সাধারণত তারকা সন্তানরা অভিনয়ের পথ বেছে নেন, কিন্তু শাহরুখ পুত্র আরিয়ান পরিচালকের ভূমিকায় পদচিহ্ন রাখতে চেয়েছেন। প্রথমবার পা ফেলেই পরিবেশন করেছেন বলিউডের অন্দরের হাল হকিকত, কটাক্ষ এবং ছদ্ম-রসায়নের এক মজার ককটেল। বলিপাড়ার বিতর্কিত নানা বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া করায় মুক্তির পর থেকেই রীতিমতোর চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘দ্য ব্যা***ডস অফ বলিউড’। তবে সেই সিরিজে ক্যামিওর জেরেই বিপাকে পড়লেন রণবীর কাপুর।
সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য ব্যা**ডস অফ বলিউড’ সিরিজের একটি দৃশ্যে রণবীর কাপুরকে ই-সিগারেট টানতে দেখা গিয়েছে। আর সেই দৃশ্য নিয়েই আপত্তি জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি)। ই-সিগারেটের দৃশ্যটিকে আইন লঙ্ঘনকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিশন। মুম্বই পুলিশ কমিশনারকে ‘দ্য ব্যা**ডস অফ বলিউড’-এর নির্মাতা-প্রযোজক এবং রণবীর কাপুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার আর্জি জানিয়েছে সংস্থা। যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ জানানো হয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছে।
আরও পড়ুনঃ শাহরুখ না সলমন— কার অনুকরণে আরিয়ান তৈরি করেছেন তাঁর ওয়েব সিরিজের নায়ককে? ফাঁস করলেন অভিনেতা নিজেই!
এনএইচআরসি-এর মতে, সিরিজে ই-সিগারেট প্রদর্শন করা দেশের ২০১৯ সালের “প্রিহিবিশন অব ইলেকট্রনিক সিগারেটস অ্যাক্ট” এর পরিপন্থী। এই আইন অনুযায়ী, ভারতে ই-সিগারেটের ব্যবহার, উৎপাদন, বিক্রি এবং বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। কমিশন আশঙ্কা করছে যে, এই দৃশ্য যুবসমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে । কমিশন নেটফ্লিক্স-কেও অনুরোধ করেছে, তারা যদি ভবিষ্যতে এমন দৃশ্য সম্প্রচারের অনুমোদন দেয়, তবে তা অবশ্যই স্বাস্থ্য সতর্কতা বা ডিসক্লেইমার সহ প্রদর্শন করতে হবে। দর্শককে সচেতন করতেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে কমিশন। এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত রণবীর কাপুর, নেটফ্লিক্স বা সিরিজের প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ‘দ্য ব্যা**ডস অফ বলিউড’ সিরিজটি মূলত হিন্দি সিনেমা জগতের নানান ছদ্ম সম্পর্কের ব্যাপার-স্যাপার উন্মোচন করে। অভিনেতা, প্রযোজক, সাংবাদিক—কেউ রেহাই পায়নি আরিয়ানের হাত থেকে। সিরিজের প্রধান চরিত্র আসমান সিং-এর মাধ্যমে দর্শক পাচ্ছেন সেই পুরনো ৯০-এর দশকের বলিউডের স্বতঃস্ফূর্ত, স্বাভাবিক জয়গান। এককথায় ‘ব্যা**ডস অফ বলিউড’ শুধুই একটি হালকা চালের শো নয়, এটি বলিউডের ভেতরের হাস্যরসিকতা, নস্টালজিয়া এবং নতুন প্রজন্মের উদ্যমের এক পূর্ণাঙ্গ সংমিশ্রণ। আরিয়ান খানের দিকনির্দেশনায় লক্ষ্য যেমন তার চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন, তেমনই দর্শকরা পাবেন পুরনো বলিউডের স্বাদ আর নতুন কটাক্ষের এক দারুণ ককটেল।
এই সিরিজ প্রমাণ করে যে বলিউডের পরবর্তী প্রজন্ম শুধু বড় নাম নয়, স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি এবং সাহসিকতার প্রতীকও হতে পারে। আরিয়ান খান এবং তার ‘ দ্য ব্যা***ডস অফ বলিউড’ সেই পথের ঠিক প্রথম ধাপ।
