আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডিজিটাল পেমেন্টের ক্ষেত্রে পরবর্তী ধাপে এগোচ্ছে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। ইতিমধ্যেই ইউপিআই-এ রুপে ক্রেডিট কার্ড ও ক্রেডিট লাইন যুক্ত হয়েছে। এবার নতুন উদ্যোগ হিসেবে ব্যবহারকারীরা তাদের ইউপিআই লেনদেনকে ইএমআইতে রূপান্তর করার সুযোগ পাবেন। এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল ক্রেডিট অ্যাক্সেস বৃদ্ধি, উচ্চমূল্যের কেনাকাটা সহজ করা এবং ইউপিআইকে ভারতের প্রধান পেমেন্ট সিস্টেম হিসেবে আরও শক্তিশালী করে তোলা।
কী আসছে নতুন?
NPCI এমন এক মডেল প্রস্তুত করছে, যেখানে ফিনটেক কোম্পানিগুলো ইউপিআই-তে ইএমআই সুবিধা আনতে পারবে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা কিউআর কোড স্ক্যান করে পেমেন্ট করার সঙ্গে সঙ্গে সেই লেনদেনকে মাসিক কিস্তিতে ভাগ করে দিতে পারবেন। এই ব্যবস্থা অনেকটা কার্ড-ভিত্তিক পেমেন্টের মতো, যেখানে দোকানে কার্ড সোয়াইপ করার সময় সরাসরি ইএমআই তে রূপান্তর করার সুযোগ থাকে।
রুপে ক্রেডিট কার্ড ইউপিআই-এ চালু হওয়ার পর থেকেই গ্রাহকদের সাড়া বাড়ছে। পাশাপাশি ক্রেডিট লাইনও যুক্ত হয়েছে। ফলে ইউপিআই এখন কেবল সাধারণ লেনদেন নয়, ক্রেডিট ব্যবস্থাও ক্রমে অন্তর্ভুক্ত করছে। ইতিমধ্যেই নানা ব্যাংক নাভি, পেটিএম-এর মতো ফিনটেক প্লেয়ারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই সুবিধা আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: এসআইপি’র মাধ্যমে ১২ বছরে ১ কোটি টাকা: কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে?
নাভি-র সিইও রাজীব নরেশ জানিয়েছেন, ইএমআই ফিচারটি এখনও চালু হয়নি, তবে পরবর্তী রোলআউটে গ্রাহকরা শর্তসাপেক্ষে কিউআর স্ক্যানের সময়ই পেমেন্টকে ইএমআই তে ভাগ করতে পারবেন। অন্যদিকে, পেউ-এর সিইও অনির্বাণ মুখার্জি বলেন, ইউপিআই-তে তাৎক্ষণিক ক্রেডিট চালুর ফলে বিরাট সম্ভাবনা তৈরি হবে।
একজন গুরগাঁও-ভিত্তিক ফিনটেক প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, ইউপিআই-এর মাধ্যমে ক্রেডিট লাইন চালুর ক্ষেত্রে এনপিসিআই প্রায় ১.৫% ইন্টারচেঞ্জ ফি নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এর ফলে সরাসরি একটি আয়ের উৎস তৈরি হবে।
চলতি মাস থেকেই ইউপিআই লেনদেনের সীমা সংশোধন করা হয়েছে। নতুন সীমাগুলি হল—
বিনিয়োগ ও বিমা: প্রতি লেনদেনে ২ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ করা হয়েছে। দৈনিক সীমা ১০ লাখ।
সরকারি ই-মার্কেটপ্লেস ও কর প্রদান: সীমা ১ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ।
ভ্রমণ বুকিং: এক লেনদেনে ৫ লাখ পর্যন্ত (দৈনিক সীমা ১০ লাখ)।
ক্রেডিট কার্ড বিল পরিশোধ: একবারে সর্বোচ্চ ৫ লাখ, দৈনিক সীমা ৬ লাখ।
ঋণ ও ইএমআই সংগ্রহ: এক লেনদেনে সর্বোচ্চ ৫ লাখ, দৈনিক সীমা ১০ লাখ।
গহনা ক্রয়: আগে সীমা ছিল ১ লাখ, এখন এক লেনদেনে ২ লাখ পর্যন্ত করা যাবে। দৈনিক সীমা ৬ লাখ।
টার্ম ডিপোজিট: ২ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ করা হয়েছে।
NPCI-এর এই নতুন উদ্যোগ কেবল ইউপিআই-কে সাধারণ লেনদেনের মাধ্যম রাখবে না, বরং উচ্চমূল্যের কেনাকাটা ও ক্রেডিট লেনদেনকেও সহজ করবে। ইএমআই ফিচার চালু হলে গ্রাহকরা প্রতিদিনের লেনদেনেই কিস্তি সুবিধা পাবেন, যা বিশেষ করে বড় কেনাকাটা ও জরুরি ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বস্তি আনবে। একইসঙ্গে ব্যাংক ও ফিনটেক প্লেয়ারদের জন্যও এটি হবে নতুন আয়ের পথ। ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট যাত্রায় এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় পদক্ষেপ, যা ইউপিআইকে আরও বহুমুখী ও শক্তিশালী প্ল্যাটফর্মে পরিণত করবে।
