মনিরুল হক, কোচবিহার: ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের দিনহাটা। মঙ্গলবার গভীর রাতে দিনহাটা–বলরামপুর রোড সংলগ্ন কোয়ালিদহ এলাকায় নিজের বাড়ির সামনে গুলিবিদ্ধ হলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা দিনহাটা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মিঠুন রাজভর (৪০)। গুলিটি তাঁর বাঁ দিকের গালে লাগে। ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্কের পাশাপাশি রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে তিনি কোচবিহার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে ন'টা নাগাদ নিজের বাড়ির সামনে হাঁটাহাঁটি করছিলেন মিঠুন রাজভর। সেই সময় বাইকে চেপে দুই দুষ্কৃতী সেখানে আসে। আচমকাই খুব কাছ থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলির শব্দে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। 

চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে কোচবিহার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। 

মিঠুন রাজভর দিনহাটা এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের পরিচিত ও প্রভাবশালী নেতা। তিনি ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দিনহাটা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনৈতিক মহলে তিনি সক্রিয় ও প্রভাবশালী ভূমিকার জন্য পরিচিত ছিলেন।

পরিবারের দাবি, সম্প্রতি তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং নিয়মিত চিকিৎসাও চলছিল। অতীতেও একবার তাঁর ওপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছিল। মাঝখানে কিছুদিন রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও বর্তমানে তিনি আবার সক্রিয়ভাবে তৃণমূলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। 

এই হামলার নেপথ্যে কী কারণ, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। রাজনৈতিক শত্রুতা না কি ব্যক্তিগত আক্রোশ-তা এখনও স্পষ্ট নয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মিঠুন রাজভর এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

এই বিষয়ে দিনহাটার এসডিপিও ধীমান মিত্র জানান, আহত অবস্থায় একজন ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে-এই তথ্য পুলিশ পেয়েছে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন এসডিপিও।

ওই গুলি কাণ্ডের ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক শত্রুতা, ব্যক্তিগত আক্রোশ নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।