বলিউডের অন্দরে গুঞ্জন ছড়িয়েছে বহুদিন—অভিনেতা গোবিন্দা ও তাঁর স্ত্রী সুনীতা আহুজা-র সম্পর্কে নাকি ভাঙন ধরেছে। এমন আবহেই বলিউডের গোবিন্দ এবং তাঁর স্ত্রী সুনীতা আহুজা আবারও শিরোনামে। তবে এ বার নতুন কোনো সিনেমা বা শো-এর কারণে নয়, বরং তাঁদের বৈবাহিক জীবনের ভবিষ্যৎ ঘিরে চলা গুঞ্জনকে কেন্দ্র করে। গত কয়েক মাস ধরে জোর গুঞ্জন—দু’জনের সম্পর্কে ফাটল, এমনকি ডিভোর্সের পথে হাঁটছেন তাঁরা।

তবু সেই সমস্ত খবরকেই যেন চাপা দিল বৃহস্পতিবারের দৃশ্য। গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে গোবিন্দা–সুনীতা দু’জনকে দেখা গেল একসঙ্গে। বহু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়—যেখানে পরিবারের সঙ্গে উষ্ণতায় বরণ করে নেওয়া হচ্ছে গণপতি বাপ্পাকে। সুনীতা পরেছিলেন বেগুনি রঙের শাড়ি, আর গোবিন্দ লাল কুর্তা-পাজামায় একেবারে উৎসবমুখর। তাঁদের ছেলে যশবর্ধন আহুজাকেও দেখা গেল আনন্দঘন পরিবেশে। পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীদের হাতে মিষ্টি তুলে দেওয়ার দৃশ্য মুহূর্তে মন ছুঁয়ে গেছে নেটিজেনদের।

তবে খবরের ঝড়ে খানিকটা জল ঢাললেন গোবিন্দার ম্যানেজার শশী সিনহা। এক বিবৃতিতে তিনি বললেন, “এটা পুরনো খবর। প্রায় ছয়-সাত মাস আগে সুনীতা ম্যাডাম সত্যিই একটি ডিভোর্স পিটিশন দাখিল করেছিলেন বান্দ্রা ফ্যামিলি কোর্টে। ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর। অভিযোগে ছিল নিষ্ঠুরতা, অবহেলা এবং বিশ্বাসঘাতকতা। তবে তার পর থেকে বিষয়টা এখন পারিবারিকভাবে মিটমাট হচ্ছে। নতুন কিছু ঘটেনি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে।”

অর্থাৎ, আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনা এখনও আছে বটে, কিন্তু প্রকাশ্যে গোবিন্দা–সুনীতা দু’জনেই মুখ বন্ধ রেখেছেন।

আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মামলাটি এখন আদালতে এগোয়নি। বরং পরিবারই চাইছে ভেতরে ভেতরে মিটিয়ে নিতে। আর তাই সম্ভবত উৎসবের এই সময় নিজেদের ‘ইউনাইটেড ফ্রন্ট’ দেখাতে চাইলেন গোবিন্দা–সুনীতা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক, কিন্তু... যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিভোর্স নিয়ে গুঞ্জন নতুন করে জোর পেয়েছে, গোবিন্দের টিম সাফ জানিয়ে দিয়েছে—“এখনই কোনও বিচ্ছেদের সম্ভাবনা নেই।”ফলে বলিউডের এই রঙিন পরিবারে আপাতত আলাদা হওয়ার নয়, বরং মিলনের বার্তাই ভেসে আসছে। অন্তত গণেশ চতুর্থীর ছবিগুলো তাই বলছে—

 “গণপতি বাপ্পা মোরিয়া! পরিবার আগে, ঝড় পরে।”

 

 

প্রসঙ্গত, ছবি নির্মাতা তথা সেন্সর বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান পহলাজ নিহালনি এবার স্পষ্ট জানালেন, তিনি কোনওদিনও এমন কিছু দেখেননি যা তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দেয়। বরং তাঁর মতে, “ওরা বন্ধুর মতো থাকে, একসঙ্গে কাজ করে, একসঙ্গে জীবন কাটায়।”
সুনীতার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন পহলাজ। সম্প্রতি সুনীতা বলেছিলেন—চারপাশের মানুষ তাঁকে বেড়ে উঠতে দেয় না। এই মন্তব্যের সপক্ষে দাঁড়িয়েই পহলাজ বলেন—“ও যা বলেছেন, ভুল বলেননি। একদম ঠিকই বলেছেন। পণ্ডিতরা যেভাবে বিভ্রান্তি তৈরি করে রেখেছে, আসল সমস্যা সেখানেই।”

 কেন গোবিন্দাকে তিনি কখনও পরামর্শ দেননি, সেই বিষয়েও মুখ খুললেন নিহালনি।  গোবিন্দাকে নিয়ে বারবার ভুল বোঝাবুঝির প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি একেবারেই নিরুৎসাহিত করলেন “পরামর্শ দেওয়া”-র প্রসঙ্গ। তাঁর স্পষ্ট কথা—“না, জীবনে কাউকে পরামর্শ দেওয়া খুবই ভুল। এতে নিজেকেই নীচে নামিয়ে ফেলা হয়। সত্যি বলা আর সত্যি শোনা—এ দু’য়ের মধ্যে বিশাল পার্থক্য। সবাই শুনতে চায় না।”