আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার স্টক মার্কেটে বিরাট পতন। দিনের শুরুতেই সেনসেক্স ৫৭৫ পয়েন্ট নিচের দিকে চলে যায়। অন্যদিকে নিফটি ফিফটি ৫০ পয়েন্ট পতন ঘটে। মিডক্যাপ ১০০ নিচের দিকে চলে গিয়ে হয় ০.৯০ শতাংশ। নিফটি স্মলক্যাপ ১০০ নিচের দিকে গিয়ে হয় ০.৭৩ শতাংশ।


১ আগস্ট থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘোষণা মতো নতুন ট্যারিফ চালু হয়ে যাবে। ইমপোর্টের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ট্যারিফ চালু হয়ে যাবে। এছাড়া অতিরিক্ত পেনাল্টির দিকটিও সামনের দিকে উঠে এসেছে। ভারত যেভাবে রাশিয়ার সঙ্গে তেল এবং প্রতিরক্ষা খাতে চুক্তি করেছেন তার সরাসরি প্রভাব এই ট্যারিফের দিকে চলে এসেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এটা ভারতীয়দের পক্ষে ভাল খবর নয়। ভারতের রপ্তানির ক্ষেত্রে এটি বিরাট প্রভাব ফেলবে। সেখানে যথেষ্ট সমস্যা তৈরি হবে। যদিও ভারত মার্কিন সম্পর্কের দিকটি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ট্রাম্পের এই ট্যারিফের জের সরাসরি ভারতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর বিরাট প্রভাব পড়েছে ভারতের স্টক মার্কেটেও।


বৃহস্পতিবার দিনের শুরু থেকেই শেয়ারের হাল বেহাল হতে শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ঝড়ের বেগে নিচের দিকে নামতে শুরু করে। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রি সবথেকে বেশি ক্ষতির সামনে পড়ে। তারা একধাক্কায় ১.৫৪ শতাংশ নিচের দিকে চলে যায়। এরপরই ছিল ভারতীয় এয়ারটেল। তাদের শেয়ার নিচের দিকে যায় ১.৫১ শতাংশ। ইনফোসিস এবং বাজাজ ফিনান্সের শেয়ার ১.০৫ শতাংশ নিচের দিকে যায়। টাটা কনসালটেন্সি হারিয়েছে ১.২১ শতাংশ।


এই হেভিওয়েট শেয়ারগুলি নিচের দিকে যাওয়ার ফলে বাকিদের ওপরেও তার প্রভাব পড়তে শুরু করে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে তেল এবং গ্যাসের প্রতিষ্ঠানে। নিফটি অয়েল অ্যান্ড গ্যাস নিচের দিকে যায় ১.৫৮ শতাংশ। অন্যদিকে নিফটি অটো গ্যাস হারিয়েছে ১.২৫ শতাংশ। নিফটি কনজিউমার হারিয়েছে ১.০৫ শতাংশ।


নিফটি আইটি হারিয়েছে ০.৭৮ শতাংশ। পিএসইউ ব্যাঙ্ক হারিয়েছে ০.৮৯ শতাংশ। নিফটি রিয়েলিটি হারিয়েচে ০.৮৫ শতাংশ। নিফটি ফার্মা হারিয়েছে ০.৭২ শতাংশ। নিফটি মেটাল হারিয়েছে ০.৭২ শতাংশ। নিফটি হেলথকেয়ার হারিয়েছে ০.৬১ শতাংশ। নিফটি প্রাইভেট ব্যাঙ্ক হারিয়েছে ০.৫৭ শতাংশ। নিফটি ফিনান্সিয়াল সার্ভিস হারিয়েছে ০.৪৪ শতাংশ। নিফটি ফার্মা এবং নিফটি এফএমসিজিও হালও প্রায় সমান।


ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক বোঝাপড়ার দরজা খোলা রাখছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে অনির্দিষ্ট একটি ‘জরিমানা’ (পেনাল্টি)-র কথাও জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, তাঁরা ভারতের সঙ্গে দর কষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন:  দেশের প্রথম সারির এই ব্যাঙ্কগুলিতে ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হারে বড় বদল, সুবিধা পাবেন সিনিয়র সিটিজেনরা


বুধবার ভারতের উপর শুল্ক ঘোষণার পরে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ট্রাম্প। সেখানে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি শুল্ক নিয়ে এখনও ভারতের সঙ্গে দর কষাকষির পথ খোলা রাখছেন কি না। জবাবে ট্রাম্প আবার দাবি করেন, বিশ্বে সবচেয়ে চড়া হারে শুল্ক নেওয়া দেশগুলির মধ্যে একটি ভারত। কানাডাও অনেক চড়া হারে শুল্ক নেয়। তিনি বলেন, “আমরা এখন ভারতের সঙ্গে দর কষাকষি চালাচ্ছি।” তবে ওই দর কষাকষির বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেননি তিনি।


বস্তুত, বুধবারই হোয়াইট হাউসের পরামর্শদাতা কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় ‘বিরক্ত’ ট্রাম্প। যদিও এর আগে বেশ কয়েক বার ট্রাম্প নিজেই দাবি করেছেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক বোঝাপড়া অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই সমঝোতা হয়ে যেতে পারে, এমন আভাসও দিয়েছিলেন তিনি। তবে আলোচনা ঠিক কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা নিয়ে তখনও বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাননি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।