আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত সপ্তাহে মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে সোনার দাম নতুন রেকর্ড গড়ে ১০ গ্রামে ১,০৬,৬৬৬–এ পৌঁছায়। তবে শীর্ষস্থানে পৌঁছানোর পরপরই প্রায় ০.৫০ শতাংশ দাম কমে যায়। এই পতনের মূল কারণ ছিল মার্কিন ডলারের পুনরুজ্জীবন, যা ঘটে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ–এর ২৫ বেসিস পয়েন্টস সুদহার কমানোর পর। তবুও MCX–এ টানা পঞ্চম সপ্তাহেও সোনার দাম ইতিবাচক ধারায় থেকে যায়। অক্টোবর ২০২৫ মেয়াদি গোল্ড ফিউচার কন্ট্রাক্ট শুক্রবার ১,০৯,৯০০–এ বন্ধ হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে COMEX স্বর্ণের দামও নতুন উচ্চতায় পৌঁছে ৩,৭০৭.৬৫ প্রতি ট্রয় আউন্স ছুঁয়েছে।


বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত ফেড রেট কাটের পর সোনার দাম বাড়ার প্রবণতা থাকে। কিন্তু গত সপ্তাহে সেই দৃশ্য দেখা যায়নি। কারণ, ফেডের বৈঠকের পর মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তবে দামের নিচু স্তরে 'ভ্যালু পিকিং' দেখা যায়, যা স্বর্ণের দামে পুনরুদ্ধার ঘটায়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নিকট ভবিষ্যতে MCX–এ দাম ১০ গ্রামে ১,১২,০০০ ছুঁতে পারে এবং COMEX–এ তা ৩,৭৫০–এ পৌঁছাতে পারে।

আরও পড়ুন: জিবোর্ড হবে সকলের কাছে হাতিয়ার, কেন এমন জানাল গুগল


গত সপ্তাহে সোনার দাম নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। ১০ গ্রামে ১,০৬,৬৬৬ পৌঁছানোর পর সপ্তাহ শেষে ০.৫০% মুনাফায় টানা পঞ্চম সপ্তাহে দাম ঊর্ধ্বমুখী রইল। আন্তর্জাতিক বাজারেও ৩,৭০৭.৬৫ আউন্সে পৌঁছে নতুন রেকর্ড গড়েছে। সপ্তাহের প্রধান ঘটনা ছিল মার্কিন ফেডের বৈঠক। প্রত্যাশামতো ফেড সুদহার কমিয়েছে ২৫ bps, যা নয় মাস পর প্রথম কমানো। আরও দুই দফা রেট কাটের ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। কম সুদহার সাধারণত স্বর্ণের আকর্ষণ বাড়ায়, কারণ এটি 'নন-ইল্ডিং অ্যাসেট' হিসেবে ঝুঁকির সুরক্ষা দেয়। তবে ফেড সতর্ক সুরে জানায়, এই পদক্ষেপ মূলত 'ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা' হিসেবে নেওয়া হয়েছে, শ্রমবাজারের দুর্বলতার লক্ষণ বিবেচনায়।


 রেট কাটের সম্ভাবনা বাজারে আগেই ধরা হয়েছিল। ফলে দাম রেকর্ড স্পর্শ করার পর অনেক বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নেন, যা সাময়িক চাপ তৈরি করে। তবে ইতিহাস বলছে, সুদ কমার চক্রে, বিশেষত যখন মুদ্রাস্ফীতি বেশি থাকে, তখন সোনা সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়।


 ফেড ধীরগতির ইঙ্গিত দিয়েছে এবং ডেটা–নির্ভর সিদ্ধান্তের কথা বলেছে। এতে করে মার্কিন ডলার ও ট্রেজারি ইয়িল্ড বাড়ে, যা স্বর্ণের বিপরীত দিকে প্রভাব ফেলে। তবে দীর্ঘমেয়াদে ধীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ঝুঁকি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির ক্রয় প্রবণতা স্বর্ণকে সহায়তা করবে। অক্টোবর নীতিসভার জন্য বাজার ইতিমধ্যেই আরও এক দফা রেট কাটের সম্ভাবনা ধরেছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নিয়মিত স্বর্ণ কেনা ও ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে আশঙ্কাও দামের পক্ষে কাজ করছে।


উৎসবের সিজন ঘনিয়ে আসায় ভারতে চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। উৎসবের কেনাকাটার আগে সোনা কেনার প্রবণতা জোরদার হচ্ছে। সাম্প্রতিক রেট কাট হয়তো দামের সামান্য প্রভাব ফেলবে, তবে প্রকৃত ক্রেতাদের মনোভাব বদলাবে না। জুয়েলাররা শক্তিশালী বিক্রির প্রত্যাশা করছেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, স্বল্পমেয়াদে কিছুটা ওঠানামা থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকার সম্ভাবনা প্রবল। বিনিয়োগকারীদের জন্য কৌশল হল—দাম কমলে কিনুন, এবং বড় নীতিগত ইভেন্ট যেমন অক্টোবর জবস রিপোর্ট বা নভেম্বর ফেড মিটিং পর্যবেক্ষণ করুন। এতে সঠিক দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।