মুম্বইয়ে গণেশচতুর্থী কীভাবে, কত সাড়ম্বরে পালন করা হয় সে আসমুদ্রহিমাচল ভারত বিদিত। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ সামিল হন এই উৎসবে। এ বছরও তার অন্যথা হয়নি। তবে গণেশপ্রতিমা নিরঞ্জনের পালা চোকার পর আরব সাগরের তীরে এখনও রয়ে গিয়েছে তার ছাপ। জুহু সৈকতে সেই আবর্জনা নিজের হাতে পরিষ্কার করতেই নেমে পড়লেন অক্ষয় কুমার!

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীসের স্ত্রী তথা সমাজকর্মী অমৃতা ফড়নবীস রবিবার মুম্বইয়ের জুহু সৈকতে আয়োজন করলেন এক বিশেষ বিচ ক্লিনআপ ড্রাইভ। গণেশ বিসর্জনের পর একদিনেই সৈকতের বালিতে জমে ওঠা অসংখ্য প্রতিমার ভগ্নাংশ, প্লাস্টিক আর আবর্জনা সরাতেই এই উদ্যোগ।
অমৃতার সংস্থা ‘দিব্যজ ফাউন্ডেশন’-এর তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার, পাশাপাশি বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের কমিশনার। বিভিন্ন এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও ঝাঁপিয়ে পড়েন অভিযানে।
‘উৎসব যেমন আমাদের, সৈকতও তেমন আমাদের দায়িত্ব’ স্পষ্ট বার্তা দিলেন অমৃতা। বললেন, “বিসর্জনের পর জুহু বিচে আজ বড়সড় পরিষ্কার অভিযানের আয়োজন করেছি। নানা সংস্থা এগিয়ে এসেছে। কারণ সৈকত পরিষ্কার রাখা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, “যেভাবে আমরা উৎসব পালন করি, তেমনই উৎসব শেষে প্রকৃতিকে রক্ষা করাও জরুরি। একটাই পৃথিবী, আর সেটা রক্ষার দায়িত্ব সবার।”
এই সাফাই অভিযানে অক্ষয় কুমারকে দেখা গেল সৈকতে নামতে, স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ময়লা তুলতে। উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে উচ্ছ্বাসও চোখে পড়ার মতো।
গোটা বিষয়ে অক্ষয় মন্তব্য করেন— “এমন উদ্যোগ আসলে শুধু পরিবেশের জন্য নয়, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও দারুণ প্রয়োজনীয়।”
পরিবেশবান্ধব বিসর্জনের ডাক ফের একবার দিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী। অমৃতা আগেই আহ্বান জানিয়েছিলেন, গণেশ বিসর্জনে পরিবেশবান্ধব কৃত্রিম পুকুর ব্যবহার করার জন্য। কারণ বিসর্জনের সময় নদী-সাগরে প্রতিমার ভগ্নাংশ জমে গিয়ে দূষণ মারাত্মক আকার নেয়।
এ বছর ২৭ অগস্ট থেকে শুরু হওয়া দশদিনব্যাপী গণেশ চতুর্থী সমাপ্ত হয় ৬ সেপ্টেম্বর মহা-বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। উচ্ছ্বাসে ভরা মুম্বই ও মহারাষ্ট্রের নানা প্রান্তে লক্ষ লক্ষ ভক্ত শ্রীগণেশকে বিদায় জানান। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস দেশ-বিদেশের ভক্তদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বার্তা দেন—“গণপতি বাপ্পা আমাদের শক্তি দিন, যাতে দেশের সমস্যাগুলোর মোকাবিলা করতে পারি।”
তবে উৎসবের এই আনন্দঘন সমাপ্তির মাঝেই অমৃতা ফড়নবীসের সৈকত পরিষ্কার উদ্যোগ যেন স্মরণ করিয়ে দিল— উৎসব শেষ হলেও দায়িত্ব শেষ হয় না। প্রকৃতিকে রক্ষা করা আমাদের সবার কর্তব্য।
