নজির গড়বে 'ধূমকেতু'। ন’বছর আগেই বুঝেছিলেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। সময়ের ঘষা হয়তো সত্যিই লাগেনি উন্মাদনায়। ছবিমুক্তির আগেই তা প্রমাণিত। হিন্দি ছবি দেখতে মধ্যরাতে প্রেক্ষাগৃহে মানুষের ঢল আগেও দেখা গিয়েছে রাজ্যে। কিন্তু বাংলা ছবির ক্ষেত্রে তা বিরল। ধূমকেতু এবার সেই অসাধ্যই সাধন করেছে।

রায়গঞ্জের প্রেক্ষাগৃহে রাত দুটোয় রাখা হয়েছ 'ধূমকেতু'র শো। দর্শকদের চাহিদা মেটাতেই এমন বন্দোবস্ত। কলকাতা তো বটেই, শহরতলিতেও দেব এবং শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা দেখার মতো। তাই সকলেই যাতে এই ছবি দেখার সুযোগ পান, তা মাথায় রেখেই মাঝরাতেও শো রাখার ভাবনা। নির্মাতারা জানাচ্ছেন, সেই শোয়ের টিকিট বিক্রির হারও কিছু কম নয়। শুধু তাই নয়, বুক মাই শো অনুযায়ী, খাস কলকাতার মাল্টিপ্লেক্সেও মুক্তির দিন সকাল সাতটা শো পেয়েছে ধূমকেতু। এমনটা বাংলা ছবির ক্ষেত্রে খুব বেশি দেখা যায় না বললেই চলে।

শাহরুখ খানের ছবি নিয়ে শেষ এমন উন্মাদনার সাক্ষী থেকেছে শহর। ২০২৩ সালে। রাত দুটো, ভোর পাঁচটার শোয় দেখানো প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হয়েছে 'জওয়ান'। বাদশাকে বড় পর্দায় দেখতে থিকথিকে ভিড় জমান অনুরাগীরা।  প্রথম ক’দিন সব শো-ই ছিল হাউজফুল। তবে বাংলা ছবির জন্যও যে এমন হতে পারে, তা আরও দীর্ঘ সময় পর মনে করাল 'ধূমকেতু'। অগ্রিম বুকিংয়েও স্পষ্ট সেই ছাপ। বুক মাই শো অ্যাপ অনুযায়ী শেষ ২৪ ঘণ্টায় ‘ধূমকেতু’র ১৫ হাজারেরও বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। সংখ্যাটা যে নেহাত কম নয়, তা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না। শনিবারও প্রায় ছ’হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। সেই তথ্য সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন শুভশ্রী স্বয়ং।

আজকাল ডট ইন-কে প্রিয়া সিনেমার কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত বলেন, “ধূমকেতু অগ্রিম বুকিং দেখে খুবই বিস্মিত! শনিবার যা দেখলাম, বাংলায় শাহরুখের বেশ কিছু ছবির বুকিংয়ের তুলনায় এই ছবি এগিয়ে। এরকম ঘটনা আমি আগে দেখিনি।” তা হলে কি এখনও পর্যন্ত টলিউডের সব রেকর্ড ভাঙতে চলেছে দেব-শুভশ্রী জুটির ছ’নম্বর ছবি? প্রিয়ার কর্ণধারের উত্তর, “এটার উত্তর ১৪ আগস্ট পাওয়া যাবে। তবে আশা করতে ক্ষতি কী!”

ন’বছর আগে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল 'ধূমকেতু'র। নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। দর্শকের অপেক্ষা যদিও থামেনি। অবশেষে চলতি বছরে প্রযোজক রানা সরকার এই ছবিকে বড়পর্দায় আনার ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই শুরু দিন গোনা।

২০০৯ সালে ‘চ্যালেঞ্জ’ দিয়ে শুরু হয়েছিল দেব-শুভশ্রী জুটির যাত্রা।। এরপর একসঙ্গে ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ‘রোমিও’, ‘খোকাবাবু’, ‘খোকা ৪২০’-এর মতো সুপারহিট সব ছবি। আজও মনে করা হয়, নায়ক-নায়িকার রসায়নের সুবাদেই বক্স অফিসে উপচে পড়ত ছবির ভাঁড়ার। ২০১৫ সালে ‘ধূমকেতু’র মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ন’বছর পর পর্দায় জাদুকাঠি ছুঁইয়ে দেওয়ার পালা এবার।