চলতি বছর ৭১ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কারা পাবেন, এই তালিকা আগেই ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল। এবার পালা পুরস্কার প্রদানের। ২৩ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ মঙ্গলবার নতুন দিল্লিতে ৭১ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসর বসেছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করলেন তারকারা। প্রত্যেক বছরের মতোই এবারও ভারতীয় সিনেমার সেরা শিল্পী, পরিচালক, গায়ক ও প্রযুক্তিগত টিমের কাজকে সম্মানিত করা হল।

 

 

 

 

সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল কিংবদন্তি অভিনেতা মোহনলাল। দীর্ঘ অভিনয় জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে দেওয়া হল ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মান—দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। মালয়ালম সিনেমায় তাঁর অবদান অপরিসীম, আর এই পুরস্কার তাঁর অভিনয়জীবনের সোনালি পালক হয়ে রইল।

 

 

 

 

অন্যদিকে বলিউডে ইতিহাস তৈরি করলেন শাহরুখ খান। প্রথমবারের মতো তিনি পেলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেতার সম্মান। তাঁর সঙ্গে এই পুরস্কার ভাগ করে নিলেন প্রতিভাবান অভিনেতা বিক্রান্ত ম্যাসি, যিনি ‘টুয়েলভথ ফেল’-এ দুর্দান্ত অভিনয় করে দর্শক ও সমালোচকের মন জয় করেছেন। শাহরুখের জন্য এই পুরস্কার তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, আর বিক্রান্তের জন্য এটি এক বিশাল স্বীকৃতি।

 

 

 

 

সবার মধ্যে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে উঠলেন রানি মুখার্জি। ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’-তে এক মায়ের সংগ্রামী চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য তিনি পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। অনেকদিন পর জাতীয় পুরস্কারে বলিউডের কোনও শক্তিশালী নারী চরিত্রের এভাবে মূল্যায়ন দর্শককে উচ্ছ্বসিত করেছে।

 

 

 

 

ছবির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সম্মান—সেরা ফিচার ফিল্ম—পেয়েছে ‘টুয়েলভফ ফেল’। সাধারণ মানুষের অনুপ্রেরণামূলক গল্প নিয়ে তৈরি এই ছবি ইতিমধ্যেই বক্স অফিসে সফলতা পেয়েছিল। এবার জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হয়ে ছবিটি আরও একধাপ ওপরে পৌঁছে গেল।

 

 

 

পরিচালনার ক্ষেত্রে নজর কাড়লেন সুদীপ্ত সেন। তাঁর বিতর্কিত কিন্তু আলোচিত ছবি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ তাঁকে এনে দিল সেরা পরিচালকের সম্মান। সামাজিক বার্তা, বাস্তবতার উপস্থাপন এবং পরিচালনার দৃঢ়তায় এই পুরস্কার তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

 

 

আরও পড়ুন: সুশান্তের মৃত্যুর পর জেলের ভিতর 'নাগিন ডান্স' করেছিলেন রিয়া চক্রবর্তী! ফাঁস হল কোন গোপন সত্যি?

 

 

এছাড়াও বিনোদনমূলক ছবির মধ্যে জয় হল করণ জোহরের ছবি ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’র। এটি নির্বাচিত হয়েছে সেরা ফিচার ফিল্ম প্রোভাইডিং হোলসাম এন্টারটেইনমেন্ট বিভাগে। অন্যদিকে, দেশপ্রেম ও সামাজিক মূল্যবোধ প্রচারের জন্য মেঘনা গুলজারের ছবি ‘স্যাম বাহাদুর’ পেয়েছে বিশেষ পুরস্কার।

 

 

 

 

এবারের পুরস্কারে বলিউড ও আঞ্চলিক সিনেমা একসঙ্গে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার দাপট যেমন বজায় ছিল, তেমনি হিন্দি সিনেমাও ঝলসে উঠেছে শাহরুখ, রানি ও বিক্রান্তের সাফল্যে। সব মিলিয়ে ৭১তম ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস হয়ে উঠেছে আবেগ, গর্ব আর সৃজনশীলতার উৎসব। দেশের নানা প্রান্তের শিল্পীরা একই মঞ্চে সম্মানিত হলেন, আর দর্শক পেলেন ভারতীয় সিনেমার বহুমাত্রিক শক্তির এক দুর্দান্ত ঝলক। এ বছর যে কজন শিল্পী পুরস্কার পেলেন, তাঁরা নিঃসন্দেহে আগামী প্রজন্মের জন্য নতুন প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।