নিজস্ব সংবাদদাতা: চলতি বছর কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের কম্পিটিশন অন ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজস ফিল্মস বিভাগে মনোনীত হয়েছে 'জগন'। রবিবার নন্দনে সে ছবির প্রদর্শনীর পর নন্দনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ছবির মুখ্যাভিনেতা সুব্রত দে এবং অভিনেতা দেবাশিস মন্ডল।  সঙ্গে ছিলেন ছবির পরিচালক সঞ্জীব দে। 

 

ছবিতে ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত জগন। একমাত্র মা-ই তাকে বোঝে। অন্যদের কাছে তাঁর অস্তিত্ব স্রেফ এক পাগল হিসাবে।  প্রকৃতিকে জগন বোঝে তাদের মতো করেই, ভালবাসে। আর সুর। সবকিছুর মধ্যেই সে সুর খুঁজে নেয়। হরিনাম সংকীর্তনের মধ্যে আশ্রয় (নাকি শান্তির?) অন্তহীন খোঁজ করে চলে সে। উবু হয়ে বসে খিচুড়ি খায়। খাতা-পেন্সিল হাতে নিয়ে আঁকাবাঁকা কী লেখে তা সে নিজেই জানে। এটা চা খাবার জন্য এই দোকান সেই দোকান ঘুরঘুর করে। বকা খেয়েও শিশুর মতো হাসে। সাংবাদিক সম্মেলনে পরিচালক ফাঁস করেন তাঁর আপন দাদাকে দেখেই এই ছবির গল্প লিখেছেন তিনি। সেই দাদা আর বেঁচে নেই আজ, কিন্তু জগনকে তৈরি করার রসদ তিনি পেয়েছিলেন সেই দাদার থেকেই। এর আগে সঞ্জীবের  ‘থ্রি স্মোকিং ব্যারেলস’ ছবিতে দেখা গিয়েছিল সুব্রতকে। ছিলেন ‘পোচার’-এর ভূমিকায়।  

 

 

'জগন'-এর কথা বলতে গিয়ে আবেগে গলা ধরে আসে সুব্রত দত্তর। তিনি জানান, এ যাবৎ কেরিয়ারে জগন তাঁর অভিনয় জীবনের সবথেকে কঠিন চরিত্র। কীভাবে নিজেকে তৈরি করলেন জগন হয়ে ওঠার জন্য ? খানিক থেমে অভিনেতার জবাব, " যেকোনও চরিত্রে অভিনয়ের আগে আমি আমার আশেপাশে চেনা মানুষের মুখ খুঁজি। তারপর তাঁকে লক্ষ্য করি। এছাড়া পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা তো থেকেই। জগন-এর জন্য প্রায় মাস দেড়েক নখ কাটিনি, চুল-দাড়ি বাড়িয়েছিলাম। ২৫ দিন টানা না কাচা নোংরা পাজামা পরেছি, অন্তর্বাস পর্যন্ত পারিনি চরিত্রটিকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলব বলে। এর সঙ্গে দু'পা দুদিকে করে টেনে টেনে হেঁটেছি -সব মিলিয়ে খুব সহজ ব্যাপার ছিল না।"  এরপরেই নিজস্ব ছন্দে হাসতে হাসতে অভিনেতা বলেন, "তাই তো এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েই পরিচালককে জিজ্ঞেস করেছিলাম অভিনয় যে করব, টাকা কত দেবে?"  'জগন'-এর কথা শুনে ততক্ষণে হাসির রোল শুরু হয়েছে বৈঠকে।