আজকাল ওয়েবডেস্ক: চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে এক মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মুর্শিদাবাদের ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। অভিযোগ ওই মহিলার মৃত্যুর পর হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালান মৃতের পরিবারের লোকজন। হেনস্থার চেষ্টা করা হয় স্বাস্থ্য কর্মীদের। এরপর হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তারক্ষীরা মৃতের পরিবারের লোকজনকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে 'ভাঙচুরের' ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে মৃতার স্বামীকে আটক করেছে ডোমকল থানার পুলিশ। 

 

হাসপাতাল সূত্রে জানার গেছে- প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে তিনদিন আগে মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর থানার বাবলাবোনা গ্রামের বাসিন্দা সাবানা বিবি (১৯) ডোমকল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মঙ্গলবার ভোরে ওই মহিলা হাসপাতালে তাঁর সন্তানের জন্ম দেন। সাবানার পরিবারের বক্তব্য, সন্তানের জন্ম হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অভিযোগ সেই সময় বারবার হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স এবং ডাক্তারদেরকে তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা জানানো হলেও কোনও ডাক্তার ওই মহিলাকে চিকিৎসার জন্য আসেননি। এর ফলে একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় সাবানার। 

 

সাবানার মৃত্যুর পর হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁর পরিবারের লোকজন। মৃতের স্বামী শরিফুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের কিছু আসবাবপত্র 'ভাঙচুর' করেন বলে অভিযোগ। শরিফুল ইসলাম বলেন, 'ভোর চারটে নাগাদ আমার স্ত্রী হাসপাতালে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সন্তানের জন্ম দেয়। কিন্তু এরপর থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বারবার কর্তব্যরত নার্সদেরকে আমি ডাক্তারকে ডাকার জন্য বললেও কোনও ডাক্তার আমার স্ত্রীকে দেখার জন্য আসেননি। বিনা চিকিৎসাতে হাসপাতালের শয্যাতে পড়ে থেকে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়।' 

 

তিনি অভিযোগ করেন, 'আমার স্ত্রীর মৃত্যুর পর ডাক্তারের কর্তব্যের গাফিলতির প্রতিবাদ জানালে আমাকে হাসপাতালে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীরা ব্যাপক মারধর করেন এবং জামাকাপড় ছিড়ে দেন।' যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কাউকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। 

 

হাসপাতালে 'ভাঙচুর' এবং কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে নিগ্রহের চেষ্টার ঘটনার খবর পেয়ে ডোমকল থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী হাসপাতালে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ডোমকল থানার এক আধিকারিক জানান -ইতিমধ্যে শরিফুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। 

 

মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাজীব সান্যাল বলেন, 'মৃতের পরিবার উত্তেজিত হয়ে কয়েকটি চেয়ার টেবিল উল্টে দিয়েছিল তবে কোনও স্বাস্থ্য কর্মী আক্রান্ত হননি। ওই মহিলার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে চিকিৎসকরা তাঁকে দেখেছিলেন। কীভাবে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে তার তদন্ত হবে। মৃতের পরিবারের লোকেদের 'হেনস্থার' ঘটনারও তদন্ত হবে।'