বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তের বর্তমান অবস্থার কথা শুনলে শিউরে উঠবে গা! ২০১৮ সাল থেকে নিজের বাড়িতেই এক রকম ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। এবার সেই যন্ত্রণা আর চেপে রাখতে পারলেন না তনুশ্রী। চোখের জল ফেলতে ফেলতেই ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে জানালেন নিজের উপর হওয়া লাগাতার অত্যাচারের কথা। বললেন, “নিজের বাড়িতেই আমি নিরাপদ নই। কেউ যেন আমাকে ধীরে ধীরে শেষ করে দিচ্ছে।”

তনুশ্রীর কথায়, “কয়েক বছর ধরে আমি নিজের বাড়িতেই ভয়ংকর ভাবে হয়রানির শিকার। প্রচুর জিনিস চুরি হয়েছে, নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, বাইরে থেকে প্রায়ই দরজায় মারধর করা হয়। আমি অসুস্থ হয়ে পড়ছি, মানসিকভাবে আর সহ্য করতে পারছি না।” তিনি জানান, এতদিন একাই এসব সামলানোর চেষ্টা করলেও এখন পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তাই বাধ্য হয়েই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

ভিডিওতে তনুশ্রীকে দেখে অবাক অনুরাগীরা। একসময়ের ঝলমলে চেহারার অভিনেত্রীকে যেন চেনাই যায় না—ওজন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে, চোখে মুখে অসুস্থতার ছাপ স্পষ্ট। জানা যাচ্ছে, মানসিক চাপে ভুগতে ভুগতেই তাঁর এই অবস্থা। নিজেই বলেছেন, “কোনও কাজ মন দিয়ে করতে পারছি না, শরীর ভেঙে পড়েছে।”

‘আশিক বানায়া আপনে’ খ্যাত এই অভিনেত্রী এক সময় মিটু আন্দোলনের বড় মুখ ছিলেন। নানা পাটেকর-সহ ইন্ডাস্ট্রির নানা ব্যক্তিত্বকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তিনি। সে সময় থেকেই তাঁর জীবন এক অন্য ধরণের ঝড়ের মুখে পড়ে বলে অনেকের অনুমান।

তবে এতদিন কাজের পরিবেশ নিয়ে সরব হলেও, নিজের বাড়িতেই যে তিনি এত বড় সন্ত্রাসের মুখে দিন কাটাচ্ছেন—তা এতদিন জানতেই পারেননি কেউ। এবার আর মুখ বুজে না থেকে, সমাজের কাছেই সাহায্যের আবেদন জানালেন তনুশ্রী দত্ত। তাঁর প্রশ্ন, “নিজের বাড়িতে যদি কেউ নিরাপদ না থাকেন, তাহলে কোথায় যাব?”

এই অবস্থায় তনুশ্রীর পাশে কে আছেন, তা স্পষ্ট নয়। পরিবার বা বন্ধুবান্ধবের থেকে কতটা সহায়তা পাচ্ছেন, তাও অজানা। তবে এটা নিশ্চিত, এই কঠিন সময়ে তনুশ্রীর পাশে একজন নির্ভরযোগ্য সাপোর্ট সিস্টেম দরকার, না হলে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা।

এই ঘটনা শুধু একজন তারকার নয়, বরং প্রশ্ন তোলে আমাদের সমাজের নিরাপত্তার ছবিটা নিয়েও। একজন মহিলা যদি নিজের বাড়িতেও নিরাপদ না থাকেন, তাহলে তাঁর নিরাপত্তা কোথায়?

 

প্রসঙ্গত,  ২০০৮ সালে একটি ফিল্মের সেটে বাঙালি অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তকে নানা পাটেকর জোর করে ঘনিষ্ঠ হতে চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
গোটা বলিউডে ঢেউ উঠেছিল মিটু আন্দোলনের। সৃষ্টি হয়েছিল এই ঘটনার হাত ধরেই। ২০০৮ সালে একটি ফিল্মের সেটে বাঙালি অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তকে নানা পাটেকর জোর করে ঘনিষ্ঠ হতে চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ।২০১৮ সালে মিটু আন্দোলনের সময় নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন অভিনেতা তনুশ্রী দত্ত। ২০০৮ সালে 'হর্ন ওকে প্লিজ' ছবির একটি গানের শ্যুটিংয়ের সময় তিনি তাঁর সঙ্গে শ্লীলতাহানি করেছিলেন বলে অভিযোগ নিয়ে নতুন করে বিবৃতি দিলেন নানা পাটেকর।এক সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান অভিনেতা বলেন, তিনি প্রথম থেকেই জানতেন যে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, যে কারণে তিনি কখনও রাগ করেননি।