আজকাল ওয়েবডেস্ক: আপনি যদি অন্য শহরে যাচ্ছেন এবং আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্টের শাখা সেই শহরেই স্থানান্তর করতে চান তাহলে আর কাঠখড় পোহাতে হবে না। এখন দেশের অনেক ব্যাঙ্ক যেমন- কোটাক মাহিন্দ্রা , এইচডিএফসি, আইসিআইসিআই এবং স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) অনলাইনে শাখা পরিবর্তনের সুবিধা দিচ্ছে। তবে, এটি করার সময় আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে।

অনলাইনে শাখা স্থানান্তর করা যেতে পারে?
হ্যাঁ, অনেক ব্যাঙ্ক অনলাইন শাখা স্থানান্তরের অনুমতি দেয়। এর জন্য, আপনাকে শাখায় গিয়ে অনলাইন ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। তবে, শাখা পরিবর্তন করার পরে, আইএফএসসি কোডও পরিবর্তন হবে। এমন পরিস্থিতিতে, অনলাইন ব্যাঙ্কিং, অটো ডেবিট এবং এসআইপি-র মতো পরিষেবাগুলিতেও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে হবে।

কী ধরণের অ্যাকাউন্ট স্থানান্তর করা যাবে না?
অ্যাকাউন্টের কেওয়াইসি, সম্পূর্ণ না হলে শাখা স্থানান্তর করা হবে না। এছাড়াও, ফ্রিজ করা বা নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট, অর্থাৎ যে অ্যাকাউন্টগুলিতে ২ বছর ধরে কোনও লেনদেন করা হয়নি, সেগুলি স্থানান্তর করা যাবে না।

অটো-পেমেন্ট এবং এসআইপি আপডেট করুন:
যদি আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্টে কোনও অটো ডেবিট, ইএমআই বা এসআইপি লিঙ্ক থাকে, তাহলে শাখা পরিবর্তনের সময় আইএফএসসি কোডও পরিবর্তিত হয়। সেই কারণেই সমস্ত পরিষেবা আপডেট করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কোনও অর্থপ্রদান বন্ধ না হয়।

কোন গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলির প্রয়োজনীয়?
শাখা স্থানান্তরের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথির প্রয়োজন হবে। এর জন্য, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ঠিকানার প্রমাণ, অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য (পাসবুক বা স্টেটমেন্ট), চেকবুক (যদি থাকে) ইত্যাদি।

লকার সুবিধা কি প্রভাবিত হবে?
আপনি যদি বিদ্যমান শাখায় লকার সুবিধা নিয়ে থাকেন, তাহলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন শাখায় স্থানান্তরিত হবে না। তবে, অনেক সময় পুরানো লকার বন্ধ করে নতুন শাখায় নতুন লকার নিতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে, প্রথমেই জেনে নেওয়া উচিত যে নতুন শাখায় লকার সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে কিনা।

আরও পড়ুন- পাঁচ বছরে লাভ ৩৫ লক্ষ টাকা! জানুন পোস্ট অফিসের বিশেষ স্কিম সম্পর্কে

ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা জমানোকে অনেকেই নিরাপদ বলে মনে করেন। কিন্তু আর্থিক বিশ্লেষকদের দাবি, এটা কতকটা রোদে বরফ রাখার মতো! সেভিংস অ্যাকাউন্টে থাকা টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়া তো দূরে থাক, উল্টে তা কমে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। এই ‘আর্থিক ক্ষয়’ থেকে বাঁচতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে লগ্নির পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

বিশ্লেষকদের দাবি, সেভিংস অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থের মূল্য মূলত দু’টি কারণে হ্রাস পায়। প্রথমত, এর সুদের হার অত্যন্ত কম। দ্বিতীয়ত, ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির জেরে সেখানে জমানো টাকার মূল্য দিন দিন কমতে থাকে। 

একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বুঝে নেওয়া যেতে পারে। যদি কোনও ব্যক্তি এসবিআই সেভিংস ব্যাঙ্কে এক লক্ষ টাকা রাখেন, তা হলে বছরের শেষে সুদবাবদ পাবেন মাত্র ২,৫০০ টাকা। অর্থাৎ মাসে মাত্র ২০৮ টাকা আয় করবেন তিনি। ফলে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা তাঁর পক্ষে বেশ কঠিন। এর জেরে সংসার খরচ বাড়লে ধীর গতিতে আর্থিক ক্ষয়ের মুখে পড়বে তাঁর জমানো অর্থ।