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ছবির লভ্যাংশেরও। এই ঐতিহ্য ঘেরা ছবি শুধুই চিত্রনাট্যে নয়, প্রোডাকশনেও বিশাল। কোইমোই-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘কান্তারা’র তুলনায় প্রিকুয়েলে ঋষভ শেট্টি ২৫ শতাংশ বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছেন। তাঁর মোট পারিশ্রমিক ছুঁয়েছে ১০০ কোটি টাকা—যা বর্তমানে ভারতের অন্যতম সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক।শুধু তাই নয়, তিনি প্রফিট শেয়ারিং চুক্তিতেও ঢুকেছেন, যেটা এখনকার অনেক বড় তারকাদের রেওয়াজ।
চলতি বছরের ২ অক্টোবর, গান্ধী জয়ন্তী এবং দশেরা উপলক্ষে এই প্রিক্যুয়েল বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাবে বড়পর্দায়।
