আর তিন দিনের অপেক্ষা। ন’বছর পর বড় পর্দায় মুক্তি পাবে ‘ধূমকেতু’। আরও নস্টালজিয়ার পথ ধরে দেব এবং শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের রসায়ন চাক্ষুষ করতে মুখিয়ে দর্শক। অগ্রিম বুকিংয়েও স্পষ্ট সেই ছাপ।
বুক মাই শো অ্যাপ অনুযায়ী শেষ ২৪ ঘণ্টায় ‘ধূমকেতু’র ১৫ হাজারেরও বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। সংখ্যাটা যে নেহাত কম নয়, তা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না। শনিবারও প্রায় ছ’হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। সেই তথ্য সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন শুভশ্রী স্বয়ং। ২০১৫ সালে যে ছবির মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, তা নিয়ে দর্শকের উন্মাদনা এক বিন্দু কমেনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আজকাল ডট ইন-কে ছবির পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা দুঃখের সময় বা আনন্দের সময় যখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি, তাঁরা ধূমকেতুর খোঁজ করেছেন। আমার মা যখন মারা যান একাধিক মানুষে নেটমাধ্যমে আমাকে সমবেদনা জানিয়েছিলেন। তার সঙ্গেই প্রশ্ন করেছেন, ‘আচ্ছা দাদা ধূমকেতু কবে আসছে?’ প্রশ্নটা একদমই সময়োপযোগী নয়। কিন্তু তাঁরা তাঁদের আবেগ চেপে রাখতে পারেননি।”
‘ধূমকেতু’-র সঙ্গেই মুক্তি পাচ্ছে ঋত্বিক রোশনের ‘ওয়ার ২’, রজনীকান্তের ‘কুলি’। বড় বাজেটের এই ছবিগুলির সঙ্গে এক প্রকার লড়াই করেই বাংলায় শো পেয়েছে কৌশিকের ছবি। জানা গিয়েছে, আপাতত ১১০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ধূমকেতু। রবিবার প্রিয়া সিনেমার কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত একটি টুইটে লেখেন, ‘যে ঝড়ের গতিতে ধূমকেতুর অগ্রিম বুকিং শুরু হয়েছে, তা অবিশ্বাস্য।’
আজকাল ডট ইন-কে অরিজিৎ বলেন, “ধূমকেতু অগ্রিম বুকিং দেখে খুবই বিস্মিত! গতকাল যা দেখলাম, বাংলায় শাহরুখের বেশ কিছু ছবির বুকিংয়ের তুলনায় এই ছবি এগিয়ে। এরকম ঘটনা আমি আগে দেখিনি।” তা হলে কি এখনও পর্যন্ত টলিউডের সব রেকর্ড ভাঙতে চলেছে দেব-শুভশ্রী জুটির ছ’নম্বর ছবি? প্রিয়ার কর্ণধারের উত্তর, “এটার উত্তর ১৪ আগস্ট পাওয়া যাবে। তবে আশা করতে ক্ষতি কী!”
২০০৯ সালে ‘চ্যালেঞ্জ’ দিয়ে শুরু হয়েছিল দেব-শুভশ্রী জুটির যাত্রা।। এরপর একসঙ্গে ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ‘রোমিও’, ‘খোকাবাবু’, ‘খোকা ৪২০’-এর মতো সুপারহিট সব ছবি। আজও মনে করা হয়, নায়ক-নায়িকার রসায়নের সুবাদেই বক্স অফিসে উপচে পড়ত ছবির ভাঁড়ার। ২০১৫ সালে ‘ধূমকেতু’র মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ন’বছর পর পর্দায় জাদুকাঠি ছুঁইয়ে দেওয়ার পালা এবার।
‘ধূমকেতু’র প্রচারেও কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। প্রচারের সুবাদেই প্রায় এক দশক পর মুখোমুখি হন দেব-শুভশ্রী। পুরনো সংলাপ আওড়ানো থেকে হিট গানে নাচ, ফেলে আসা রসায়নের ম্যাজিকে উস্কে দেন নস্টালজিয়া। 'ধূমকেতু'-র প্রচার কৌশলেরও প্রশংসা করেন টলিউড বিশেষজ্ঞ পঙ্কজ লাডিয়া। শুরু থেকে আলাদা প্রচার করলেও ছবির অগ্রিম বুকিং শুরুর আগে মঞ্চে একসঙ্গে দেব-শুভশ্রীর আবির্ভাব। পঙ্কজ বলছেন, "একজন এক্সিবিটর-ডিস্ট্রিবিউটর হিসাবেও আমি খুব আশাবাদী। ওঁরা যেভাবে প্রোমোশন করলেন, তা ছবিটিকে সাফল্যের আরো কাছে আনল। কারণ ওঁদের দু'জনের ফ্যান ফলোয়িংই দেখার মতো। এত দিন শুধুমাত্র গরমের ছুটি, দুর্গাপুজো বা বড়োদিনে বাংলা ছবি ভালো ব্যবসা করত। সেই ছক ভেঙে পুজোর এক মাস আগে ধূমকেতু ব্লকবাস্টার হলে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিরই মঙ্গল।”
