কঙ্গনা রানাউত মানেই খোলামেলা মতামতের পাশাপাশি বিস্ফোরক মন্তব্য। রাজনৈতিক হোক অথবা ব্যক্তিগত— তিনি কখনওই কথায় কাটছাঁট করেন না। সম্প্রতি, আবারও বলিউড ‘কুইন’ চড়ালেন বিতর্কের ঝড়। এক সাক্ষাৎকারে ডেটিং অ্যাপকে কড়া আক্রমণ করে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ডেটিং অ্যাপ আসলে সমাজের ‘নর্দমা’, আর লিভ-ইন সম্পর্ক নাকি একেবারেই ‘নারী-সহায়ক নয়’! কোনওভাবেই নয়। তাঁর মতে, আধুনিক প্রেম আর এই অ্যাপ-সংস্কৃতি পশ্চিমা ভাবধারা থেকে ধার করা, যা ধীরে ধীরে ভারতীয় সংস্কৃতিকে ক্ষয় করছে।
সম্প্রতি, দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনা সরাসরি বলেন,“আমি কোনওদিন ডেটিং অ্যাপে থাকতে চাইনি। ওটাই আমাদের সমাজের আসল নর্দমা। সবারই কিছু না কিছু প্রয়োজন থাকে— আর্থিক, শারীরিক বা অন্য কিছু। সেই প্রয়োজন মেটাতে অ্যাপে যাওয়া অত্যন্ত রুচিহীন ব্যাপার। এটা আধুনিক ডেটিং-এর এক ভয়াবহ চিত্র।”
অভিনেত্রীর কথায়, যাঁরা নিজের উপর ভরসা হারান বা ক্রমাগত স্বীকৃতির খোঁজে থাকেন, তাঁরাই এই ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করেন। কঙ্গনার যুক্তি,“ভাল মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় অফিসে, কলেজে বা বাবা-মায়ের মাধ্যমে। যাঁরা জীবনে কিছু অর্জন করতে পারেননি, তারাই ডেটিং অ্যাপে ঘোরাফেরা করেন। অফিস, আত্মীয়স্বজন কিংবা পিতামাতার মাধ্যমে কাউকে খুঁজে না পেয়ে যদি আপনি শেষমেশ অ্যাপে পৌঁছন, তাহলে আপনার চরিত্র কেমন, তা বোঝাই যায়।”
তিনি আরও একধাপ এগিয়ে এই অ্যাপ ব্যবহারকারীদের সরাসরি ‘হেরো’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এমনকী একত্রবাস অর্থাৎ লিভ-ইন সম্পর্ক নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে পিছপা হননি কঙ্গনা। শুধু ডেটিং অ্যাপ নয়, কঙ্গনা এবার তীব্র আক্রমণ করলেন লিভ-ইন সম্পর্ককেও। তার মতে, ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিবাহের মর্যাদা অটুট রাখা জরুরি।
একত্রবাস নিয়ে কঙ্গনার মন্তব্য,“আমার নিজে একাধিক সম্পর্কে ছিলাম। অন্যদেরও দেখেছি। কিন্তু আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, লিভ-ইন সম্পর্কটি মোটেই নারীদের জন্য উপযোগী নয়। আপনি যদি হঠাৎ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন, তখন কে আপনাকে সাহায্য করবে? গর্ভপাত করাতে গেলে কে পাশে থাকবে? পুরুষরা শিকারি, তারা যেকোনও মহিলাকে গর্ভবতী করিয়ে সহজেই সরে যেতে পারে।”
কঙ্গনার এই তীব্র মন্তব্য ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁর এইসব মন্তব্য ঘিরে তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে। একদিকে অনেকে তাঁর এই সোজাসাপটা কথা বলার জন্য প্রশংসা করছেন, অন্যদিকে নেটিজেনদের এক বড় অংশের মতে, অভিনেত্রীর এই বক্তব্য অতিরিক্ত রূঢ় এবং পক্ষপাতদুষ্ট। সমর্থকরা কঙ্গনার ঐতিহ্যপন্থী অবস্থানকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন, তবে সমালোচকরা বলছেন—এতে নারীর স্বাধীনতাকে খাটো করা হচ্ছে, আর পুরনো স্টেরিওটাইপকেই আরও শক্ত করা হচ্ছে। কেউ বলছেন, কঙ্গনার মতো স্পষ্টভাষী তারকার প্রয়োজন সমাজে; আবার অনেকেই তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন নারীবিদ্বেষী মন্তব্যের জন্য।
কঙ্গনা রানাউত বরাবরই নিজের স্পষ্টভাষী চরিত্রের জন্য পরিচিত। তবে এবারও তার মন্তব্য বলিউড ছাড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ‘ডেটিং অ্যাপ বনাম ভারতীয় সংস্কৃতি’ বিতর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
